বার্তা পরিবেশক:

স্বামী-স্ত্রীর কলহে স্ত্রীকে সহযোগিতা করার অভিযোগে ক্ষিপ্ত হয়ে ২০১৮ সালের অক্টোবরে টেকনাফে মিজান (১৪) ও হেলাল (১৮) নামে দুই কিশোর খালাতো ভাইকে হত্যা করা হয়েছিল। হত্যাকান্ডের পর দুই ঘাতককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছিল এলাকার লোকজন। দুই জনের মধ্যে একজন ইতিমধ্যে হাইকোর্ট থেকে জামিনে বের হয়ে গেছে। কিন্তু বাকী আসামীদের এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তবে ওই আসামীরা এলাকায় অবস্থান করছে। শুধু তাই নয়; মামলা তুলে নিতে বাদীকে প্রাণনাশ এবং মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে। মামলার বাদি নিহত মিজানের মা রশিদা খাতুন এই অভিযোগ করেছেন।

এদিকে আসামীদের হুমকি অন্য দিকে নিষ্পাপ দুই ছাত্রকে হত্যার শোকে কাতর হয়ে পড়েছে তাদের মা-বাবাসহ স্বজনেরা। তারা নিষ্পাট দুই কিশোরের হত্যা বিচার ও আসামীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে আসছেন। এই দাবিতে মিজানের প্রাইমারী শিক্ষার স্কুল কক্সবাজার ক্যাম্ব্রিয়ান স্কুলের শিক্ষার্থীরা একটি মাববন্ধন করেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টায় বিদ্যালয় বিদ্যালয় প্রাঙ্গনের এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কফিল উদ্দীনসহ শিক্ষকবৃন্দ, ছাত্রছাত্রীবৃন্দ, অভিভাবকবৃন্দসহ এলাকার অনেক লোকজন অংশ নেন।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৩১ অক্টোবর রাতে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং কচুবনিয়া এলাকার ওসমান গণির পুত্র মোঃ রফিক বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় তার চাচাতো ভাই টমটম চালক হেলালকে। এসময় তার সাথে যায় বেড়াতে আসা খালাতো ভাই মিজানও। এরপর সারারাত তারা নিখোঁজ ছিলো। পরদিন সমুদ্র সৈকতে তাদের রক্তাক্ত মৃতদেহ পাওয়া যায়। ঘাতক রফিক ও স্ত্রীর কলহ হলে স্ত্রীকে বাপের বাড়ি চলে যেতে টমটম ম্যানেজ করে দেয়ার অভিযোগে ক্ষিপ্ত হয়ে রফিক ও তার লোকজন মিলে কিশোর হেলাল ও মিজানকে হত্যা করে। এর মধ্যে মিজান চকরিয়া কৌরক বিদ্যাপীঠের ছাত্র ছিলো। ছুটিতে বেড়াতে খালার বাড়ি গিয়ে খুনের শিকার হয়েছিল সে।

নিহত দুই কিশোরের মামা শফিক জানান, হত্যার পর মুল ঘাতক রফিক ও তার সহযোগী আলী আহমদের পুত্র রুবেলকে এলাকার লোকজনের সহায়তায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। এরপর আর কোনো আসামী গ্রেফতার হয়নি। তারা বর্তমানে অনেকটা প্রকাশ্যে ঘুরছে। বেপরোয়া হয়ে এসব আসামীরা মামলার বাদি মিজানের মা রশিদ খাতুনকে হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। মিথ্যা মামলায় আসামী করারও হুমকি দিচ্ছে। এসব বিষয় জানিয়ে তাদের (আসামী) গ্রেফতার করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলা হলেও রহস্যজনক কারণে পলাতক একজন আসামীও গ্রেফতার হয়নি।

অন্যদিকে গ্রেফতার মুল ঘাতক রফিককে একদিনের রিমান্ডে নেয়া হলেও তার কাছ কোনো তথ্য বের করা যায়নি। গ্রেফতার অন্য ঘাতক রুবেল জেল থেকে বের হয়ে বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং বাদি ও স্বজনদের হুমকি দিচ্ছে। এই অবস্থায় নিহত দুই নিষ্পাপ কিশোরের মা-বাবাসহ অন্যান্য স্বজনেরা শোকে কাতর হয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন।

মুল ঘাতক মোঃ রফিককে পুনরায় রিমান্ড এবং পলাতক আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে তাদের বিচার দাবি করেন মামলা বাদি ও নিহত মিজানের মা রশিদা খাতুনসহ অন্যান্য স্বজনেরা।