মুহাম্মদ উল্লাহ মাহদী
মাতৃভূমি সূজলা সূফলা শস্য শ্যামলা অপরুপ মাটি দু’নয়ণ জুড়িয়ে যায়। অতীতের স্মৃতিগুলো প্রবাসীদের অন্তরে দূমড়ে চোপড়ে মনের মণি কৌটায় বয়ে যায়। মমতাময়ী মায়ের করুন চাহনী, অশ্রু ভেজা জ্বল, প্রেমময়ী ভালোবাসার স্ত্রীর বাকরুদ্ধতা, বাবার করুন চাহনী, ভাই-বোনদের ভালোবাসার পরশ, বন্ধু-বান্ধবদের সাথে ছুটে চলা সবকিছু যেন স্বপ্ন।
আজ প্রবাসীদের জীবনের ডায়েরী হয়ে বুক ফাটা কাঁন্নায় যেন নিরবে বুক ভেসে যায়।
নিষ্ঠুর প্রবাসে আমরা অনেকে প্রিয়জনদের হারিয়েছি দাফন কাফনে অংশগ্রহণ করারও সুযোগ হয়নি।
আবার অনেকের প্রবাস জীবনে রঙ্গিন স্বপ্ন দেখার আগেই দুনিয়ার মায়ামোহ ত্যাগ করে চলে যেতে হয়েছে। প্রিয়জনেরা বিদায় বেলায় একটু দেখারও সুযোগ হয়না। চলছে এভাবে প্রবাসীদের জীবনযুদ্ধ। প্রবাসীরা যা আয় করে বেশির ভাগ পরিবার পরিজনকে দিতে দিতে একদিন নিঃস্বহ হয়ে দেশে যায়। তখন কেউ আর মূল্যায়ন করেনা।
কঠোর পরিশ্রম ও ব্যবসা বাণিজ্য সমাপ্ত করে রুমে ফিরলে ঘুমানোর সময় মা, বাবা, স্ত্রী, সন্তান সন্তুতির কথা শুধু মনের আঙ্গিনায় ভেসে উঠে।
সন্তানদের লেখাপড়া ও মেধা নিয়ে শংকিত থাকে। প্রবাসের গ্লানি টানতে টানতে জীবন প্রদীপ নিভে যায়।
অনেকের শত ইচ্ছা থাকলেও দেশে স্থায়ী ভাবে ফিরে গিয়ে নতুন স্বপ্নের বীজ বপন করবে ব্যবসা বানিজ্য করবে। কিন্তু দেশের প্রেক্ষাপট পরিস্থিতি প্রতিকুল ও প্রবাসীদের জন্য নতুন হওয়ার কারণে সেটা হয়ে উঠেনা।
তাছাড়া হালাল হারাম ভাবে উপার্জন করা যাবে কিনা এটা নিয়ে ও আমরা শংকিত থাকি।
প্রবাসীরা সহজ সরল হওয়ার কারণে অনেকের কাছ থেকে ধোঁকা খায়। সরকার ও প্রশাসন যথাযথ মূল্যায়ন করেনা। অনেকাংশে হয়রানির শিকার হয় দেশে ও প্রবাসে। অধিকাংশ প্রবাসীদের রেমিটেন্সে সরকারের চাকা সচল হয়। তাই প্রবাসীদের রক্তঝরা ঘামের মূল্যায়ন করা সরকারের ও সমাজের প্রতিটি মানুষের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য।
প্রবাসীদের ফেলে আসা দিনগুলো শুধু আজ স্মৃতিতে হয়ে অম্লান হয়ে আছে।
আসুন, সময় থাকতে সময়ের মূল্যায়ন করি। প্রবাসীদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিই। সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে। সকলের জীবন সুন্দর ও সুশোভিত হউক, সৌন্দর্য্যময় হয়ে উঠুক। মহান রবের কাছে এই কামনা করছি।

মুহাম্মদ উল্লাহ মাহদী
সভাপতি, কক্সবাজার মাদানি ফোরাম।