অনলাইন ডেস্ক : আসন্ন  নির্বাচনে নৌকার মাঝি যোগ্য চেয়ারম্যান প্রার্থী কে হতে পারেন এ নিয়ে বেশ সরগরম মহেশখালী উপজেলা।  এখনো পর্যন্ত উপজেলা এবং জেলা আওয়ামীলীগ থেকে প্রার্থীর কোন চুড়ান্ত তালিকায় কেন্দ্রে প্রেরণ করেননি। কারণ প্রথম ধাক্কায় তিন থেকে চার জনের নাম চুড়ান্ত তালিকায় আসলেও সম্প্রতি জননেত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ নির্দেশ আসায় সেই চুড়ান্ত তালিকা এখন থমকে দাঁড়িয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়- বিভিন্ন দূর্নীতি মামলায় যারা আসামী হয়েছে তাদেরকে নমিনেশন দেবেন না।যাদের নাম ইয়াবা পাচারের তালিকায় আছে তাদের নমিনেশন দেবেন না। ১২ বছর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা যাদের নেই তাদের নমিনেশন দেবেন না। যাদের বয়স ৬০ বছরের উপরে চলছে তাদেরকেও নমিনেশন দেবেন কি না প্রশ্ন উঠছে!
সম্প্রতি সংসদ নির্বাচনে যারা একদিনের জন্যেও ভোট প্রার্থনা, প্রচার প্রচারনায়, মিটিং মিছিলে অংশ গ্রহণ করেন নি তাদেরকেও নমিনেশন দেবেন কি না প্রশ্ন উঠেছে!
এদিকে মাঠে- ময়দানে, এলাকাবাসীর জনমত এবং নেতাদের পছন্দের তালিকায় প্রার্থী হচ্ছেন-
বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মো: হোসাইন ইব্রাহীম, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শরীফ বাদশা, ধলঘাটা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান কামরুল হাসান, যুবলীগ নেতা মোস্তাফা কামাল, মহেশখালী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সাজেদুল করিম এবং মাতারবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ছমি উদ্দীন।

কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নির্দেশ যদি বাস্তবায়িত হয় তাহলে বিপাকে পড়তে পারেন বেশ কয়েকজন হ্যাভিওয়েট প্রার্থীরা। যেমন-
মোহাম্মাদ হোসাইন ইব্রাহীম তিনি চেয়ারম্যান হওয়ার পরেই ঘোষনা করিছিলেন তিনি পরবর্তীতে আর নির্বাচন করবেন না এবং সে কারণেই তিনি গত পাঁচ বছরে জনগণের কাছ থেকে মুখ গুটিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু যে কোন কারণেই তিনি প্রার্থী হলেও বিপদে পড়তে পারেন দুই কারণেঃ
তিনি ৬০ বছর অতিক্রম করেছেন এবং তিনি গত পাঁচ বছরে রাজনীতি থেকে সরে গিয়েছিলেন এবং সম্প্রতি সংসদ নির্বাচনে নিজেকে অসুস্থতার দাবী করে একদিনের জন্যেও নৌকার জন্য ভোট প্রার্থনাসহ কোন প্রচার প্রচারনায় এমনকি কোন জনসভায় উঠে দলকে সহযোগিতা করেননি বলে অভিযোগ আছে।

বিপাকে পড়তে পারেন আরেক জনপ্রিয় সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শরীফ বাদশা। কারণ কিছুদিন আগে পত্রিকায় এবং মিডিয়ায় ইয়াবা  তালিকায় তার নাম উঠে এসেছে। তবে তিনি এ বিষয়টিকে সম্পূণ অস্বীকার করে এটা তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ ও যড়যন্ত্র দাবী করেছেন। এদিকে জননেত্রী শেখ হাসিনা টেকনাফের এমপি বদিকে নমিনেশন না দিয়ে তার স্ত্রীকে দিয়েছিলেন শুধুমাত্র ইয়াবা পাচারের তালিকায় নাম ছিল বলে। সেই সূত্রে মো: শরীফ বাদশাও নৌকার মাঝি হতে ব্যর্থ হতে পারেন বলে অনেকের ধারণা ।

ছমি উদ্দিন, মাতারবাড়িবাসীর বক্তব্য অনুযায়ী তিনি নিজ এলাকায় দলগতভাবে বিতর্কিত অন্যদিকে সাধারণ জনগণের কাছেও তেমন গ্রহণযোগ্য নয়।
তার মধ্যে তিনি মেঘা প্রকল্প কয়লা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দূর্নীতির মামলায় জড়িয়ে জেল খেটে এসেছেন। সেই সুত্রে দল তার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। গত ইউপি নির্বাচনে অনেক রানিং চেয়ারম্যান নমিনেশন পায়নি শুধু মাত্র এই ২৩ কোটি টাকার দূর্নীতির কারণে।

মোস্তাফা আনোয়ার এবং সাজেদুল করিম সঠিক ভাবে রাজনীতির বয়স গুণতে গেলে ১২ বছরের অভিজ্ঞতার প্রশ্ন আসলে তারাও নৌকার মাঝি হতে পারবে কিনা সন্দেহ রয়েছে।

কিন্তু এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ধলঘাটার চেয়ারম্যান কামরুল হাসান। তিনি অবশ্য সবদিক দিয়ে যোগ্য হলেও নেতৃবৃন্দরা স্বল্প ভোটের ইউনিয়ন বলে তাকে পিছিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। তবে অতীতের রেকর্ড বলছে ধলঘাটা মাতারবাড়ির ৭০/৮০ ভাগ লোক তাকে ভোট দিয়ে প্রমাণ করেছিলেন এই তথ্য ভুল। অন্যদিকে তিনি মহেশখালীতে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসাবে বেশ সুনাম অর্জন করেছেন এবং কাজের দক্ষতার স্বরূপ শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান হিসাবে স্বর্ণপদকও অর্জন করেন। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, রাজনীতির হিসাব, ন্যায়, নিষ্ঠা,দক্ষতা সব মিলিয়ে যাকে নৌকা প্রতীক দিলে জয় সুনিশ্চিত করতে পারবেন তাকেই নমিনেশন দিবেন ।

জানা যায়- এও নির্দেশনা আছে যে, তৃনমূল থেকে দলীয়ভাবে এবং বিভিন্ন সংস্থার রিপোর্ট, সুনির্দিষ্ট তথ্য উপাথ্য যাচাই বাছাই করে তার পর কেন্দ্রের নমিনেশন বোর্ডে পাঠাতে বলেছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনার এমন সিদ্ধান্তকে প্রার্থীরা স্বাগত জানিয়েছেন।