আবদুল মজিদ, চকরিয়া:

চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল বিএমএস উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ৩৬জন ছাত্র-ছাত্রীর এসএসসি পরীক্ষা দেয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের এহেন কর্মকান্ড নিয়ে তীব্রক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে অভিভাবকরা। অন্যদিকে গতকাল সোমবার (১৯নভেম্বর) সন্ধ্যায় স্কুল প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে শিক্ষার্থীরা।

তথ্যসূত্রে জানাগেছে, সাহারবিল বিএমএস উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে মোট এসএসসি পরীক্ষার্থী রয়েছে ১৫৭জন। বিদ্যালয়ে সদ্য অনুষ্ঠিত এসএসসি টেষ্ট পরীক্ষায় এসব শিক্ষার্থী অংশ নিলেও কৃতকার্য হয়েছে মাত্র ৩৬জন শিক্ষার্থী। স্কুলের প্রধান শিক্ষক কৃতকার্য ৩৬জন শিক্ষার্থীর ফরম পূরণ করেছে। ছাত্র-ছাত্রীরা অভিযোগ করেন, কৃতকার্য ৩৬জন শিক্ষার্থী ছাড়াও অকৃতকার্য আরো ৮৫ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অবৈধ উপায়ে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ফরম পূরণ করা হয়েছে। কিন্তু চাহিদামত টাকা দিতে না পারায় এলাকার দরিদ্র পরিবারের অবশিষ্ট ৩৬জন শিক্ষার্থীর কোন ভাবেই ফরম পূরণ করেনি স্কুল প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম। অন্যদিকে স্কুল শিক্ষকরা জানিয়েছেন, এসএসসি ফরম পূরণের সময় রয়েছে আর মাত্র ২দিন। বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, প্রধান শিক্ষক মো: নজরুল ইসলাম এসএসসি ফরম পূরণে সরকার নির্ধারিত ফি: ১৫০০টাকার পরিবর্তে কৃতকার্য ৩৬জন থেকে ৪ হাজার টাকা করে এবং অকৃতকার্য ৮৫জন থেকে ৫ হাজার টাকা করে আদায় করেছে। তন্মধ্যে প্রতিজন থেকে ৩ মাসের কোচিং ফিস হিসেবে নেওয়া হয়েছে ১৫০০ টাকা। একইভাবে অবশিষ্ট ৩৬ জন শিক্ষার্থীও ৫ হাজার টাকা করে দিতে চাইলে তাদের কাছ থেকে আরো অতিরিক্ত টাকা দাবী করেন। দরিদ্র পরিবারের সন্তানরা তার দাবীকৃত টাকা দিতে না পারায় ইচ্ছে করে এসএসসি ফরম পূরণ করছেনা। ফলে আসন্ন এসএসসি পরীক্ষা দেয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইয়াসিন, খোকন, মামুন, রাসিব, নাঈম, জিসান, ইমরান, আবু হোরাইরা, রাকিবুল ইসলাম, মাসুম, শহিদুল ইসলাম, আরাফাত, ইলিয়াছ, সাকিল, মুজিব, জিসান, বৃষ্টি, নয়ন মনি, সুমি, রেখা, তছলিমা, তামিম, নুসরাত, লাকি, ফারজানা ও রুবি অভিযোগ করে সাংবাদিকদের জানায়, অকৃতকার্য যেসব ৮৫ জন শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করা হয়েছে, তাদের প্রত্যেকেই ২/৩বিষয়ে অকৃতকার্য ছিল। তারা দাবী করেন, অন্যান্যদের মতো আমাদের ফরম পূরণ করে এসএসসি পরীক্ষা করতে না দিলে আমরা সকল শিক্ষার্থীদের নিয়ে মানববন্ধনসহ কঠোর কর্মসূচী আয়োজন করতে বাধ্য হবো। শিক্ষার্থীরা জানান, তারা আজ ২০ নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করবেন। ইতিপূর্বে ফরম পূরণ করতে না পারায় ২জন শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে মুমুর্ষ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, স্কুল কমিটির সভাপতি ও শিক্ষকদের সমন্বয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কৃতকার্য শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ করে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের বাদ দেওয়ার। তিনি ফরম পূরণকারী সকলেই কৃতকার্য বলে দাবী করেন। তিনি অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যান।

চকরিয়া সাহারবিল বিএমএস উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মহসিন বাবুল জানিয়েছেন, শিক্ষাবোর্ডের নির্দেশনা রয়েছে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ না করার। এবিষয়ে বিদ্যালয়ে জরুরী মিটিং হয়েছে। অকৃতকার্য কোন ছাত্রের ফরম পূরণ হয়ে থাকলে অবিশিষ্ট শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণের ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।