বার্তা পরিবেশক:
প্রায় পাঁচ মাস ধরে কারাগারে বন্দী রয়েছেন এএইচএম হামিদুর রহমান রহমান আযাদ। সেখান থেকেই তিনি আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনে ২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। জনগণের সান্নিধ্য না পেয়ে তিনি কারাগারে অত্যন্ত মর্মাহত হয়ে দিন কাটাচ্ছেন। সেখানে বসেই মহেশখালী ও কুতুবদিয়া বাসীর উদ্দেশ্যে তাঁর না বলা কথাগুলো দিয়ে লিখেছেন একটি খোলা চিঠি।  চিঠিটি নিন্মে  প্রকাশ করা হলো

প্রিয় মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার আপামর জনসাধারণ
আসসালামু আলাইকুম।
আশা করি আপনারা ভালো আছেন। আমি কিন্তু আপনাদের ছেড়ে কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্টে পড়ে আছি। তাই স্বাভাবিকভাবেই আমার ভালো থাকার কথা নয়। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, সরকারের রোষানলের শিকার হয়ে আমি দীর্ঘদিন ধরে আপনাদের কোমল সান্নিধ্যে যেতে পারিনি। এর মধ্যে বিগত পাঁচ মাস ধরে কারাগারে বন্দী হয়ে আছি। একটি আইনগত প্রক্রিয়া শেষ হতে না হতেই আরেকটি নতুন জটিলতায় ফেলা হচ্ছে। কারামুক্ত হওয়ার পথ আটকে দিচ্ছে। একটি চিহ্নিত চক্রান্তকারী গোষ্ঠি আমার মুক্ত জীবনের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই আপনাদের ভালোবাসা আর সান্নিধ্য খুব মিস করছি। এই দীর্ঘ সময়ে আপনাদের সাথে দেখা বা যোগাযোগ করতে না পারার জন্য ক্ষমা চাচ্ছি।

আমার প্রিয় মহেশখালী ও কুতুবদিয়াবাসী
আমি কারাগারে থাকলেও আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য সংসদ নির্বাচনে আমি আপনাদের খেদমতের জন্য প্রার্থী হয়েছি। আমি কারাগারে থাকলেও আমার দল ও জোট আমাকে মূল্যায়ন করে আবারো আপনাদের খেদমত করার পথ তৈরি করে দিয়েছেন। এই পথের পরিপূর্ণতা দেয়া এখন আপনাদের হাতে। আপনারা মূল্যবান ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করলে আবারো আপনাদের সেবা করার সুযোগ পাবো। একই সাথে আমি মুক্তি পাবো পৃথিবীর এই অভিশপ্ত কারাগার থেকে।

প্রিয় মহেশখালী-কুতুবদিয়ার ভাই-বোনেরা
২০০৮ সালে বিপুল ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে আপনারা আমাকে সংসদে পাঠিয়েছিলেন। তখন আমি বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য হয়েও নানা কৌশলে চেষ্টা করে আপনাদের জন্য অনেক উন্নয়ন প্রকল্প আনতে সক্ষম হয়েছিলাম। সেই সময়ের পরিকল্পনায় গৃহীত প্রকল্প এখনো চলমান। কুতুবদিয়ার বিদ্যুৎ লাইনকে জাতীয় গ্রীডের আওতায় নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছিলাম। এছাড়াও মহেশখালী ফায়ার সার্ভিস স্থাপন, টিআর, কাবিখার সঠিক ও ন্যায্য বণ্ঠনের মাধ্যমে মসজিদ-মন্দিরের উন্নয়ন করেছিলাম। এক কথায় ৫ বছরের এমপি থাকাকালে একফোঁটা দুর্নীতির কাঁদা আমার গায়ে লাগতে দিইনি।
পরিচ্ছন্ন রাজনৈকি সংস্কৃতির চর্চঅ এবং আল্লাহর ভয় অন্তরে ধারণ করে জীবন পার করেছিলাম। কিন্তু রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রের কাছে আমি আজ বড্ড অসহায়। আজ আমি চার দেওয়াল বন্দি। আপনারাই আমাকে মুক্ত করতে সাহায্য করতে পারেন। তাই আপনাদের কাছে আকুল আপনার মূল্যবান ভোটটি আমার প্রতীক আপেল মার্কায় দিয়ে আমাকে মুক্ত পৃথিবীতে ফেরার সুযোগ দিবেন।

প্রিয় জনসাধারণ
বিগত দশটি বছর আওয়ামী লীগের নামধারী লোকজনের জিম্মি হয়ে পড়ে দুই দ্বীপের মানুষগুলো। মাতারবাড়ী কয়লাবিদ্যুত প্রকল্পের ক্ষতিপূরণের টাকা লুটপাট, নিরীহ লোকজনের উপর হামলা মামলায় আপনারা নিশ্চিয়ই অতিষ্ঠ। তাই মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্রের মুক্তি, সর্বোপরী দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হচ্ছে।
আপনাদের বুঝতে হবে, দেশ কোন অবস্থায় আছে। আমরা সবাইতো ভুক্তভোগী। রাতে বাড়িতে ঘুমাতে পারছেন না নিরীহ লোকজন। কোথাও বের হতে পারছেন না। মিথ্যা মামলা আর আওয়ামী লীগের লোকজনের মারধরের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। কারাগারে বসে এসব খারাপ খবরগুলো যখন পাই তখন খুব খারাপ লাগে। তখন আল্লাহ কাছে দু’হাত তুলে এই বিভীষিকাময় পরিস্থিতি থেকে দেশের মানুষকে উদ্ধার করতে ফরিয়াদ জানাই। এই পরিস্থিতি উত্তরণে আপনাদেরকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আপনার ভোটটা কোথায় পড়বে তার উপর নির্ভর করবে এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি উত্তরণে। তাই আপনার ভোটটি আমার আপেল মার্কায় দিয়ে সমৃদ্ধ, উন্নত ও শান্তিপূর্ণ মহেশখালী ও কুতুবদিয়া গড়তে এগিয়ে আসুন। আল্লাহ হাফেজ।

ইতি
আপনাদেরই কারাবন্দী ভাই
এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ
সাবেক সংদ সদস্য ও সংসদ সদস্য প্রার্থী- একাদশ সংসদ নিবার্চন।
কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া)।