তাজুল ইসলাম পলাশ, চট্টগ্রাম:

জনবল সংকটে ধুকছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল। দীর্ঘদিন থেকে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু পদে লোকবল না থাকার কারনে ব্যহত হচ্ছে পূর্বাঞ্চলের পরিবহন সেক্টর। বাধাঁগ্রস্থ হচ্ছে স্বাভাবিকভাবে ট্রেন চলাচলে। এতে করে যেমন কমে যাচ্ছে রেলের আয় তেমনি সময় মতো ট্রেন না পৌঁছায় যাত্রীরাও পড়ছেন চরম দূভোর্গে। তাছাড়া সড়কপথের যাত্রীরা রেলের দিকে ঝুঁকে পড়ায় বেশিরভাগ ট্রেনের এখন ত্রাহি অবস্থা। অন্যদিকে কর্মীদের মধ্যে অনেকে অবসরোত্তর ছুটিতে যাওয়ায় ট্রেন পরিচালনায় এখন কঠিন সময় পার করছে রেলওয়ে।

জনবলের অভাবে ট্রেন পরিচালনায় নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে জানিয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান পরিবহন কর্মকর্তা রশিদা সুলতানা গণি বলেন, দীর্ঘদিন থেকে পূর্বাঞ্চলের অনেক পদ খালি রয়েছে। এতে করে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। প্রয়োজনের তুলনায় কর্মী অনেক কম জানিয়ে তিনি বলেন, এক লাইন থেকে আরেক লাইনে ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা করে দেওয়া রেলের পয়েন্টম্যানের কাজ। তারা ক্লিয়ারেন্স দিলেই চালক ট্রেন চালাতে পারে। আর যারা ট্রেন পরিচালনায় কাজ করেন তাদের বেশির ভাগ পদই খালি রয়েছে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে খালি রয়েছে স্টেশন মাস্টার (এসএম), সহকারী স্টেশন মাস্টার (এএসএম), পয়েন্টম্যান, গেটম্যান ও সান্টিংম্যানের মতো গুরুত্বপূর্ণ এসব পদ।

তথ্য মতে, যেখানে দ্বিতীয় শ্রেণী থেকে প্রথম শ্রেণী পর্যন্ত জনবল থাকার কথা ২ হাজার ৫৩৭ জন, সেখানে বর্তমানে কর্মরত আছেন ১ হাজার ৩১২ জন। যেখানে ২২৫ জনের পদ খালি আছে। অন্যদিকে প্রধান ট্রেন নিয়ন্ত্রক, সুপারিনটেনডেন্ট ও টিআই ১৭টি পদ খালি আছে। তাছাড়া এসএম, এএসএম’র পদে খালি রয়েছে ৫৫৬টি। স্টেশন মাস্টারে খালি আছে ২১৫টি। সহকারী স্টেশন মাস্টার (এএসএম) পদে খালি আছে ৯২টি। যেখানে থাকার কথা ২২০জন। পয়েন্টম্যান, গেটম্যান ও সান্টিংম্যানসহ ৯টি পদে খালি আছে ৬৬৪টি পদ। যেখানে থাকার কথা ১ হাজার ২২৫জন। এরমধ্যে পয়েন্টম্যান পদে ৭৫০ জনের বিপরীতে খালি আছে ২৯৩, গেটম্যান পদে ২৪২ জনের বিপরীতে খালি আছে ২১৫ ও সান্টিংম্যান পদে ১১৬ জনের বিপরীতে খালি আছে ৯৯টি পদ।

সূত্রটি আরো জানায়, কোনো বগি ত্রুটি থাকলে বগি সংযুক্ত করা এবং অন্য লাইনে সরিয়ে নিয়ে নতুন বগি সংযুক্ত করা গেটম্যানের কাজ। আর এসব গুরুত্বপূর্ণ পদে লোকবল না থাকায় ট্রেন পরিচালনায় ব্যহত হচ্ছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, রেলওয়ে একটি প্রকৌশল ও ব্যবহারিক প্রতিষ্ঠান হলেও মোট শূন্য পদের অধিকাংশ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদ হওয়ায় রেলের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো কর্মী সংকটে নাজুক অবস্থায় রয়েছে।