ঈদগাঁওতে ঈমাম বিতর্ক

প্রকাশ: ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০৭:৩৬ , আপডেট: ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০৮:০৪

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


কাফি আনোয়ার:
ঈদগাঁওবাজার কেন্দ্রিয় মসজিদের কার্যক্রমকে ঘিরে ফের শুরু হয়েছে বিতর্ক। এবার ঈমাম-খতীবের ভুমিকা ও মাইকে নামাজ পড়ানোকে কেন্দ্র করে চলছে রশি টানাটানি। এছাড়া মসজিদ কমিটি সংস্কার ও পুর্নগঠন কেন্দ্রিক বিতর্কও রয়েছে বেশ কিছুদিন যাবত। মসজিদ কেন্দ্রিক ওই আভ্যন্তরীন বিতর্ক এবার বিক্ষোভ, মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদান পর্যন্ত গড়িয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জেলার বৃহত্তম বাণিজ্যিক উপশহর ঈদগাঁওবাজারের সর্ববৃহৎ ও ঐতিহ্যবাহী ওই কেন্দ্রিয় জামে মসজিদের পরিচালনা কমিটির কার্যক্রম,একই ব্যক্তি একাধারে ৫ বার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়া, মসজিদের অভ্যন্তরে ঈমামের তাবিজ বিক্রি, ঝাঁড়-ফুঁক,পানিপড়া দেওয়া,বিনা টেন্ডারে উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা, বিশেষ ব্যক্তি বা মহলকে বিধিবহির্ভুতভাবে মসজিদ মার্কেটে দোকান বরাদ্ধ দেয়া,মাইকে নামাজ পড়ানো,অনিয়মিত মুসল্লীদের কমিটিতে স্থান দেয়া, খতীব-ঈমামের বিবদমান মতানৈক্য’সহ নানা অভিযোগে মুসল্লীদের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

গতকাল ( বুধবার ) ব্যবসায়ী আবদুল গফুরের নেতৃত্বে একদল মুসল্লী পেশ ঈমাম হাফেজ জহিরের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ এনে ঈদগাঁওবাজারের ডিসি রোড়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। তাদের দাবী বিগত ২৬ বছর ধরে হাফেজ জহির আন্তরিকতা ও সুনামের সহিত ইমামতি করে আসছে। কিছুদিন যাবৎ কমিটি ও হাফেজ জহিরের মধ্যে চলমান মতপার্থক্য মুসল্লীসমাজে বিভক্তি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

তারা হাফেজ জহিরকে সমর্থন জানিয়ে মসজিদ কমিটিকে হুশিয়ারী উচ্চারন করে বলেন, কমিটি ঈমামের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ এবং তাকে অপসারনের যে গভীর চক্রান্ত শুরু করেছে তা অবিলম্বে বন্ধ করা না হলে মুসল্লীদের বিক্ষোভ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে। একটি বিশ্বস্তসুত্র জানা গেছে ,বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারীরা বর্তমান ঈমাম হাফেজ জহিরের অনুসারী এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সুবিধাভোগী।

অপর একসুত্রে জানা গেছে , মসজিদের অভ্যন্তরে তাবিজ বিক্রি, ঝাড়-ফুঁক , পানি পড়া দেয়া কেন্দ্রিক বাণিজ্য বন্ধ হওয়ার আশংকায় হাফেজ জহিরের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে ওই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মসজিদ কমিটির এক সদস্য বলেন, ইতোপুর্বে হাফেজ জহিরকে ঈমাম পদ থেকে অপসারণ করার মত কোন ঘটনা ঘটেনি, বরং তাকে খতীব মর্যাদায় পদোন্নতি দেয়া হয়েছে ।

সাধারণ মুসল্লীদের ব্যানারে যারা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে তাদের দাবী অযৌক্তিক ও অপরিনামদর্শিতার বহি:র্প্রকাশ ।

ঈদগাঁওবাজার কেন্দ্রিয় জামে মসজিদ একটি বৃহৎ জামে মসজিদ, যেখানে প্রতি ওয়াক্ত নামাজে হাজারের অধিক মুসল্লী একসাথে জামাতে নামাজ আদায় করে । মাইকে নামাজ না পড়ানোর কারণে প্রতিনিয়ত মুসল্লীদের জামাতে নামাজ আদায় করা কঠিন হয়ে পড়ে। গত ২৬ বছর ধরে হাফেজ জহির সেকেলে ধারণাকে আকঁড়ে ধরে মাইকে উচ্চস্বরে নামাজ পড়াতে রাজী হয়নি। বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম , পবিত্র হেরাম শরীফ’সহ সারাবিশ্বে মাইকে উচ্চস্বরে নামাজ আদায় করা হলেও দীর্ঘদিন ঈদগাঁওবাজার কেন্দ্রিয় জামে মসজিদে মাইকে নামাজ পড়ানো হয়নি। যা দিনে দিনে মুসল্লীদের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নিয়মিত মুসল্লী বলেন, মসজিদের আভ্যনÍরীণ বিষয় নিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা একটি গর্হিত কাজ। এই অপকর্মের দায় হাফেজ জহির এড়াতে পারেন না । আরেক এক মুসল্লীর অভিযোগ , আজকের ঘটনার পর মুসল্লীদের মাঝে বিভক্তি দেখা দিয়েছে । এর নেপথ্যে যে বা যাহারা জড়িত তাদেরকে অবিলম্নে জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবী জানান তিনি।