চকরিয়া প্রতিনিধি:

আগামী ১৮ মার্চ অনুষ্টিতব্য উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চকরিয়া উপজেলা থেকে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থী চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ফজলুল করিম সাঈদীর সমর্থনে গতকাল রোববার সকালে হঠাৎ করে উপজেলাজুড়ে কলাগাছ রোপন শুরু হয়েছে। আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ জনগন এবং সমর্থকরা নিজেদের উদ্যোগে জনপ্রিয় নেতা সাঈদীর পক্ষে এলাকার প্রতিটি জনবহুল স্টেশনে কলাগাছ রোপন করেছে। গতকাল দুপুরে কলাগাছ রোপন করা হয়েছে চকরিয়া থানার সামনে।

একইভাবে কলাগাছ রোপন করা হয়েছে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বাণিজ্যিক জনপদ চকরিয়া শহরে। পাশাপাশি চকরিয়া পৌরসভার ১, ২, ৩, ৮ ও ৯নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন জনপদে রাস্তার পাশে, বাড়ির আঙ্গিনায়, দোকানের সামনে সারি সারি কলাগাছ রোপন করেছে। অপরদিকে কলাগাছ রোপন করা হয়েছে উপজেলার খুটাখালী, ডুলাহাজারা, মালুমঘাট, উত্তর হারবাং, উপকুলের বদরখালী, বিএমচর, কোনাখালী, ঢেমুশিয়া, পুর্ববড় ভেওলা, সাহারবিল ও চিরিঙ্গা ইউনিয়নের অলিগলিতে।

অনুষ্ঠিয় নির্বাচনকে সামনে রেখে মাসজুড়ে চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার প্রত্যন্ত জনপদে চষে বেড়িয়েছেন এক ডজন সিনিয়র আওয়ামীলীগ নেতা। নির্বাচনে সকলেই আওয়ামীলীগের দলীয় টিকেট পেতে মরিয়া ছিলেন।

তবে চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভায় তৃনমুলের নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে চকরিয়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে চকরিয়া থেকে কেন্দ্রে নাম পাঠানো হয় তিনজন প্রার্থীর নাম। তাঁরা হলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী, পৌরসভা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও কক্সবাজার জেলা পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম লিটু, চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি ক্রীড়া সংগঠক আলহাজ ফজলুল করিম সাঈদী।

এছাড়াও নৌকা প্রতীক পেতে কেন্দ্রে যোগাযোগসহ নানাভাবে লবিং করছেন চকরিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি রেজাউল করিম, কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য সাবেক ছাত্রনেতা আমিনুর রশিদ দুলাল, আওয়ামীলীগ নেতা নুরে হাবিব তসলিম।

সর্বশেষ গতকাল রোববার কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের মনোনয়ন বোর্ড উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপের দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীর নাম ঘোষনা করেন। তাতে চকরিয়া উপজেলায় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াসউদ্দিন চৌধুরীকে।

নৌকার প্রার্থী হিসেবে আওয়ামীলীগ থেকে গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর নাম গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর তাকে প্রত্যাখান করে চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন বঞ্চিত অপর প্রার্থী চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ফজলুল করিম সাঈদীর সমর্থনে আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ জনগন এবং সমর্থকরা নিজেদের উদ্যোগে কলাগাছ রোপন করেছে।

আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের দাবি, আমরা চেয়েছিলাম কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ড জনপ্রিয়তা যাছাই করে কর্মীবান্ধব নেতা ফজলুল করিম সাঈদীকে দলের মনোনয়ন দেবেন। তাকে বাদ দেয়া হলেও আগের উপজেলা চেয়ারম্যান কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের যুগ্ম সম্পাদক রেজাউল করিম অথবা অপর জনপ্রিয় নেতা চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামীলীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটুকে মুল্যায়ন করবেন।

নেতাকর্মীদের অভিযোগ, আওয়ামীলীগের মনোনয়ন বোর্ড অদৃশ্য কারণে এখানে তৃনমুলে অধিক জনপ্রিয় ও কর্মীবান্ধব নেতাদেরকে মুল্যায়ন করেনি। পক্ষান্তরে দলের ভাবমুর্তি জনগনের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে, আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা বারবার বিভাজনের কবলে পড়েছে, নিজের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল, সেই ধরণের নেতার পক্ষে আমরা নেই। তাই বিকল্প হিসেবে জনগনের কাছে অধিক জনপ্রিয় ও দলের মধ্যে পরীক্ষিত কর্মীবান্ধব নেতা ফজলুল করিম সাঈদীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছি।

এরই আলোকে জনপ্রিয় ও কর্মীবান্ধব নেতা ফজলুল করিম সাঈদীর পক্ষে কাজ করার ঘোষনা দিয়ে গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে চকরিয়া পৌরশহরের অভিজাত রেস্তোরা রেডসিলিতে তাৎক্ষনিক মতবিনিময় সভা করেছে আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সভায় বক্তব্য রাখেন চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক উদ্দিন চৌধুরী, চকরিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম শহীদ, সাধারণ সম্পাদক কাউছার উদ্দিন কছির, চকরিয়া পৌরসভা যুবলীগের সভাপতি হাসানগীর হোছাইন প্রমুখ। সভায় আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।