ইমাম খাইর, সিবিএন:
দীর্ঘ ৬ বছর দুই মাস পর অবশেষে স্বপদে পুনর্বহাল হলেন চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী কিশলয় আদর্শ শিক্ষা নিকেতনের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক সৈয়দ আকবর। সেই সাথে দীর্ঘদিন বরখাস্ত আদেশ নিয়ে স্কুলের বাইরে থাকা প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলামও তার পদ ফিরে পেয়েছেন।
রবিবার (২৫ নভেম্বর) সকালে জেলা শিক্ষা অফিসার ছালেহ উদ্দিন চৌধুরীর মধ্যস্ততায় তাদের হাতে পুনঃনিয়োগপত্র তুলে দেন স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি জয়নাল আবেদীন।
এদিকে, প্রবীন শিক্ষক তাজুল ইসলাম ও সৈয়দ আকবর স্বপদে ফিরে যাওয়ার খবরে স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা উৎফুল্লিত হয়েছে। তারা জেলা শিক্ষা অফিসারের চৌকস সিদ্ধান্ত, স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতির আন্তরিকতাপূর্ণ মানসিকতার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছে।
জেলার প্রথম ও পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল কক্সবাজার নিউজ ডট কম (সিবিএন)-এ ২৪ নভেম্বর ‘চক্রের ঘুরপাকে একজন মানুষ গড়ার কারিগর’-শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদটি মুহুর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়। স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র ছাত্রীদের অনেকে ফোন করে সিবিএন কর্তৃপক্ষ বিশেষ করে প্রতিবেদক (ইমাম খাইর)-কে ধন্যবাদ জানিয়েছে। এমনকি দেশের বাইরে থাকা অনেকে সাহসী, অনুসন্ধানী ও বস্তুনিষ্ট সংবাদটির প্রশংসা করে প্রতিবেদকের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।
স্বপদে পুনর্বহালের বিষয়ে মাস্টার ছৈয়দ আকবর নিজের ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন- আজ ২৫/১১/২০১৮ তারিখ আমার প্রাণপ্রিয় কর্মস্থল কিশলয় আদর্শ শিক্ষা নিকেতনে জেলা শিক্ষা অফিসারের মধ্যস্ততায় ম্যানেজিং কমিটির সভায় পুনঃ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। দীর্ঘ ৬ বছর পরে কর্মস্থলে পুনর্বহাল হওয়ায় মহান আল্লাহর নিকট শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। পাশাপাশি যারা আমাকে সহযোগিতা করেছেন, তাদের প্রতি রইল আমার আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
১৯৮৫ সাল থেকে স্কুলে সহকারী শিক্ষক পদে কর্মরত ছিলেন সৈয়দ আকবর। শিক্ষক হিসেবে তিনি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ সবমহলের কাছে জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য। একজন ‘আদর্শ শিক্ষক’ হিসেবেও সুখ্যাতি আছে তার। ২০১২ সালের ১ অক্টোবর তাকে নিয়মবহির্ভূতভাবে তাকে বহিষ্কার করা হয়। তা অনুমোদনের জন্য চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে আবেদন করে তৎকালীন স্কুল পরিচালনা কমিটি। বোর্ডের ৩৪ তম আপীল এন্ড আরবিট্রেশন এর সিদ্ধান্তে তা বিধি মোতাবেক না হওয়ায় অনুমোদন না করে সৈয়দ আকবরকে কর্মস্থলে পুনর্বহাল করতে ম্যানেজিং কমিটিকে আদেশ দেয়।
শিক্ষাবোর্ডের সেই সিদ্ধান্ত অমান্য করে হাইকোর্টে ৪৩২/১৪ রীট পিটিশন দায়ের করেন স্কুল পরিচালনা কমিটির তৎকালীন সভাপতি মরহুম নুরুল আবছার হেলালী। ওই মামলা ২০১৫ সালের ৩০ আগষ্ট দুপক্ষের শুনানী শেষে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড, চট্টগ্রাম এর আপীল এন্ড আরবিট্রেশনের আদেশ বহাল রেখে রায় দেয় আদালত।
আদালতের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে মহামান্য সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে সিএমপি-৯৫৩/১৫ এবং সিভিল পিটিশন ফর লিভ টু আপীল নং-১১৭৭/১৬ দায়ের করেন তৎকালীন সভাপতি। যা শুনানী শেষে ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর (ডিসমিস) খারিজ হয়ে যায়। রায় প্রদান করেন সুপ্রিমকোর্টের বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহহাব মিয়া, সাইয়েদ মাহমুদ হোসাইন, মোহাম্মদ ঈমান আলী ও হাসান ফয়েজ ছিদ্দিকীর বেঞ্চ।