বার্তা পরিবেশক:
কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের ধানের শীষের প্রার্থী সাবেক দু’বারের সংদ সদস্য আলমগীর মুহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ বলেছেন, মহেশখালী-কুতুবদিয়া জনগণ ধানের শীষ ছাড়া কিছু বুঝে না। তারা খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য পাগল হয়ে গেছে। আওয়ামী দুঃশাসন বিদায় করে দেশের গণতন্ত্র মুক্ত করতে এখানকার জনগণ একজোট হয়েছেন। এতে মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এই গণজোয়ার দেখে আওয়ামী লীগের লোকজন দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তাই তারা ভোটারদের উপর থেকে আস্থা হারিয়ে মামলা ও হামলার পথ বেছে নিয়েছে। কিন্তু জনগণ শত বাধা পেরিয়েও ৩০ ডিসেম্বর ভোট দিয়ে ধানের শীষকে বিজয়ী করবে।

 রোববার (২৩ ডিসেম্বর) বিকালে কক্সবাজার শহরের এক হোটেলে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

শত বাধা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্তয় করে তিনি আরো বলেন, আমাকে ঠেকাতেই আওয়ামী লীগ ও পুলিশ একজোট হয়েছে। আওয়ামী লীগের লোকজন যেখানে-সেখানে আমাদের উপর সশস্ত্র হামলা হামলা করছে। অন্যদিকে পুলিশ বিনা অপরাধে আমাদের নেতাকর্মীদের আটক করছে।

সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, আওয়ামী লীগের লোকজন ও পেটুয়া বাহিনীর হামলায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে আমার নির্বাচনী প্রক্রিয়া। সরকারের অনুগত পুলিশ বাহিনী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবী মামলা দায়ের এবং অমানবিক নির্যাতনের মাধ্যমে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। নির্বাচন কমিশনের নির্লজ্জ নির্লিপ্ততায় সব দলের জন্য নির্বাচনের সমান মাঠ তথা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এখনও তৈরী হয়নি। সরকারি দল ও প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের খুন, গুম ও নির্যাতনের মাধ্যমে আমাদেরকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। কিন্তু আমরা অদম্য। কোন শক্তিই আমাদের নির্বাচন থেকে পিছু হটাতে পারবে না। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা, গণতন্ত্রকে রক্ষা তথা ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’ এই স্লোগানকে রক্ষার জন্য আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তিন আরো বলেন, অনেক ষড়যন্ত্রকে উপেক্ষা করে মহামান্য সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশে বাংলাদেশ বিএনপি’র প্রতীক ধানের শীষ পুনরুদ্ধার করে গত ২০শে ডিসেম্বর আমি নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছি। ওইদিন নির্বাচনী প্রচার প্রচারণার অংশ হিসেবে আমাদের গণসংযোগের শুরুতেই মহেশখালীর উত্তর দিকে প্রবেশ পথ কালারমারছড়া ইউনিয়নের চালিয়াতলীতে পৌঁছলে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর লেলিয়ে দেয়া আজিজুল হাসান রনি, হাসান আরিফ, আবদুল কাইয়ুম, নুর কাদের, নুরাইয়া ও মনিয়ার নেতৃত্বে আমাদের উপর হামলা চালায়। পরদিন ২১ ডিসেম্বরও কুতুবজুম এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া, শেখ কামাল ও রবি আলমের নেতৃত্বে একদল আওয়ামী লোকজন আমার প্রচারণার টমটম গাড়ী এবং মাইক ভাংচুর করে। একইদিন শাপলাপুর ইউনিয়নে ডাঃ ওসমান, জসিম মেম্বার ও সাদুল্লাহর নেতৃত্বে আমার প্রচারণায় টমটম গাড়ি ও মাইক ভেংগে দেয়। একই দিনে ছোট মহেশখালী ইউনিয়নে এনামুল করিম, রিয়ন সিকদার, রায়হান মঈন উদ্দিনের নেতৃত্বে আমার প্রচারণার গাড়ি ও মাইক ভেংগে দেয়। সর্বশেষ গত ২২ ডিসেম্বর মুকবেকী এলাকায় জাইদ্যাঘোনা মোড়ে আওয়ামী সন্ত্রাসী ডাঃ ওসমান, জসীম মেম্বার ও সাদুল্লাহার নেতৃত্বে ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী আমার গাড়িতে হামলা চালায়। তাদের হামলায় আমার গাড়ীর কাচ ভেঙে যায় এবং ১০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, বর্তমানে আওয়ামী লোকজন আমাকে, আমার নেতা কর্মীদের খুন-গুম ও গায়েবী মামলার মাধ্যমে নির্বাচনকে বানচাল করতে চায়। তাদের অনুগত পুলিশ প্রতিরাতে আমার কর্মীদের বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার করে গায়েবী মামলায় চালান দিচ্ছে। এই পর্যন্ত মহেশখালী ও কুতুবদিয়া শতাধিক নেতাকর্মীকে বিনা অপরাধে গ্রেফতার করা হয়েছে। এমতাবস্থায়, আওয়ামী চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার, আমার নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যেতে প্রশাসনের সহায়তা এবং আমার জীবনের নিরাপত্তা বিধানে পুলিশে প্রোটেকশন প্রদানের জন্য জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।

এসময় তিনি বলেন, হামিদ ্আযাদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমায় দেয়ায় স্বাভাবিক আমিই ঐক্যফ্রন্টে একক প্রার্থী হই। তাই মহামান্য সুপ্রীমকোর্ট আমার পক্ষে রায় দিয়ে আমাকে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দিতে আদেশ। এতে ষ্পষ্ট হয়ে গেছে আমিই ঐক্যফ্রন্ট তথা ২৩ দলীয় জোটের প্রার্থী। এই নিয়ে জেলা বিএনপি যাই বলুক, এতে সন্দেহ নেই।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যেও মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মহেশখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও কালারমারছড়ার সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল কাদের বাবুল, কুতুবদিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি জালাল আহমদ চেয়ারম্যান, মহেশখালী বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. সিরাজুল হক রানা, মহেশখালী পৌর বিএনপির সভাপতি এড. হামিদুল হক, মহেশখালী উপজেলা যুবদলের সভাপতি এড. ফারুক ইকবাল, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম, কালারমারছড়া ইউনিয়ন বিএনপি সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল আলম, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির অন্যতম সমন্বয়ক হাজী গিয়াস উদ্দীন, মাতারবাড়ি বিএনপির সহ-সভাপতি রফিকুল ইসলাম, কালারমারছড়া যুবদলের সাবেক সভাপতি ইয়াছিন আরফাত, শাপলাপুরের বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দীনসহ আরো অনেকে।

   পুনশ্চ: এই প্রতিবেদনে যাদেরকে বিএনপির বিভিন্ন পদধারী দাবি করা হয়েছে তা নাকচ করেছে কক্সবাজার জেলা বিএনপি।