জেলা বিএনপির কাছ থেকে ব্যাখ্যা চায়- মহেশখালী-কুতুবদিয়ার সাধারণ মানুষ।

প্রতিবারই এই আসনে অলৌখিক ভাবে কিছু না কিছু ঘটে যায়। হয় আম, না হয় জাম। এবারো ব্যতিক্রম হয়নি। এবার ঘটলো আরেকটি রসালো ফল “আপেল” কে নিয়ে। তাইতো কবিরা বলে গেছেন- কপালের লিখন, যায় না খন্ডন।

বলে নিই মহেশখালী বিএনপির অপরাজনীতির কথাঃ

২০০৮ সাল থেকে মহেশখালী বিএনপি রাজনীতি দুই মেরুতে অবস্থিত। বিএনপি নেতাদের ভুল বোঝাবোঝির কারণে সেই বার ভাগ্য খুলে ছিল জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আজাদের। সেই বার আলমগীর ফরিদকে নিঃস্ক্রিয় করতে হামিদ আজাদকে মনোনয়ন পাইয়ে দিয়েছিল বিএনপির অামার ব্যক্তিগত সমর্থন করা পক্ষটি। ২০০৮ সালে হামিদুর রহমান আজাদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে বিএনপি ঠিকই দুই মেরু থেকে বের হতে পারেনি। দিক বেদিক হয়ে ভিন্ন ভিন্ন পথে হাটতে থাকে মহেশখালী বিএনপি। মাঝখানে সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করে জামায়াত। জামায়াতের কাদে ভাগ্য তোলে দিয়ে, যোগ্য নের্তৃত্বের অভাবে বিএনপির দু-গ্রুপই হয়ে যায় আরো নিঃস্ক্রিয়। যার শেষ পরিণতি আবারো ঘটতে যাচ্ছে চলমান নির্বাচনেও।

বরাবরের ন্যায় এবারও জোটগত ভাবে সমর্থন দেওয়া হল, স্বতন্ত্রভাবে মনোনয়ন জমাদানকারী হামিদ আজাদের “আপেল”কে। যে না স্বতন্ত্র ভাবে ফরম জমা দিয়ে “ধানের শীষ” চেয়েছিল। তখন খেলা শুরু হয় এখানে। ফেইসবুক দুনিয়ায় ঝড় উঠে- কক্সবাজার-২ এ নির্বাচনে “ধানের শীষ” নেই। লড়াই হবে ত্রিমূখী নৌকা,আপেল ও মাছ নিয়ে। তখনই ফেসবুকে বিএনপি সমর্থকেরা ঝড় তুলে- ধানের শীষ নাই, আমরাও নাই। মাছে ভাতে বাঙ্গালী। (বুঝানো হয়েছে ভাত মানেই ধান), ধান যার, আমরা তার। হামিদ কেন ধান নিতে পারল না? হামিদ আজাদ ধান নিলে, ভোট তাকেই দিতাম। এ সব শ্লোগানে মুখরিত ছিল ফেসবুক।

তখন খেলা এখানেই শুরু মাত্র:
হামিদ আজাদের অনুপস্থিতিতে সুযোগ নিতে না পারা জামায়াত নেতারা নিজের পায়ে কুড়াল মেরে”ধান চাষ” করতে না পেরে “আপেল” চাষের সিদ্ধান্ত নিলে সোনার হরিণ বনে যায় ” ধানের শীষ। ভাগ্য গিয়ে হাজির হয় আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদের দুয়ারে। সেই ভাগ্যময় সোনার হরিণ”ধানের শীষ”টি বহু প্রতিক্ষার পর ধরা দেয়, দু’বারের সাবেক সাংসদ সদস্য – জননেতা আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদের হাতে। তাতে মহেশখালী-কুতুবদিয়ার ভোটের হিসাব পাল্টে যায়। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল “ধানের শীষ” চেনা দল-অদল না জানা মহেশখালী-কুতুবদিয়াবাসী। কিন্তু ধানের শীষ প্রতিক পাওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে কক্সবাজার জেলা বিএনপির আবারো জোরালো সমর্থন যায়, হামিদ আজাদের আপেল প্রতিকে। এতে তৃনমুল বিএনপি হতভাগ।

এখন প্রশ্ন আসতেই পারে-
বিএনপির দলীয় প্রতিক আপেল, না ধানের শীষ?
খালেদা জিয়ার মার্কা আপেল, না ধানের শীষ?
তারেক জিয়ার মার্কা আপেল, না ধানের শীষ?

তবে আগে থেকেই ২৩দলীয় জোটের সমর্থন ছিল আপেল মার্কায়। টুকিটাকি প্রচারণায়ও আছে জামায়াত ইসলামীর। কিন্তু এখনো শক্ত কোন প্রতিবাদ বা প্রতিরোধ গড়তে পারেনি জামায়াত। দিন যতই যাচ্ছিল, ততই ক্ষীণ হয়ে আসছিল জামায়াতের প্রচার-প্রচারণা। শঙ্কিত ছিল সাধারণ মানুষ, প্রশ্ন ছিল- আদৌ কি পারবে জামায়াত ঘুরে দাঁড়াতে!!! অনেকেই বলতে দেখা গেছে জামায়াতকে কলার মত ছোলে ফেলবে, জামায়াতকে নামতে দিবেনা, জামায়াতের দিন শেষ, বিএনপির পিছনে থাকা প্রয়োজন জামায়াতের, এসব কথা। তখন থেকেই পুনঃরায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন – আলোচিত সাবেক সাংসদ – আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদের নাম।

পরিশেষে বলতে চাই, আলমগীর ফরিদকে ঠেকান কিন্তু শহীদ জিয়ার”ধানের শীষ”কে নয়।

আলমগীর ফরিদকে ঘৃণা করুণ কিন্তু বেগম জিয়ার”ধানের শীষ”কে নয়।

আলমগীর ফরিদকে না বলুন কিন্তু তারেক জিয়ার”ধানের শীষ”কে নয়।

এটা আলমগীর ফরিদের প্রতিক নয়, এটি বিএনপির প্রতিক।

তাই মহেশখালী-কুতুবদিয়াবাসীকে ধানের শীষে ভোট দিয়ে খালেদা জিয়াকে জয়যুক্ত করার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।

লেখকঃ
জুয়েল চৌধুরী
সাবেক সদস্য, কক্সবাজার জেলা ছাত্রদল।

(লেখাটি পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত  মতামত)