রাইজিংবিডি ডট কম

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলোচনা করে রোহিঙ্গাদের সম্মতির ভিত্তিতেই তাদেরকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রাহমান।

মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের পয়ঃবর্জ্য শোধানাগার উদ্বোধনকালে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা এখন আন্তর্জাতিক। মিয়ানমার থেকে তাদের জোর করে বাস্তুচ্যুত করায় বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাই আবারও জোরপূর্বক নয়, রোহিঙ্গাদের সম্মতির ভিত্তিতেই আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে তাদেরকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আন্তর্জাতিক সংস্থা অক্সফ্যাম ও ইউএনএইচসিআররে যৌথ সহায়তায় কুতুপালং ক্যাম্প-০৪ এ বাংলাদেশে প্রথমবারের মত কেন্দ্রীয় পয়ঃবর্জ্য শোধানাগারটি স্থাপিত হয়েছে।

শোধনাগারটিতে দেড় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার পয়ঃবর্জ্য শোধন করা সম্ভব হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মূলত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিপুল পরিমান পয়ঃবর্জ্য যত্রতত্র না ফেলে একটি নির্দিষ্ট স্থানে বৈজ্ঞানিক উপায়ে পরিশোধনের জন্য এ প্ল্যান্টটি নির্মাণ করা হয়েছে। এ ধরণের প্ল্যান্ট জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নিরাপদ ও অগ্রগতি হিসেবে সহায়ক।

প্ল্যান্টটিতে সাফল্য আসলে পরবর্তীতে রোহিঙ্গাদের সব ক্যাম্পে পয়ঃবর্জ্য শোধনের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘ প্ল্যান্টটি নির্মাণে গাছ, বাঁশ ও অন্যান্য প্রাকৃতিক উপকরণ ব্যবহার হয়েছে। এটি নকশা প্রণয়নে বেছে নেওয়া হয়েছে খাড়া ও উঁচু পাহাড়। এতে প্ল্যান্টটির রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনায় জনবলের পাশাপাশি ব্যয়ও কম হবে।’

পয়ঃবর্জ্য শোধনাগারটির সাফল্যের ভিত্তিতে দেশের বড় বড় শহরে স্থাপনের জন্য এটি রোল মডেল হিসেবে কাজে আসবে বলে মন্তব্য ডা; এনামুরের।

অক্সফ্যামের ওয়াটার ও স্যানিটেশন প্রকৌশলী সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘পরিবেশবান্ধব এ প্ল্যান্টটি শরণার্থীদের স্বাস্থ্য রক্ষা করবে। প্রতিদিন গড়ে চল্লিশ কিউবিক মিটার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা রয়েছে এটির। কম বিনিয়োগের পাশাপাশি এটির পরিচালনা ব্যয়ও কম।’

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাসকারি বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা পয়ঃবর্জ্য শোধনের আওতায় আনতে অন্তত কমে আরো ৪ টি কেন্দ্রিয় শোধনাগার স্থাপন করা প্রয়োজন বলে সাংবাদিকদের জানান প্রকৌশলী সালাহ উদ্দিন।

কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব এস এম শাহ কামাল, শরণার্থী প্রত্যাবাসন ও ত্রাণ কমিশমার মো. আবুল কালাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. সরওয়ার কামাল, অক্সফ্যামের কান্ট্রি ডিরেক্টর দীপংকর দত্ত, ইউএনএইচসিআর এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি স্টিভ করলিস ও ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেটর গ্রুপ (আইএসসিজি) সহ প্রশাসনের ও বিভিন্ন সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।