মোঃ রাসেল ইসলাম,বেনাপোল (যশোর) : অভাবনীয় পুষ্টিগুণে ভরা একটি ফসলের নাম গম। ভাতের পাশাপাশি গমের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। চিকিৎসকরা বলেন, গম দিয়ে তৈরী হয় রুটি, বিস্কুট, কেক সহ নান রকম খাদ্য। এটি শরীরের জন্য খুব প্রয়োজনীয় একটি খাবার।

গম চাষ একটি লাভ জনক ফষল হলেও বর্তমান সময়ে এ চাষের প্রতি মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন চাষিরা। যে গম দেশের মাঠে প্রান্তরে ব্যাপক ভাবে চাষ হতো সেই গম চাষের প্রতি অনিহা দেখা দিয়েছে চাষিদের মাঝে। গম চাষে ব্যাপক বিস্তার লাভ করা উৎপাদনশীল ফষলটি আজ চাষের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এই গমই চাষের মধ্যে দেশে দানা ফষল হিসাবে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। আর আজ ক্রমেই এই গম চাষ ব্যাপক ভাবে হ্রাস পেয়েছে।

গত কয়েক বছর পিছনের দিকে লক্ষ করলে আমরা দেখতো পাই গম চাষের ব্লাষ্ট ভাইরাস কতটা ক্ষতি করেছে এই গম চাষে। চলতি বছরে যশোরের শার্শা উপজেলায় গমের আবাদ হচ্ছে মাত্র ৭ হেক্টর জমিতে। যা বিগত কয়েক বছর আগে এই উপজেলাতে গম চাষ হয়েছে ৫শ হেক্টরের উপরের। যা তারও আগে ১ হাজার হেক্টর ছাড়িয়ে ছিল। গম চাষের প্রতি চাষিদের চলতি গম আবাদে এক প্রকার নিরুৎসাহিত করছেন বলে জানান স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা যায়, যশোরের শার্শা উপজেলায় কৃষি পণ্য উৎপাদন হিসাবে এক সময় বিখ্যাত ছিলো। বছরের বিভিন্ন সময়ের নানা প্রতিকুলতার মধ্যেও সব সময় ব্যস্ত থাকতো কৃষি কাজে। এই উপজেলার চাষিদের চাষযোগ্য ফষলের অন্যতম একটি ফষল হিসাবে ছিল এই গমের আবাদ। কিন্তু হঠাৎ করেই গত কয়েক বছর ধরেই ব্যাপক ভাটা পড়ে গম চাষে। গমে ক্ষতিকর ব্লাষ্ট ভাইরাস লাগায় ব্যাপক ভাবে ক্ষতির সম্মুখিন হয়ে পড়ে এই উপজেলা সহ দেশের বিভিন্ন চাষযোগ্য অঞ্চল।

প্রথম অবস্থায় ক্ষতিটি পুশিয়ে নিয়ে পুনরাই পরের বছর আবারো গম চাষ করে একই ভাবে আর্থিক ও মানষিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েন কৃষককুল। গম চাষে মন্দা ভাবের কারনে এই চাষের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন গম চাষিরা। আর তারপর থেকে গম চাষ থেকে একে বারই বিরত থাকতে অনুরোধ করেন কৃষি বিভাগ। পরপর কয়েক বছর এ চাষের থেকে বিরত থাকার পর আবারো এই উপজেলায় গম চাষ শুরু হয়েছে।

যা হয়েছে তা ১শ শতাংশের মধ্যে ১০ শতাংশেরও কম। চলতি গম আবাদ মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং কোন রকম ব্লাষ্ট ভাইরাস না থাকায় গম আবাদ ভালো হয়েছে এবং চাষিরা লাভবান হবে বলে জানান কৃষি বিভাগ পাশাপাশি এখনো কোন রকম ঝুঁকি না নিয়ে এ বছরও গম চাষিদের নিরুতসাহিত করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

গম চাষিরা জানান, শত বাঁধা বিপত্তি ভয় ও নানাবিধ প্রতিকুলতাকে দুরে ঠেলে আমরা গম চাষ করেছি। কোন রকম দুর্যোগ না আসলে আশা করছি ভালো ফষল ঘরে তুলতে পারবো পাশাপাশি লাভের মুখ দেখবো।

শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ সৌতম কুমার শীল জানান, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৭ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে। বিগত বছরে গমে ব্লাষ্ট ভাইরাস লাগার কারনে কৃষকদের গম আবাদ থেকে নিরুতসাহিত করেছি এবং এখনও করছি যার কারনে চলতি ২০১৯ সালে গমের আবাদ পুরোপুরি ভাবে কমে গিয়ে মাত্র ৭ হেক্টর জমিতে কৃষক গমের আবাদ করছে।

ভাইরাস বর্তমানে এখনও লাগেনি যদি না দেখা দেয় তাহলে আবারো আগামী বছর থেকে আশা করছি কৃষকরা এ চাষের উপর মনোযোগী হবে। আমি এবং আমার কৃষি বিভাগ সর্বদায় গম চাষিদেরকে সঠিক পরিচর্যা পরামর্শ প্রদান ও সহযোগীতা করছি। আশা করি এবছর গমের আবাদ ভাল হবে।