সোয়েব সাঈদ:
রামুতে বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধিন জমি জবর-দখলের উদ্দেশ্যে বিপুল ফলজ গাছ কেটে দিয়েছে প্রভাবশালী জবর-দখলকারি চক্র।

রবিবার (৬ জানুয়ারি) সকালে রামুর উত্তর ফতেখাঁরকুল বণিক পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নির্বিচারে বিপুল গাছ কেটে ফেলার এ ঘটনায় জনমনে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

জমির মালিক মৃত পরীক্ষিত ধরের ছেলে অজয় ধর জানান, তাঁর বাড়ির পার্শ্ববর্তী স্বত্বঃদখলীয় সুপারী বাগান জোরপূর্বক দখলের জন্য একই এলাকার শশাংক বড়ুয়ার নেতৃত্বে একটি প্রভাবশালী চক্র তাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছিলো। রবিবার সকালে বাড়িতে তার ও অন্যান্য ভাইদের অনুপস্থিতির সুযোগে মৃত সামা চরণ বড়ুয়ার ছেলে শশাংক বড়ুয়া, শশাংক বড়ুয়ার ছেলে রাহুল বড়ুয়া, মেয়ে বুলু বড়ুয়া, স্ত্রী নয়ন বালা বড়ুয়া ও অনিল ধরের ছেলে মিঠন ধরের নেতৃত্বে একদল ভাড়াটে লোকজন তাদের বসত বাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারিরা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে হাতে থাকা দা-কুড়াল নিয়ে তাঁর বাগানের সুপারী, কাঁঠালসহ অর্ধ শতাধিক ফলবান গাছ কেটে সাড়াড় করে। এমনকি কেটে ফেলা গাছগুলোও হামলাকারিরা নিয়ে যায়। খবর পেয়ে তিনি এবং তার অন্যান্য ভাইয়েরা বাড়িতে গিয়ে এ দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে পড়েন। এ ঘটনায় তিনি বাদি হয়ে রবিবার দুপুরে রামু থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

তদন্তকারি কর্মকর্তা রামু থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মংছাই মারমা জানান, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। ওই জমিতে গাছ কাটা বা কোন কাজ কর্ম না করার জন্য দু’পক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অজয় ধর আরো জানান, শশাংক বড়ুয়া এলাকায় ভূমিদস্যু হিসেবে পরিচিত। তিনি ইতিপূর্বে ভূয়া ওয়ারিশ দেখিয়ে দলিল সৃজন করে বিজ্ঞ আদালত থেকে একটি ডিক্রি পান। ওই রায়ের বিরুদ্ধে তাঁর বাবা বেঁচে থাকতে বিজ্ঞ আদালতে আপীল মামলা (নং ৭৭/২০১৬) করেন। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধিন রয়েছে। মামলায় নিজের পক্ষে সঠিক প্রমানাদি দেখাতে না পেরেই জমিটি জবর-দখলে শশাংক বাহিনী মরিয়া হয়ে উঠেছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শশাংক বড়ুয়ার স্ত্রী নয়ন বালা বড়ুয়া ও মেয়ে বুলু বড়ুয়া জানান, জমিটি তারা ক্রয় করেছেন এবং বিজ্ঞ আদালতে রায়ও পেয়েছেন। কিন্তু রায়ের বিরুদ্ধে আপীল মামলা চলমান থাকার পরও গাছ কেটে নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইতে তারা কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, অজয় ধরের পরিবার হতদরিদ্র। ৮মাস পূর্বে তাদের বাবা পরীক্ষিত ধর মারা গেলে পরিবারটি আরো অসহায় হয়ে পড়ে। তাদের অসহায়ত্বের সুযোগে শশাংক বড়ুয়া ও তার সহযোগিরা জমিটি দীর্ঘদিন জবর-দখলের চেষ্টা এবং তাদের হয়রানি করে আসছেন। এ ব্যাপারে আইনশৃংখলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।