নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজার-২ আসনে হামিদ আযাদকে ২৩ দলীয় জোটের প্রার্থী দাবি করে ধানের শীষের প্রার্থী আলমগীর ফরিদের বিরুদ্ধে দেয়া জেলা বিএনপির বিবৃতির প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি নেতা খোরশেদ আলম ও আলমগীর ফরিদের আইনজীবি ও বিএনপি নেতা এড. ফারুক ইকবাল।  শুক্রবার রাতে শহরের এক হোটেলে এই সংবাদ সম্মেলন করেন তারা। এসময় উপস্থিত ছিলেন মহেশখালীর  বিএনপি নেতা আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দীন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এড. শামীম আরা স্বপ্না এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবি বিষয়ক সম্পাদক লুৎফুর রহমান কাজল মিলে কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের বিএনপির প্রার্থী আলমগীর ফরিদের ধানের শীষের বিপরীতে অবস্থান নিয়ে নির্দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী হামিদ আযাদকে ২৩ দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে দাবী করে সংবাদপত্রে যে বিবৃতি দিয়েছে তা সম্পূর্ণ গঠনতন্ত্র পরিপন্থী। একই সাথে তা ভোটারদের বিভ্রান্ত করার শামিল। বাস্তব বিষয় হলো, কক্সবাজার-২ আসনে বিএনপির পক্ষ থেকে হামিদ আযাদ ও আলমগীর ফরিদকে ধানের শীষের প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়ে চিঠি ইস্যু করা হয়েছিল। বিগত ২৮ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলে শেষ সময়ে আলমগীর ফরিদ তার প্রদত্ত্ব বিএনপির প্রত্যয়নসহ মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।

অন্যদিকে জামায়াত নেতা হামিদ আযাদ ধানের শীষের প্রত্যয়নসহ মনোনয়নপত্র জমা না দিয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। যাচাই-বাছাইয়ের পর আলমগীর ফরিদ বিএনপি একক প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন থেকে কমিশন থেকে স্বীকৃতি লাভ করেন। হামিদ আযাদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন কমিশন থেকে স্বীকৃতি লাভ করে। তবে তিনি ধানের শীষের প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে বিএনপির চিঠি জমা দেন। কিন্তু তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় রিটার্নিং কর্মকর্তা ওই চিঠি আমলে না নিয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ এর ৮ম পরিবর্তন মোতাবেক অবৈধ বলিয়া হামিদ আযাদকে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ না দিয়ে আপেল প্রতীক বরাদ্দ দেন।

কিন্তু রিটার্নিং কর্মকর্তা বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে আলমগীর ফরিদকে ধানের শীষ না দিয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ এর ১৬ (১) (২) লঙ্ঘন করিয়া আলমগীর ফরিদের প্রার্থীতা বাতিল করেন। এই বাতিলের বিরুদ্ধে আলমগীর ফরিদ হাইকোর্টে রীট পিটিশন দায়ের করেন। যার নং- ১৫৯৭৯/১৮ইং। উক্ত আদেশে বিচারপতিগণ আলমগীর ফরিদেকে প্রার্থীতা ফিরিয়ে দিয়ে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার আদেশ দেন। কিন্তু আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রীম কোর্ট বিভাগে আপীল দায়ের করেন নির্বাচন কমিশন। যার নং- ১২৫২/১৮। ১৮ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আট সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপীল বিভাগ ওই হাইকোর্টের আদেশের কার্যকারিতা বহাল রেখে নির্বাচন কমিশনের আপীল খারিজ করে দেন। তার প্রেক্ষিতে আদেশ প্রাপ্ত হয়ে ১৯ ডিসেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তা আলমগীর ফরিদকে প্রার্থীতাসহ ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, ইত্যবসরে আলমগীর ফরিদ নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছেন। কিন্তু এর মধ্যে জেলা বিএনপির সভাতি শাহজাহান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এড. শামীম আরা স্বপ্না কক্সবাজার-২ নির্বাচনী এলাকার বিএনপির নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে আলমগীর ফরিদের নির্বাচনী কার্যক্রমে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেন। বিষয়টি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমানকে অবহিত করার প্রক্রিয়া চলছে। আলমগীর ফরিদের জনপ্রিয়তায় অনকেটা ঈর্ষান্বিত হয়ে শাহজাহান চৌধুরী ও এড. শামীম আরা স্বপ্না আওয়ামী লীগ কর্তৃক প্রভাবিত হয়ে এই সংগঠন বিরোধী কার্যক্রমে লিপ্ত হয়েছেন বলে মনে করছেন মহেশখালী-কুতুবদিয়া নেতাকর্মীরা। এমনকি মহেশখালী-কুতুবদিয়া প্রতি ইউনিয়ন কমিটির তিনজনকে তলব করে এ ব্যাপারে প্রভাতি করতে কক্সবাজারে ডাকা হয়। কিন্তু তারা কেউ এই ডাকে সাড়া দেয়নি বলে দাবি করা হয়।