মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া:

পেকুয়া উপজেলা সরকারী হাসপাতালে গত ১৪ বছর ধরে এক্সরে মেশিন বাক্সবন্ধী অবস্থায় রয়েছে। ফলে পেকুয়া-কুতুবদিয়া উপকূলের রোগীরা এক্সরে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়াও এক্সরে মূল্যবান এক্সরে মেশিনটি বাক্সবন্দি অবস্থাায় পড়ে থাকার কারণে তা বর্তমানে অচল হয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, বিগত ২০০৪ সালে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ইউনিসেফ পেকুয়া সরকারী হাসপাতালে এক্সরে মেশিনটি অনুদান প্রদান করেছিল। বিগত ১৪ বছরে একবারও এ এক্সরে মেশিনটির সুবিধা নিতে পারেনি পেকুয়া-কুতুবদিয়ার রোগীরা।

পেকুয়া সরকারী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডাক্তার মুজিবুর রহমান জানান, একজন টেকনিশিয়ানের অভাবে ওই এক্সরে মেশিনটি চালু করা সম্ভব হয়নি। সরকারী হাসপাতালে এক্সরে মেশিন বাক্সবন্ধি থাকায় এখানকার দরিদ্র রোগীরা সেবা পাচ্ছেনা। রেডিওগ্রাফার না থাকায় ১৪ বছর ধরে এক্সরে যন্ত্রটিকে রোগীদের সেবায় ব্যবহার করা যায়নি। একজন রেডিওগ্রাফার পদায়নের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে বার বার পত্র পাঠানো হয়। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে এখনও পর্যন্ত কোন ধরনের আশার বাণী পাওয়া যায়নি।

হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এক্সরে যন্ত্রের কক্ষটি তালাবদ্ধ। রোগীদের কাউকে এক্সরে করাতে হলে ছুটতে হচ্ছে ২০ কিলোমিটার দূরের চকরিয়ায়। আশেপাশে মানসম্মত বেসরকারি কোনো রোগ নির্ণয়কেন্দ্র নেই।

পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের বাইন্যা ঘোনা গ্রামের বাসিন্দা মো: তারেক বলেন, উপজেলা হাসপাতালে এখন পর্যাপ্ত ভালো চিকৎসক পাচ্ছি আমরা। সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকলেও আগত রোগীদের এক্সরে প্রয়োজন হলে হাসপাতাল থেকে করানোর কোন সুযোগ নেই। যেতে হয় চকরিয়ায় বা বেসরকারী ক্লিনিকে। একজন টেকনিশিয়ানের অভাবে এমন দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে উপকূলীয় উপজেলার দরিদ্রসাধারণ মানুষকে।

পেকুয়া হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১৯৯৬ সালে ২০ শয্যার পেকুয়া উপজেলা হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ওই সময় হাসপাতালটি উন্নয়ন খাত থেকে পরিচালিত হতো। ২০০৫ সালে ৩১ শয্যায় রূপান্তরিত হাসপাতালটি ২০০৮ সালের এপ্রিলে সরকার রাজস্ব খাতে স্থানান্তরিত করে। আগের চেয়ে চিকিৎসার মান ভালো হলেও এক্সরে যন্ত্র চালু না থাকায় রোগীদের দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে।

টেকনিশিয়ান না থাকায় ব্যবহৃত না হওয়া যন্ত্রটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে হাসপাতালের টিএইচও ডা: মো: ছাবের বলেন, গত কয়েকটি মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। কার্যবিবরণীসহ আবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলেও এখনো সাড়া পাওয়া যায়নি।