ফরিদুল অালম দেওয়ান, মহেশখালী:
ছবির এ মানুষ দুটি ছিলেন মোটামোটি স্বচ্ছল। একজন পেশায় পল্লী চিকিৎসক,অপর জন পানচাষি কৃষক। দুজনের স্বস্ব পেশা নিয়ে ভালই চলছিল তাদের সংসার। কিন্তু কপালে লিখন খন্ডায় কে? একেকটি পৃথক দূর্ঘটনায় তাদের জীবনে নেমে অাসে ঘোর অমানিশার কালো ছায়া। তাদের জীবন অাজ বিপর্যস্থ। বেঁচে থাকার চেষ্টায় সহায় সম্বল যা ছিল তা সব উজাড় করে পঙ্গুত্ব বরণ করে বেঁচে থাকলেও পরিবার পরিজন নিয়ে সাংসারিক দৈন্যদশার যাতাকলে পিষ্ট হলেও যেন কাউকে কিছু বলতে পারছেন না। কারণ জীবনে তারা কারো কাছে হাত পাতেননি। এখন সংসার চলার দায়ে পড়ে মানবেতর জীবন যাপন করলেও তাদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন না কেউ। এমনকি স্বস্ব এলাকার জনপ্রতিনিধারাও। অথচ এলাকার জনপ্রতিনিধিরা চাইলে এদেরকে পঙ্গুভাতা বা ভিজিএফ এর অাওতায় এনে এদুটি সংসার চলার সুযোগ করে দিতে পারতেন।
এদের একজন হচ্ছেন, মহেশখালীর হোয়ানক ইউনিয়নের বড়ছড়া গ্রামের মৃত যোগেশ চন্দ্র দে’র পুত্র পল্লী চিকিৎসক ডা: সুরেন্দ্র লাল দে। এইচ,এস,সি পাশ এ যুবক এল,এম,এফ প্রশিক্ষণ নিয়ে বড়ছড়া বাজারে ফার্মেসী দিয়ে গ্রামে চিকিৎসা করে ভালই চলছিল জীবন। বিগত ছয় মাস পূর্বে বর্ষায় রাস্তায় পিছলে পড়ে পা ভেঙ্গে যায়। তার চিকিৎসা,অপারেশন দিতে গিয়ে গরীব ভূমিহীন এই চিকিৎসকের সহায় সম্বল সব শেষ করে এখন পথে বসার উপক্রম।
অপর জন একই গ্রামের মৃত সুধন চন্দ্র ঘোষ এর পুত্র সুকুমার ঘোষ (৪০)। পেশায় একজন অাদর্শ কৃষক ও পানচাষি। পান বরজ করে ভালই অায় রোজগার করতেন। ৩ মেয়েসহ ৫ জনের পরিবার নিয়ে ছিলেন মোটামোটি স্বচ্ছল। ১০ কড়ার বাড়ী ভিটা ছাড়া অন্য কোন জায়গা জমি নেই। গত ৬ মাস পূর্বে চকরিয়া যাওয়ার পথে মহেশখালীর ঝাপুয়ায় সিএনজি দূর্ঘটনায় পড়ে পা ভেঙ্গে এখন সারা জীবনের পঙ্গু। স্কেচে ভর দিয়ে চলা ছাড়া কোন উপায় নেই। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাড়ে ৩ মাস চিকিৎসা করে সহায় সম্বল সব শেষ। এখন পরিবার পরিজন নিয়ে চলা দায়। কিন্তু কেউ তাদের সাহায্যে এগিয়ে অাসেনি। তারা সামাজিক লোক লজ্জায় কাউকে কিছু বলতে না পারায় এ দুটি পরিবারে চলছে নিরব দূর্ভিক্ষ। তাই তাদের দুটি পরিবারকে সরকারি বেসরকারি সংস্থা বা সমাজের বিত্তবানদের সাহায্য সহযোগিতায় এগিয়ে অাসার অাহবান জানিয়েছেন এলাকাবাসী।