শাহীন মাহমুদ রাসেল:
২০১৯ সালের এস.এস.সি পরীক্ষায় অংশ নিতে মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে চলছে ফরম পূরণের কাজ। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, নির্ধারিত বোর্ড ফি’র চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাতে শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ।

দু’মাস পরই এস.এস.সি পরীক্ষা। তাই স্কুলগুলোতে চলছে ফরম পূরণের কাজ। শিক্ষা বোর্ডের নির্ধারিত ফি বিজ্ঞান, কলা ও বাণিজ্য বিভাগে সর্বোচ্চ ১৪শ’ টাকা। কিন্তু কক্সবাজারের বেশ কিছু বেসরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ করেছে। প্রতি শিক্ষার্থীর ফরম পূরণের জন্য বিভাগের পার্থক্যে বোর্ড নির্ধারিত ফি ১১শ’ থেকে ১৪ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু বেশ কয়েকটি স্কুল অনেক বেশি টাকা নিচ্ছে। তবে স্কুলের শিক্ষকরা বলছেন, কোচিং সেবা দেয়ার জন্য শিক্ষকদের জন্য কিছু টাকা ধরে ফি বাড়ানো হয়েছে।

অকৃতকার্য এস.এস.সি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূণের সুযোগ দেওয়ার নামে স্কুল কর্তৃপক্ষ বিলম্ব মাশুলসহ পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

রামু উপজেলার মিঠাছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের আনুমানিক ৮৩ জন এস. এস.সি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষ দেড় থেকে দুই হাজার টাকা অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেছে। তবে পরীক্ষায় ক্ষতি হতে পারে এমন আশংকায় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক অভিভাবক জানান, মিঠাছড়ি উচ্চ বিদ্যালয় এবার দশম শেণীতে ৮৩ জন পরীক্ষার্থী এস.এস.সি ফরম পূরণে বাছনিক পরীক্ষায় অংশ নেয়। এতে সব বিষয়ে উত্তীর্ন কয়েকজন পরীক্ষার্থী ফরম পূরণের জন্য কৃতকার্য হয়। দুই বিষয়ে অকৃতকর্যসহ কিছু শিক্ষার্থীদের নিকট হতে বোর্ড নির্ধারিত ১ হাজার ৪৪৫ টাকার স্থলে প্রতি পরীক্ষার্থীর নিকট হতে ২ হাজার ১০০ টাকা হারে ফি নিয়ে ফরম পূরণ করে। পরে অকৃতকার্যদের মধ্য থেকে দ্বিতীয় দফায় বিলম্ব মাশুলের ফাঁদে অতিরিক্ত ক্লাসের নামে স্কুল কর্তৃপক্ষ বোর্ড নির্ধারিত বিলম্ব মাশুলসহ ২ হাজার ১০০ টাকার স্থলে সর্বমোট ৩ হাজার ৭ শত টাকা আদায় করে। বাকী কয়েকজন পরীক্ষার্থীদের নিকট হতে শিক্ষার্থী প্রতি ২ হাজার টাকা বাড়তি হাতিয়ে নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। সর্ব মোট আনুমানিক ৮৩ জন পরীক্ষার্থী এবার এস. এস. সি ফরম পূরণে বাধ্যতা মূলক অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে ফরম পূরণ করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভিভাবক জানান, তার বোন ফরম পূরণে বোর্ডের নির্ধারিত ফি এর চেয়ে দুই হাজার ৩০০ টাকা অতিরিক্ত জমা দিতে হয়েছে। পরীক্ষায় ক্ষতি হতে পারে এমন আশংকায় কোন অভিভাবক এর প্রতিবাদ করেনি। স্কুল কর্তৃপক্ষ পরিকল্পিত ভাবে এ অর্থ বাণিজ্য করেছেন। এমনকি পরীক্ষার্থীদের নিকট হতে ফরম পূরণের আদায়কৃত অর্থের কোন রসিদও দেওয়া হয়নি। পরে সাংবাদিকদের ফোন পেয়ে ছয় শত টাকা করে প্রত্যেকজনকে ফিরিয়ে দেয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক জানান, বাছনিক পরীক্ষা কড়াকড়ি খাতা দেখারও নির্দেশ ছিল শিক্ষকদের ওপর। যাতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পরীক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়। এ অকৃতকার্যের ফাঁদে ফেলে বিলম্ব মাশুলের সুযোগ নিয়ে ওইসব পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণে সুয়োগ করে দিয়ে অতিরিক্ত অর্থ উত্তোলন করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহম্মেদ শফি বলেন, পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে বাড়তি অর্থ নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ক্লাস ও তিন মাসের বেতন বাবদ অর্থ নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষাদের কাছ থেকে উত্তোলনের কেন রসিদ দেওয়া হয়নি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, রসিদ দুই দিনের মধ্যে দিয়ে দেওয়া হবে।