শাহেদ মিজান, সিবিএন:

মহেশখালীর মাতারবাড়ি-ধলঘাটায় প্রথম কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ১২’শ এবং মাতারবাড়িতে দ্বিতীয় কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ১৪ একর জমি ইতিমধ্যেই অধিগ্রহণ করে হুকুম দখলে নিয়ে সরকার। অন্যদিকে পাঁচ হাজার একরের বৃহৎ কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য কালারমারছড়া ও হোয়ানকের পশি^মে লবণ ও চিংড়ি চাষের পাঁচ হাজার একর জমি বর্তমানে অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সাত ধারা দিয়ে জমি টাকা ছাড়া হচ্ছে। তার পাশপাশি কালারমারছড়া ও হোয়ানকের পূর্বে অবস্থিত পাহাড়ি জমিগুলোও অধিগ্রহণ করে হুমুক দখলে নেয়া হচ্ছে। তবে খাস খতিয়ানভুক্ত হওয়ায় পাহাড়ি জমিতে কোনো ধরণের ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে না জমির মালিকেরা।

এই পরিস্থিতিতে অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মহেশখালীর সব মানুষ। জমির ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত, অবকাঠামোর অপ্রতুল ক্ষতিপূরণ এবং পুনর্বাসন সুবিধা না পেয়ে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন এসব মানুষ। এসব সমস্যা সমাধানে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আটটি দাবি রেখেছেন। এই দাবিগুলো বাস্তবায়নের জন্য তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুতি জানাচ্ছেন। নিচে দাবিগুলো তুলে ধরা হলো-

১. প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমির ন্যায্য মূল্য একর প্রতি কমপক্ষে তিন কোটি টাকা ধার্য্য করতে হবে।
২. অধিগ্রহণকৃত জমির বৈধ কাগজপত্র (ফাইল) জমাদানের সর্বোচ্চ ০১(এক) মাসের মধ্যে জমির মালিককে সম্পূর্ণ টাকার চেক হস্তান্তর করতে হবে। অবশ্যই প্রকল্পের দালিলিক কাজ শুরু করার আগেই জমির মালিককে যথাযথ ন্যায্য মূল্য বুঝিয়ে দিতে হবে।
৩. ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ভোগান্তি কমাতে প্রকল্প এলাকায় ওয়ান-স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ প্রদানসহ যাবতীয় কার্যাদি সম্পন্ন করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় সংশোধনীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করার জন্য বিভিন্ন বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিশনের মাধ্যমে প্রকল্পের সার্বিক তত্বাবধান, প্রয়োজনীয় সংশোধন, পরিমার্জন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
৪. ইতোপূর্বে অধিগহণকৃত জমির দূর্নীতির সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। ভবিষ্যতে দুর্নীতি ও দালালদের দৌরাত্ম্য শতভাগ বন্ধ/প্রতিরোধে অবশ্যই দৃশ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৫. প্রকল্পে কর্মসংস্থান নিশ্চিতকল্পে স্থানীয় জনগণকে শতভাগ অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং সেই লক্ষ্যে যথাযথ ও প্রয়োজনীয় কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে তাদেরকে যোগ্য করে তুলতে হবে। প্রকল্পে স্থানীয় মানুষ ও শিক্ষিত যুবকদের যোগ্যতার ভিত্তিতে ৭০% চাকুরীর কোটা সংরক্ষণ করতে হবে।
৬. বসতবাড়ি ও দোকানপাট উচ্ছেদ করে নতুন করে আর কোন জমি অধিগ্রহণ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাবে না। আমরা উন্নয়ন চাই, তবে গৃহহীন হতে চাই না ।
৭.আমাদের মাটিতে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ও গ্যাস অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আগে আমাদের মহেশখালীতে দ্রুত সময়ের মধ্যে নিরবিচ্ছিন্নভাবে সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
৮. প্রকল্পের কাজ শুরুর আগেই স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি নিরসন, ঝুঁকি মোকাবেলা ও পরিবেশ বিপর্যয় রোধে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে।