কায়সার হামিদ মানিক,উখিয়া :
উখিয়ার পার্শবর্তী নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তের শূণ্যরেখায় খালের উপর বিজিবিকে না জানিয়ে পাকা স্থাপনা নির্মাণের ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করেছে মিয়ানমার।
সোমবার বিকেলে মিয়ানমারের মংডুতে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষা বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) মধ্যে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠক থেকে ফিরে বিজিবির কক্সবাজার রিজিয়নের কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. আইনুল মোর্শেদ খান পাঠান এ কথা জানান।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘বৈঠকে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের কাছে নির্মাণাধীন স্থাপনার কিছু ছবি দেখিয়েছি। এ বিষয়ে কেন তথ্য জানানো হয়নি তা জানতে চেয়েছি। তবে এ জন্য মিয়ানমারের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করে জানানো হয়, এটি কোনো ব্রিজ নয়; মূলত সীমান্তে কাঁটা তারের বেড়া নির্মাণে খুঁটি স্থাপনে কাজ করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলে বিজিবিকে অবহিত করা হবে।
বিজিবির এ কর্মকর্তা বলেন, মিয়ানমারের মংডুতে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকে সীমান্তের নানা পরিস্থিতি নিয়ে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষা বাহিনীর মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। এবারের বৈঠকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় মাদকপাচাররোধ এবং সীমান্তে মিয়ানমারের স্থাপিত স্থলমাইন অপসারণ নিয়ে।
বৈঠকে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের প্রধান আশ্বাস দিয়েছেন, সীমান্ত দিয়ে ইয়াবাপাচার রোধে বিজিপি গুরুত্ব সহকারে কার্যকর উদ্যোগ নেবে এবং বিজিবির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে। এ ছাড়া বৈঠকে সীমান্তে মিয়ানমারের স্থাপিত স্থলমাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশি নাগরিকের জানমালের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য তুলে ধরা হলে তা অপসারণ নিয়েও যৌথভাবে টহল দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রিজিয়ন কমান্ডার বলেন, বিজিপির প্রতিনিধি দল প্রধান জানিয়েছেন- ইতিমধ্যে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষা বাহিনী বিজিপি ইয়াবাপাচার রোধে তৎপরতা শুরু করেছে। সম্প্রতি তিন/চার জন পাচারকারীকে ইয়াবাসহ আটক করেছে। এটি অব্যাহত থাকবে। ভবিষ্যতে বিজিবি ও বিজিপির মধ্যে যৌথভাবে টহলের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এতে ইয়াবাপাচার রোধ এবং স্থলমাইন অপসারণ ছাড়াও পতাকা বৈঠকে সীমান্তে মানবপাচার, চোরাচালান, অবৈধ অনুপ্রবেশ ও জঙ্গী-সন্ত্রাসীদের যাতায়ত বন্ধে নানা দিক নিয়েও আলোচনার কথা বলেন বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আইনুল মোর্শেদ খান পাঠান।
সকাল ৯টায় টেকনাফ স্থলবন্দরের ট্রানজিট ঘাট থেকে নাফ নদী হয়ে বাংলাদেশের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল মিয়ানমারে রওনা দেন। সেখানে পৌঁছার পর সকাল ১১টায় মংডুতে বিজিবি ও বিজিপির মধ্যে পতাকা বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে বিকেল সাড়ে ৫টায় প্রতিনিধি দল ফিরে আসে।
পতাকা বৈঠকে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. আইনুন মোর্শেদ খান পাঠানের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলে কক্সবাজার সেক্টরের কমান্ডার কর্ণেল এস এম বায়েজীদ খান ও বান্দরবান সেক্টর কমান্ডার জহিরুল হক খানসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যাটালিয়নের কমান্ডার ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছিলেন। বৈঠকে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মিন থিনের নেতৃত্বে ১৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করেন।