রেবেকা সুলতানা আইরিন:

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় আইন উপ-কমিটির অন্যতম সদস্য, সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী, জননেত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সহচর সমুদ্রকন্যা এড. নাসরিন সিদ্দিকা লীনা কক্সবাজারে প্রত্যন্ত অঞ্চলে চষে বেড়াচ্ছেন। তিনি কক্সবাজারের ৪টি সংসদীয় আসন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে উপহার দেয়ার জন্য জেলাবাসীকে আহবান জানান। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে হবে।

গত দু’দিন ধরে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও গ্রামে জনগণের সাথে কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি দেশরত্ন শেখ হাসিনার সালাম পৌঁছে দিচ্ছেন এবং ৩০ তারিখে গণতন্ত্রের প্রতীক নৌকা মার্কায় ভোট প্রার্থনা করেন।

মঙ্গলবার সারাদিন ঈদগাঁও স্টেশন, ইসলামপুর, জালালাবাদ, ভাদিতলা, ভারুয়াখালী, পানিরছড়া, জোয়ারিয়ানালা, চৌফলদন্ডী ও খুরুশকুলসহ কক্সবাজারের বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় গণসংযোগ করেন। এদেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে অক্ষুন্ন রাখার জন্য দুর্নীতিমুক্ত, সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মানে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের বিকল্প নেই। তাই আগামীতেও তাঁকে এদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করার জন্য সুযোগ দিতে হবে।

বিভিন্ন পথসভায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেত্রী এড. নাসরিন সিদ্দিকা লীনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল এদেশের মানুষের মুখে হাসি ফুটানো। ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত দেশ গড়ার জন্যই দেশ স্বাধীন করেছিলেন। জাতির পিতার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে আমরা মানুষ ও দেশের সেবায় কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, আমরা ব্যবসা করতে আসিনি, আমরা মানুষের সেবা করতে এসেছি। তাই আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে, তখন দেশ খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ হয় এবং দেশের মানুষ পেট ভরে খেতে পায়। ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ দেশকে খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মানুষের আয় বৃদ্ধি করে বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে মর্যাদার আসনে বসাতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এখন দেশের মানুষ কেউ অনাহারে থাকে না, বিনা চিকিৎসায় মারা যায় না। আমরা খাদ্য, শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা মানুষের দোরগোড়ায় এনে পৌঁছে দিয়েছি। বেকার যুবক ও মা-বোনদের জন্য কর্মসংস্থান এর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নারীরা যেন ঘরে বসে কর্মসংস্থান পায়। সেজন্য একটি ঘর একটি খামার প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। গৃহহীনদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা করা হচ্ছে। দেশের অনন্য এলাকাসহ এই এলাকার কৃষকের উৎপাদিত খাদ্যশস্য যাতে দীর্ঘ মেয়াদে সংরক্ষণ করা যায় সেই উদ্দেশ্যে এখানে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে এই প্রথম মাল্টি স্টোরিড ওয়ারহাউজ (অত্যাধুনিক বহুতল বিশিষ্ট খাদ্য গুদাম) উদ্বোধন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যেই এই দেশকে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী এড. লীনা আরো বলেন, ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে ১৫ হাজার ৩ শত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে। দেশের ৮০ ভাগ মানুষ এখন বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। আগামী ২০২১ সালের মধ্যে আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে তার সন্ত্রাসী নেতা-কর্মীরা সারাদেশে জ্বালাও, পোড়াও করে জাতীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে। তার ছেলে তারেক রহমান হাওয়া ভবন নির্মাণ করে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছিল। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের ভাবমর্যাদা ছিল সন্ত্রাসের। কারণ তখন চাঁদে মানুষের মুখ দেখিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়ি-ঘরে আগুন দেয়া হয়েছিল। বগুড়ার কৃষকলীগ নেতাকে কোরআন শরীফ পাঠরত অবস্থায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। অথচ ইসলাম শান্তির ধর্ম তাই উলামা-মাশায়েখ, শিক্ষক-অভিভাবক সবাইকে বলি আসুন ঐক্যবদ্ধভাবে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করি।

‘দেশে যখন লোক সংখ্যাছিল সাড়ে ৭ কোটি তখন খাদ্য আমদানি করতে হতো, এখন জনসংখ্যা ১৬ কোটি কিন্তু আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমরা এখন নিজের চাহিদা মেটানোর পর বিদেশেও চাল রফতানি করতে পারে। বগুড়ায় যে মাল্টি স্টোরেড সাইলো (চাল রক্ষণাগার) উদ্বোধন করা হচ্ছে সেটি দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বাধুনিক। এখানে সোলার বিদ্যুতের ব্যবস্থা রয়েছে। যেখানে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ব্যবহারের পরও অতিরিক্ত উৎপাদিত বিদ্যুৎ ন্যাশনাল গ্রিডে সংযুক্ত হবে।’

উল্লেখ্য যে, এড. লীনার চমক লাগানো গণসংযোগ কক্সবাজারের জনসাধারণের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। এসময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।