|| মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী ||

বন্যায় পানির ঢল দেখেছি, বাঁধ ভাঙ্গা পানির স্রোত দেখেছি। মানুষের ঢল দেখা হয়নি। কিন্তু সেই নাদেখার জিনিসটিও শেষপর্যন্ত দেখা হয়ে গেলো-কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। ২৬ ডিসেম্বর বুধবার বিকেলে। সেখানে ছিল কক্সবাজার-৩ আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ২৩ দলীয় ঐক্যজোট মনোনীত প্রার্থী লুৎফুর রহমান কাজলের নির্বাচনী পথসভা। শুরুতেই বিকেল সোয়া ৩ টার দিকে মনে করেছিলাম পথসভাটা হয়ত একটু বড় হবে। সাড়ে ৩ টা যখন বেজে গেলো তখন পঙ্গপালের মতো মানুষের মিছিল আর মিছিল। ঈদগাও বাজারের চতুর্দিক থেকে পাগলে মতো মানুষ আসছে আর আসছে। এসব দেখাতেই মানুষের ঢল নাদেখার সে সাধটুকুও মিঠে গেলো। মিছিলের সাথে ছিল ঢোল, তবলা, হারমোনিয়াম, বাঁশি, ঝুমঝুমি সহ সব দেশজ বাদ্যযন্ত্র। এসব বাদ্যযন্ত্রের সুরে সুরে নেচে গেয়ে ঝংকারে প্রকম্পিত হচ্ছিল ঈদগাহ হাই স্কুল মাঠের চারিপাশ। একজন মানবতাবাদী হ্যামিলনের সেই বাঁশিওয়ালার পেছনে ছুটছে মানুষ। মিছিলে বজ্রকন্ঠে ধানের শীষ বলতে বলতে প্রায় অর্ধশত মানুষ অজ্ঞান হয়ে পড়েছ। এ অজ্ঞান অবস্থায়ও শীচ! শীচ! শীচ! শীচ! অনেকের মুখ থেকে এ রকম বের হচ্ছিলো। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করা হচ্ছিল। সেই হ্যামিলনের মানবতাবাদী মানুষটি যখন বিকেল সোয়া ৪টার দিকে মাঠে পৌঁছালেন তখন ঈদগাহ হাই স্কুলের মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ। স্কুলে প্রবেশের চারিপাশের রোডগুলোও মানুষে মানুষে ভর্তি। বাঁশিওয়ালাকে দেখে মানুষ উল্লাসে ফেটে পড়ে। তখন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা করছিলেন। পথসভা বলে কথা, আচরনবিধির দোহায় দিয়ে জনসভার মতো করে মাইকের ব্যবস্থা নেই সেখানে। তাই-কার কথা কে শোনে। মাটি ও মানুষের রাজনীতিবিদ লুৎফুর রহমান যখন দেখে মানুষের জন্য কিভাবে পাগল হয়। তখন চিন্তা ককরছিলেন-আমার প্রতি এত বিশাল ভালোবাসার প্রতিদান আমি কিভাবে দেবো? জীবনটাতো খুব ছোট্ট। আর ভালবাসা তো সাগর-মহাসাগর। এই ছোট্ট জীবনে বিশাল ভালবাসার বিনিময় আমি কখনো দিতে পারবো না। লুৎফুর রহমান কাজলের এই নাপারার চিন্তায় মনে পড়ে গেলো প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী কুমার শানুর গাওয়া জনপ্রিয় গান “ভালবাসা যত বড়, জীবন তত বড় নয়, তোমাদের নিয়ে হাজার-বাঁচতে বড় ইচ্ছা হয়”। তবে লুৎফুর রহমান কাজল মহান আল্লাহতায়ালর দরবারে প্রার্থনা জানাচ্ছিলেন-কক্সবাজার সদর-রামুর মানুষকে চিরদিন সুখী যেন সুখী রাখে। এই আবেগী ভালবাসার মানুষগুলো তাদের নিষ্পাপ ভালবাসা আর আবেগের বর্হিপ্রকাশ করুক নির্বিঘ্নে নির্মল আনন্দচিত্তে ৩০ ডিসেম্বর রোববারে। সেই ধান শালিকের সবুজ মাঠের পাকা ধানের শীষে।