ডেস্ক নিউজ:
একাদশ জাতীয় সংসদে মহাজোটের অংশীদার জাতীয় পার্টিকে (জাপা) বিরোধী দল ঘোষণা দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংসদের স্পিকারকে চিঠি দিয়েছেন দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

শনিববার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে দেয়া এক চিঠিতে এরশাদ বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদে আপনি স্পিকারের দায়িত্ব গ্রহণ করায় (যদিও তিনি এখনও একাদশ সংসদে দায়িত্ব গ্রহণ করেননি। দশম সংসদের দায়িত্বে থেকেই দায়িত্ব পালন করছেন) প্রথমেই আপনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।’

‘আপনি অবগত আছেন যে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমার জাতীয় পার্টি ২২টি আসনে বিজয় লাভ করে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল তথা প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা লাভ করেছে। নির্বাচনের এই ফলাফলের প্রেক্ষিতে পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে দলের গঠনতান্ত্রিকভাবে পদাধিকার বলে আমি জাতীয় পার্টির পার্লামেন্টারি পার্টিরও সভাপতি। এই প্রেক্ষাপটে আমি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ (রংপুর-৩) প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা এবং পার্টির কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (লালমনিহাট-৩) বিরোধী দলীয় উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।’

‘অতএব মহাত্মন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আপনার প্রতি সবিনয় অনুরোধ জানাচ্ছি।’

এর আগে গত বৃহস্পতিবার জাপার মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেছিলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের অংশীদার জাতীয় পার্টি (জাপা) সরকারের সঙ্গে থাকতে চায়।

ওই কথার ২৪ ঘণ্টা পেরোনোর আগেই অর্থাৎ গতকাল শুক্রবার তার উল্টো কথা বললেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এক নির্দেশনায় তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি বিরোধী দল হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। আর সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে থাকবেন এরশাদ নিজে, উপনেতা হবেন কো–চেয়ারম্যান জি এম কাদের।

japa

নির্দেশনায় এরশাদ আরও বলেন, জাতীয় পার্টির কোনো সংসদ সদস্য মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হবেন না।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাওয়া না-যাওয়া নিয়ে এরশাদ ও তার স্ত্রী রওশন এরশাদকে কেন্দ্র করে জাতীয় পার্টিতে দুটি পক্ষ তৈরি হয়েছিল। রওশন ছিলেন নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে। শেষ পর্যন্ত জাপা নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিরোধী দল হওয়ার পাশাপাশি মন্ত্রিসভারও অংশ হয়। এ কারণে ‘গৃহপালিত বিরোধী দল’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় জাতীয় পার্টিকে।

গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ নির্বাচনে মহাজোট ২৮৯ আসনে জয়ী হয়েছে। এরমধ্যে জাতীয় পার্টির রয়েছে ২০টি আসন। মহাজোটের বিরোধী জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এ নির্বাচনে মাত্র ৭টি আসনে জয়ী হয়েছে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের অংশীদার জাপার অবস্থান কী হবে তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে ভোটের ফল আসার পর থেকেই।