গত ১০ ও ১১ ডিসেম্বর আজকের দেশবিদেশ, সিবিএন ও উখিয়া নিউজ ডটকমে প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড ভিশন কর্মকর্তা কর্তৃক যৌন হয়রানি, ইউএন’র কাছে স্মারকলিপি’ শীর্ষক সংবাদটি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। স্মারকলিপি ও সংবাদে আমাকে জড়িয়ে যে কথাগুলো লেখা হয়েছে তা সম্পর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক।

প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, আমি চলতি বছরের ২২ এপ্রিল ওয়ার্ল্ড ভিশনে যোগদান করি। যোগদান করার পর থেকে আমার সংস্থার সুনাম এবং রোহিঙ্গাদের যথাযথ সেবার প্রদানের জন্য ব্যক্তিগতভাবে দায়বদ্ধ হয়ে কাজ শুরু করি। তাই আমি সব সময় নিজের দায়িত্ব যথাযথ পালনের নিরিখে যথা সাধ্য চেষ্টা করে আসছি। সে লক্ষ্যে আমি আমার অধীনস্থ সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সব দায়িত্বের প্রতি তাগিদ এবং তাদের কাছ থেকে সঠিকভাবে কাজ আদায় করার চেষ্টা করে আসছি। যেটা আমার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ওয়াকিবহাল রয়েছে এবং এই জন্য তারা আমাকে উৎসাহও দিয়ে আসছে। তাদের উৎসাহ এবং অসহায় রোহিঙ্গাদের সঠিকভাবে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু আমার অধীনস্থ কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের কাজে ফাঁকি দিতো। সঠিক সময়ে কর্মস্থলে আসতো না, সময় শেষ হওয়ার আগেই অফিস ত্যাগ করতো। ক্যাম্পেও নিজেদের কাজে ফাঁকি দিতো। তাই আমি বাধ্য হয়ে তাদেরকে এই জন্য অনেক বার অত্যন্ত ভদ্রতার সাথে জবাবদিহিতার আওতায় এনেছি। তবে অনেক সময় এই নিয়ে তারা আমার উপর ক্ষুব্ধও হয়েছে- যা তারা অনেক সময় সরাসরিও প্রকাশ করেছে। তারপরও আমি তাদেরকে নিয়ন্ত্রণে আনতে না পেরে তাদের কাজের উদাসীনতার ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট করতে বাধ্য হয়েছি। তাদের কাজের জবাবদিহিতার জন্য বাধ্য করা এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট করায় তারা আমাকে বিভিন্নভাবে বহিরাগত লোক দিয়ে হুমকিও দিয়েছে। তাতেও আমার ক্ষতি করতে না পারায় তারা নিজেরা পরিকল্পনা করে আমাকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা অভিযোগ লিখে আমার বিরুদ্ধে ইউএনও মহোদয়ের কাছে স্মারক লিপি দিয়েছে। এসবের কোনো ভিত্তি নেই।

তাদের অভিযোগ সম্পর্কে আমার স্পষ্ট বক্তব্য হলো- উল্লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে যৌন হয়রানির শিকার কারো নামা স্মারকলিপিতে কিংবা সংবাদে উল্লেখ নেই। এটাতে স্পষ্ট যে, অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন এবং ষড়যন্ত্রের অপচেষ্টা। অন্যদিকে, রোহিঙ্গাদের মধ্যে শিশু উপকরণ বিতরণে যে অনিয়মের অভিযোগ করা হয়েছে তার ব্যাপারে আমার স্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে- আমি কোনোভাবেই শিশু উপকরণ বিতরণে অনিয়ম করিনি এবং সংস্থার নীতি অনুযায়ী উপকরণ বিতরণে অনিয়মের বিন্দুমান্ত্র সুযোগ নেই। কেননা সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমুহ নিজ নিজ কার্য সম্পাদনের মাধ্যমে উপকরণগুলো বিতরণ সম্পন্ন করে। আমার কাজ হলো- শুধু পুরো প্রক্রিয়াকে মনিটরিং এবং তত্ত্বাবধায়ন করা। উল্লিখিত ৮০৪১ উপকরণ প্যাকেজের মধ্যে ইতিমধ্যেই ৬১৪১ প্যাকেজ বিভিন্ন ক্যাম্পে বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। অবশিষ্ট ১৮৫০ প্যাকেজ রোববার (১৭ ডিসেম্বর) ক্যাম্প-১৫ তে বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে।

পরিশেষে আমি প্রকাশিত সংবাদ ও স্মারকলিপির তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ করছি।

প্রতিবাদকারী
মোঃ মোক্তারুল ইসলাম
প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর, ওয়ার্ল্ড ভিশন।