সংবাদদাতা:
মায়ানমার কর্তৃক বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত ও বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা নিজ মাতৃভাষা চর্চা করছে। রোহিঙ্গা ভাষায় পাঠদান ও নিজস্ব সংস্কৃতিতে শিশুদের শিক্ষিত করতে সচেষ্ট রয়েছে আশ্রিত রোহিঙ্গারা। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে এমনটিই দেখা গেছে।
প্রায় দেড় বছর আগে মায়ানমারের রাখাইন ষ্ট্রীটে সেনা অভিযান শুরু হলে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন লাখ লাখ রোহিঙ্গা জনগন। এসময় তাদের সাথে নারী-শিশুরাও আসেন। সীমান্ত উপজেলা উখিয়া-টেকনাফের পাহাড়ী এলাকায় আশ্রয় নেয়া এসব রোহিঙ্গাদের নিজ উদ্যোগে ক্যাম্পের অভ্যন্তরে গড়ে উঠেছে শত শত মক্তব-মাদ্রাসা। এসব মক্তবে রোহিঙ্গা মৌলভীরা নিজস্ব ভাষায় পাঠদান করছেন বলে জানা গেছে।
বালুখালী-১ এর ১০ নং ক্যাম্পে মাহাদু আবু বকর নামক রোহিঙ্গা মাদ্রাসার শিক্ষক মৌঃ রহমতুল্লাহ, রোহিঙ্গা ভাষার জনপ্রিয় ভার্সন “হানিফ স্ক্রীপ্ট” অনুসারে শিশুদের পাঠদান করা হচ্ছে। রোহিঙ্গারা ভিন্ন ভাষার ভিন্ন জাতি, তাই রোহিঙ্গা ভাষা এবং আরবী অক্ষরে হস্তলিখিত ও মুদ্রিত বিভিন্ন বিষয়ের এসব বই-পুস্তক মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসার সময় সাথে এনেছেন তারা।
অপর রোহিঙ্গা মৌলানা আজিজুর রহমান জানান, প্রায় ১৩ শ বছর আগে আবিস্কৃত এক শিলালিপি থেকে জনৈক মৌলভী হানিফ রোহিঙ্গা ভাষা প্রচলন করেন৷ তখন থেকেই এ ভাষা চর্চা করে আসছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। ইসলামের প্রাথমিক যুগে সুদুর সৌদী আরব থেকে ইসলাম প্রচার করতে আসা সাহাবীদের দ্বারা প্রচলিত আরবী ভাষা থেকেই রোহিঙ্গা ভাষার উদ্ভব হয়েছে বলে ধারনা করা হয়।
নিজ মাতৃভূমিতে ফিরে যেতে আশাবাদী রোহিঙ্গা ফারুক বলেন, তাদের শিশুরা বাংলা ভাষা শিখুক, তা তারা চায়না। বরং নিজস্ব রোহিঙ্গা ভাষা ও সংস্কৃতিকে লালন করে একদিন নিজ মাতৃভূমি মায়নমারেই ফিরে যেতে চান তারা। তাই রোহিঙ্গাদের নিজস্ব ভাষায় মক্তবগুলোতে পাঠদান করা হচ্ছে বলে জানান শিক্ষকরা।