সিবিএন ডেস্ক

তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠেয় ১২৭ উপজেলার মধ্যে কক্সবাজার সদর উপজেলাসহ সাতটি সদর উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সে অনুযায়ী, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিও প্রণয়ন করা হচ্ছে।
আগামী ২৪ মার্চ তৃতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ করা হবে। ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সোমবার জানিয়েছিলেন, তৃতীয় ধাপ থেকে সদর উপজেলাগুলোয় ইভিএমে ভোটগ্রহণ করার চেষ্টা করবো।
নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট শাখায় মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি)খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তৃতীয় ধাপে ১৩টি সদর উপজেলা থাকলেও ইভিএমে সাতটি উপজেলার ভোটগ্রহণ করার প্রক্রিয়া হাতে নেওয়া হয়েছে। উপজেলাগুলো হলো- রংপুর, গোপালগঞ্জ, চাঁদপুর, কক্সবাজার, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী ও মানিকগঞ্জ সদর।
নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের সহকারী পরিচালক মো. রশিদ মিয়া ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জ্যেষ্ঠ জেলা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছেন।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে- ‘আগামী ২৪ মার্চ অনুষ্ঠেয় তৃতীয় পর্যায়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১৩টি সদর উপজেলার মধ্যে সাতটিতে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে। এ লক্ষ্যে দক্ষ জনবল তৈরির উদ্দেশে উল্লিখিত সাতটি সদর উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়/ মাধ্যমিক বিদ্যালয়/ জলেজের তথ্য প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন শিক্ষকদের দুই দিনব্যাপী হাতেকলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।’
‘প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পরবর্তীতে পাঁচ দিনব্যাপী ডেমোনেস্ট্রেশনসহ ভোটগ্রহণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবেন। এ অবস্থায় উপজেলা নিরবাচনের জন্য সম্ভাব্য কেন্দ্র ভিত্তিক তথ্য-প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন তিনজন করে শিক্ষকের নামের তালিকা প্রয়োজন।’
তাই ওই সাত সদর উপজেলার শিক্ষকদের নামের তালিকা আগামী ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পাঠানোর জন্য সংশ্লিষ্ট জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা বা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে ইসি।
নির্বাচন কমিশন বর্তমানে উন্নতমানের ইভিএম দিয়ে ভোটগ্রহণ করছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ছয়টি আসনের পুরোটাই এসব ইভিএমে ভোটগ্রহণ করেছে। যদিও ফলাফল যত দ্রুততার সঙ্গে প্রকাশ করার কথা জানিয়েছিল, তত দ্রুত প্রকাশ করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। তবে মেশিনগুলোতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হয়েই ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করা গেছে।
দেশে প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোটগ্রহণের প্রথা চালু করে এটিএম শামসুল হুদার কমিশন ২০১০ সালে। সেই ভোটযন্ত্র তৈরি করে দিয়েছিল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়। গড়ে ২০ হাজার টাকার সেই ইভিএম ২০১৩ সালে রাজশাহীর সিটি নির্বাচনে একটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের সময় বিকল হয়ে যায়। সেটা আর ঠিক করা সম্ভব না হলে পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশন আবার ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণ করে। সেই থেকে ওই ইভিএম আর ব্যবহার করা হয়নি।
কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের বিগত কমিশন সেই মেশিন নষ্ট করে নতুন করে উন্নতমানের মেশিন তৈরির উদ্যোগ নেয়। বর্তমান নূরুল হুদা কমিশন প্রতি মেশিন দুই লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়ে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির কাছ থেকে তৈরি করে নিচ্ছে।
এই উন্নতমানের ইভিএম দিয়ে রংপুর, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, বরিশাল সিটি নির্বাচনে বেশ সাড়া পায় নির্বাচন কমিশন। তারপরই সংসদ নির্বাচনেও সেটি ব্যবহার করে।