সোয়েব সাঈদ, রামু:

রামুর অন্যতম নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রামু উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষের পাশে একটি পরিত্যক্ত কক্ষকে সম্প্রতি সংস্কার করে সেখানে বিভিন্ন উপকরণ রাখার উপযোগি করা হয়েছে। এখন সেখানে শোভা পাচ্ছে শিক্ষার্থীদের পোষাক, শিক্ষা উপকরণ সহ নানা প্রয়োজনীয় সামগ্রী। তবে এসব সামগ্রী বিক্রির জন্য নয়। দেয়া হয়েছে যাদের প্রয়োজন তারা যেন পছন্দমত বিনামূল্যে এখান থেকে নিতে পারে। আর যাদের এ ধরনের সামগ্রী অতিরিক্ত রয়েছে তারা এখানে তা রেখে যাচ্ছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এটির নাম দিয়েছে “মহানুভবতার স্টল”।

রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. লুৎফুর রহমান গত ২৪ জানুয়ারি ‘মরহুম আলহাজ্ব ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরী মহানুভবতার স্টল’ উদ্বোধন করেন। এসময় তিনি বলেন শিক্ষার্থীদের পরোপকার, অন্যের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়ার শিক্ষা দেবে এ স্টল। এ উদ্যোগকে বাঁচিয়ে রাখতে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

বিদ্যালয়ের উদ্যোমী শিক্ষক সুমথ বড়–য়া এ ব্যতিক্রমী কাজে উদ্যোক্তা বলে জানা গেছে। তাঁর তত্ত্বাবধানেই এ স্টল চালু করা হয়েছে। তবে এ ষ্টলে ব্যয় করা অর্থ এসেছে ছাত্রীদের পিঠা বিক্রির আয় থেকে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) এম জয়নাল আবেদিন জানান, কয়েকমাস পূর্বে রামু উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত উন্নয়ন মেলায় রামু উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা পিঠা উৎসব করেছিল। ওই উৎসবে পিঠা বিক্রির অর্থ দিয়ে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্টদূত ও সাংসদ মরহুম আলহাজ্ব ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরী মহানুভবতার স্টল চালু করা হয়েছে। এখানে ছাত্রীরা যা প্রয়োজন নিয়ে যাবে আর যা অপ্রয়োজনীয় তা রেখে যাবে। এ স্টল একদিকে যেমন শিক্ষার্থীদের মহানুভবতার শিক্ষা দেবে, তেমনি অপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর ব্যবহার হওয়ায় অনেকের অপচয় রোধ হবে।

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের দাতা সদস্য ইউনুচ রানা চৌধুরী বলেন, সম্প্রতি বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সকল ছাত্রীদের পরীক্ষার পর নিজেদের স্কুল ড্রেস এ মহানুভবতার স্টলে প্রদানের জন্য বলা হয়েছে। কেবল স্কুল ড্রেস নয়, নিজেদের অপ্রয়োজনীয় যে কোন সামগ্রী চাইলে এখানে দেয়া যাবে।

মরহুম আলহাজ্ব ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরী মহানুভবতার স্টল উদ্বোধনকালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) এম জয়নাল আবেদীন, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের দাতা সদস্য ইউনুচ রানা চৌধুরী, সাংবাদিক সোয়েব সাঈদ,

সিনিয়র শিক্ষক মোতাহেরা বেগম, শিপ্রা পাল, মং হ্লা প্রু পিন্টু, ইসমত আরা, আমান উল্লাহ আনছারী, মিনাক্ষী বড়–য়া, লাভলী বড়–য়া, মুজিবুর রহমান, আঙ্গুর বালা দাশ, বিজয় লক্ষী পারিয়াল, ছালামত উল্লাহ, সুমথ বড়–য়া, ইয়াছির আরাফাত, নিলুফা ইয়াছমিন, রনজিত কুমার দে, নাছিমা আকতার, অর্পিতা বড়–য়া, লুৎফুন্নেছা, শিপন বড়–য়া এবং বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।

সহকারি শিক্ষক সুমথ বড়–য়া জানিয়েছেন, বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এই মহতী কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এ উদ্যোগ সর্বত্র সাড়া জাগিয়েছে। দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের স্টল চালু করা হলে শিক্ষার্থীরা লাভবান হবে।