বার্তা পরিবেশক:

কক্সবাজার সদর উপজেলার ২নং পোকখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ এশিয়ার ২য় বৃহত্তম সমবায় সংগঠন গোমাতলী সমবায় কৃষি ও মোহাজের উপনিবেশ সমিতি (রেজি: ১৮৫(সি)২৫/০৬/১৯৫০ ইং) এর ব্যবস্থাপনা কমিটির বিরুদ্ধে বেপরোয়া দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অনির্বাচিত পকেট কমিটি দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সমিতির লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করছে বর্তমান কমিটির নেতৃবৃন্দ। তাদের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে কোন সাধারণ সদস্য মুখ খুলতে পারে না। ভুলেও কেউ মুখ খুললে তার উপর তাদের ভাড়াটি সন্ত্রাসীরা চালায় নির্মম নির্যাতন। নতুবা সমিতি থেকে সদস্য পদ বাতিলসহ নানা হুমকী ধমকী দেয়া হয় বলে জানা গেছে। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে সমিতির সাধারণ সদস্যরা প্রতিবাদ করলে দুর্নীতিবাজ নেতৃবৃন্দ সন্ত্রাসীদের নিয়ে দিনদুপুরে প্রকাশ্যে গুলিবর্ষণ করে বলে এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়। ওই সময় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে প্রতিবাদকারী সদস্যদের এলাকা ছাড়া ভয়ভীতি দেখায়। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।

সমিতির সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১৯৫০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় গোমাতলী সমবায় কৃষি ও মোহাজের উপনিবেশ সমিতি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত কমিটি সমিতির যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করেছিল। কিন্তু হঠাৎ করে বর্তমান কমিটির নেতৃবৃন্দ নিয়মবহির্ভূতভাবে নির্বাচনবিহীন একটি পকেট কমিটি করে। এরপর থেকে শুরু তাদের নৈরাজ্য।

সমিতির ৯৭নং সদস্য মরহুম মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল শুক্কুরের পুত্র সাজ্জাদুল করিম বলেন, সমবায় ও প্রভাবশালী মহলকে ম্যানেজ করে পকেট কমিটির আদলে বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গঠনের পর থেকে তারা একটি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বাহিনী পালন করে আসছে। সেই সন্ত্রাসী বাহিনী তাদের সকল অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করতে পরোক্ষভাবে মদদ দিচ্ছে। প্রতিবছর সমিতির সদস্যদের বরাদ্দকৃত জমি চিংড়ি চাষের জন্য নিলাম দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এছাড়া তারা বিচারের নামে প্রহসন করে সদস্যদের কাছ থেকে জোর করে টাকা দাবি আদায় করছে। আর টাকা না দিলে বিচারে পক্ষপাতিত্ব করে বছরের পর বছর বিচার কালক্ষেপন করা হয়। পটেক কমিটির নেতৃবৃন্দ কোন রকম বার্ষিক সাধারণ সভাসহ মিটিং না করে বাজেট করে মাঠিকাটাসহ একাদিক কাজ দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতিনিয়ত। এসব দুর্নীতির নেপথ্যে নেতৃত্বে রয়েছে পকেট কমিটির বর্তমান সভাপতি, সাধারণ সম্পাক ও সহ-সভাপতি। তারা প্রভাবশালি মহলের সাথে আতাত করে জমি অবৈধভঅবে দখল করে ভোগ করে আসছে। সাজ্জাদুল করিমের মতো একাধিক সদস্যও একই অভিযোগ করেন। অভিযোগে তারা জানান, বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটি তাদের নিকটজনদের সুবিধা দেওয়ার জন্য নিলাম ছাড়া ঘের নিলাম দিচ্ছে। অনুমতি ছাড়া সমিতির রক্ষা বেড়িবাঁধ কেটে পানি চলাচলের ব্যবস্থা করছে। পরে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে সমিতির চিংড়ি ও লবন চাষের জমি নষ্ট হয়ে যায়। ওই সমিয় জোয়ার ভাটায় পরিণত হলে গরিব সদস্যরা কমদামে শেয়ার বিক্রি করতে চাপ দেয়া হয়। তারপর সেই শেয়ার জোর করে কমিটির আত্বীয় স্বজন দিয়ে কিনে নিয়ে পুনরায় দিগুণ দামে বিক্রি করা হয়। তাছাড়া সমিতির মামলা পরিচালনার নামে খরচ দেখিয়ে অহেতুক প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তারা। একই সাথে দুর্নীতিবাজ ওই কমিটি নির্দিষ্ট অফিস বা ঠিকানা ব্যবহার না করে ৬৮ বছরের পুরোনো সমিতির রেকর্ডপত্র তাদের নিজেদের কাছে রেখে একাধিক রিসিভ বই ও রেজুলেশন বই ব্যবহার করা হচ্ছে। একেক সদস্যকে একেক রকম কাগজ পত্র দিয়ে টাকা নিয়ে তা সমিতির অরজিনাল কাগজে ব্যবহার না করে সদস্য পরিবর্তন ও জমি বিক্রি, বন্ধে আলাদা অবৈধ চাঁদা নিয়ে নিজেদের মাঝে ভাগ ভাটোয়ারা করা হয়। ক্ষমতার ব্যবহার করে সমিতি পরিচালনার দায়িত্ব তাদের নিজেদের কর্তৃত্ব বজায় রেখে নিরবে গোমাতলী কৃষি ও মোহাজের উপনিবেশ সমিতির সব কিছু নতুন সোনার বাংলা সমিতির নামে পরিবর্তন করে নিরহ সদস্যদের এলাকা ছাড়া করা হচ্ছে। পরে সাধারণ সদস্যদের ঘেরসহ অন্যান্য সম্পদ সন্ত্রাসীদের দিয়ে জবর দখল করা হয়। পকেট কমিটির সভাপতি সাবেক শিবির ক্যাডার ক্ষমতার অপব্যবহার সদস্যদের জমি কেড়ে নেওয়ার হুমকিসহ একাদিক মামলা দিয়ে ত্যাগ করার হুমকি দেয়া হচ্ছে প্রতিনিয়ত। তাই এ অবস্থায় সমিতির সাধারণ সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী, সমবায় মন্ত্রী, সমবায় সচিব ও দূদকের চেয়ারম্যনসহ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নিতে সমিতির সভাপতির মোবাইলে একাধিকবার কল দেয়ার পরও সংযোগ পাওয়া যায়নি।