খালেদ হোসেন টাপু, রামু
আল-হাইয়্যাতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়াহ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফী (দা.বা.) বলেছেন, দ্বীন হলো নসীহত তথা কল্যাণকামিতার নাম। তিনি এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (স.) এর পবিত্র হাদীস উদ্ধৃত করে বলেন, আল্লাহর কুরআন মোতাবেক কার্য পরিচালনা করা, সুন্নাতে নবভীর আলোকে সমাজ গড়া, ইসলাম অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনায় শাসকবর্গকে জনগণের কল্যাণে কাজ করা, পাপাচার ও দূর্নীতিমুক্ত জীবন যাপনে জনসাধারণকে উপদেশ দেয়াই দ্বীন তথা কল্যাণকামিতার মর্ম। এ হাদীসের আলোকে অর্পিত মহান দায়িত্ব পালনে কওমী মাদ্রাসাসমূহই প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
১৭ নভেম্বর সকাল ৭ টায় কক্সবাজার জেলার ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষাকেন্দ্র রামু রাজারকুল আজিজুল উলুম মাদ্রাসা পরিদর্শনে গিয়ে হেদায়তী বক্তব্যে আল্লামা শফি এ কথা বলেন।
অবিসংবাদিত আধ্যাত্মিক রাহবার, জামিয়া আহলিয়া মঈনুল ইসলাম হাটহাজারীর মহাপরিচালক, শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী (দা.বা.) ওলামায়েকেরামের উদ্দেশ্যে বলেন, উল্লিখিত হাদীসের আলোকে কুরআন-সুন্নাহভিত্তিক জীবন-যাপনের পাশাপাশি মুসলিম শাসকবর্গকে খলীফা ওমর (র.) এর মত রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য নসীহত করা এবং জনসাধারণকে পাপাচারমুক্ত জীবন-যাপনের উপদেশ দেয়া আমাদের দ্বীনি কর্তব্য। এ কর্তব্য যথাযথ পালিত হলে খুন, খারাবী, চুরি, ডাকাতি, সুদ, ঘুষ, দূর্নীতি, অবিচারের মুলোৎপাটন হয়ে এক বছরের মধ্যেই পরিশুদ্ধ হবে রাষ্ট্র, সমাজ ও জনসাধারণ। প্রবাহিত হবে শান্তির ঝর্ণাধারা।
আজিজুল উলুম মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা মোহাম্মদ মোহছেন শরীফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় তিনি বলেন, এতিম, দুস্থদের প্রতিপালন ও সুশিক্ষিত করা সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। কওমী মাদ্রাসা সমূহ বিশাল এতিম, গরীব জনগোষ্ঠীকে প্রতিপালন ও সুশিক্ষিত করে সরকারের কর্তব্য পালনে অনন্য সহযোগীর ভূমিকা পালন করছে। ইলমুল ওহীর পবিত্র এ শিক্ষাধারার গুরুত্ব অনুধাবন করেই সরকার কওমী মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদকে এম.এ’র সমমর্যাদা প্রদান করেছে। যুগান্তকারি এ স্বীকৃতির ফলে কওমী ওলামায়ে কেরামের খেদমতের পরিধি অধিকতর বিস্তৃতি লাভ করবে। তিনি সনদের মান রক্ষায় লেখাপড়ায় অধিকতর মনোনিবেশ করার জন্য শিক্ষার্থীদের তাগিদ দেন।
অনুষ্ঠানে মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালক মাওলানা আব্দুল খালেক কওছর রচিত কাব্যাভিনন্দন পত্র দিয়ে তাকে সংবর্ধিত করা হয়। সর্বজন শ্রদ্ধেয় বুযুর্গ আলেমেদ্বীন আল্লামা শাহ আহমদ শফী (দা.বা.) আজিজুল উলুম মাদ্রাসার লেখা-পড়ার মান, শিক্ষার্থীদের আখলাক-চরিত্র, মনোরম পরিবেশ ও সার্বিক ব্যবস্থাপনায় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে বলেন, খ্যাতিমান বুযুর্গানেদীনের পরশধন্য এ মাদ্রাসায় এসে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। মাদ্রাসাটি এতদঞ্চলের উদাহরণযোগ্য দ্বীনি শিক্ষাকেন্দ্রে রুপান্তর হবে ইনশাআল্লাহ। তিনি এ মাদ্রাসার মেশকাতের ছাত্রদের সবক প্রদান করেন এবং অতিশিঘ্রই দাওরায়ে হাদীস ক্লাস চালু করার জন্য কর্তৃপক্ষকে উদ্বুদ্ধ করেন। সেই সাথে মাদ্রাসার নবনির্মিতব্য ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনপূর্বক মহান আল্লাহর দরবারে বিশেষ মুনাজাত করেন।
অনুষ্ঠানে জামেয়া দারুল উলুম চাকমারকুলের পরিচালক মাওলানা সিরাজুল ইসলাম সিকদার, রামু জামেয়াতুল উলুম মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা হাফেজ শামসুল হক, দারিয়ারদিঘী মারকাজুল হুদা মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা কেফায়ত উল্লাহসহ বিশিষ্ট আলেম-ওলামা ও ধর্মপ্রান জনসাধারণ অংশগ্রহন করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন, মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা মুফতি দেলাওয়ার হোসাইন।