সংবাদ বিজ্ঞপ্তি:
কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর জীবন সদস্য, কক্সবাজার কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক, সমাজগবেষক, চিন্তাশীল বুদ্ধিজীবী কবি, অনুবাদক মুফীদ আল-আলম অনুদিত ‘রুবায়াতে ওমর খৈয়াম’ বাংলা সাহিত্যে একটি অনন্য সৃষ্টি। ফার্সি পন্ডিত, দার্শনিক, অসাধারণ জ্ঞানী কবি ওমর খৈয়ামের ‘রুবাইয়াতে ওমর খৈয়াম’-এর বাংলা অনুবাদ বাংলা সাহিত্যে এক অসাধারণ সংযোজন। অধ্যাপক মুফীদ আল-আলমের আগে ওমর খৈয়ামের রুবাই খুব বেশি অনুদিত হয়নি। অধ্যাপক মুফীদ আল-আলম ইংরেজি সাহিত্যের পন্ডিত হিসেবে ওমর খৈয়ামের রুবাইয়ের অনুবাদেও মুন্সিয়ানার স্বাক্ষর রেখেছেন। বিশেষ করে এডওয়ার্ড ফিটজেরাল্ডের ইংরেজি থেকে তিনি বাংলা অনুবাদ করতে ছন্দ, উৎপ্রেক্ষা ব্যবহার করার মাধ্যমে রুবাইগুলো পৃথক কবিতার রূপ লাভ করেছে।

৪ জানুয়ারি বিকাল ৪টায় শহরের এন্ডারসন রোডস্থ একাডেমীর অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর ৪৩৭তম পাক্ষিক সাহিত্য সভায় অধ্যাপক মুফীদ আল-আলম অনুদিত রুবাইয়াতে ওমর খৈয়াম গ্রন্থ নিয়ে আলোচনা করা হয়। একাডেমীর সভাপতি মুহম্মদ নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সাহিত্য সভার শুরুতে একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক কবি রুহুল কাদের বাবুল ফার্সি কবি ওমর খৈয়ামের পরিচিতি মূলক একটি নাতিদীর্ঘ নিবন্ধ পাঠ করেন।

আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও মুখ্য আলোচক ছিলেন রুবাইয়াতে ওমর খৈয়ামর অনুবাদক অধ্যাপক মুফীদ আল-আলম। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আলোচনা অংশ নেন একাডেমীর স্থায়ী পরিষদের চেয়ারম্যান কবি সুলতান আহমেদ, স্থায়ী পরিষদ সদস্য গবেষক নূরুল আজিজ চৌধুরী, একাডেমীর জীবন সদস্য সিনিয়র আইনজীবী শামসুল আলম কুতুবী, একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক কবি মীর্জা মনোয়ার হাসান, একাডেমীর অর্থ সম্পাদক কবি মোহাম্মদ আমিরুদ্দীন, নির্বাহী সদস্য ও কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক গল্পকার সোহেল ইকবাল, কবি মোহাম্মদ আবুল কাসেম ও কবি আরসাদুর রহমান।

প্রধান অতিথি ও মুখ্য আলোচক অধ্যাপক মুফীদ আল-আলম বলেন, ফার্সি সাহিত্যের অন্যতম প্রতিভাবান কবি ওমর খৈয়াম দর্শন বা বিজ্ঞান দিয়ে যে ভাব তুলে ধরা যায় না খৈয়াম তা কবিতার অবয়বে তুলে ধরতে চেয়েছেন। আর তাই যুক্তি ও আবেগের করুণ রসের প্রভাবে ওমর খৈয়ামের চার-লাইন বিশিষ্ট কবিতাগুলো কবিতা জগতে হয়ে উঠেছে অনন্য। দার্শনিকরা একটি বই লিখেও যে ভাব পুরোপুরি হৃদয়গ্রাহী করতে পারেন না, গভীর অর্থবহ চার-লাইনের একটি কবিতার মধ্য দিয়ে ওমর খৈয়াম তা সহজেই তুলে ধরেছেন।

অধ্যাপক মুফীদ আল আলম বলেন, মার্কিন কবি জেমস রাসেল লোয়েল ওমর খৈয়ামের রুবাই বা চতুষ্পদী কবিতাগুলোকে “চিন্তা-উদ্দীপক পারস্য উপসাগরের মনিমুক্তা” বলে অভিহিত করেছেন। ওমর খৈয়ামের রুবাই বা চারপংক্তির কবিতাগুলো প্রথমবারের মত ইংরেজিতে অনূদিত হয় খৃষ্টীয় ১৮৫৯ সালে। এডওয়ার্ড ফিটজেরাল্ডের এই অনূবাদের সুবাদেই ওমর খৈয়াম বিশ্বব্যাপী কবি হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেন। এ অনুবাদের মাধ্যমে ফিটজেরাল্ড নিজেও খ্যাতিমান হয়েছেন। তার এই অনুবাদ গ্রন্থ দশ বার মুদ্রিত হয়েছে এবং ওমর খৈয়াম সম্পর্কে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হাজার হাজার প্রবন্ধ ও বই লিখিত হয়েছে।

পরে কবি রুহুল কাদের বাবুল ও মুহম্মদ নূরুল ইসলাম ওমার খৈয়ামের রুবাই পাঠ করেন।