হামিদুল ইসলাম অারাফাত

নির্বাচন সাধারণত উৎসবাকারে ধরা দেয় সাধারণ মানুষের কাছে। নিজেকে একটু গুরুত্বপূর্ণ ভাববার সুবর্ণ সুযোগও হাজির হয় বৈকি। বড় বড় নেতারা এসে কত কাকুতিমিনতি করেন ভিক্ষুকের মতো, এটাই হচ্ছে আসল মজা ভোটারদের কাছে। নির্বাচনের পরে যে তিনি আকাশের চাঁদ বনে যাবেন সে ব্যাপারে ভোটাররা ওয়াকিবহাল। তদুপরি, নির্বাচনের এই কয়েকটা দিন কতই যে মধুর লাগে! নিজেকে একটু জাহির করা যায়। হাটে-বাজারে, মাঠে-ময়দানে, দোকানে বা হোটেলে কত আলোচনা-সমালোচনার ফুলঝুরি বয়ে যায় এই কয়দিন। উৎসব উৎসব আমেজ সবখানে। এটাই মূলতঃ নির্বাচনের মজা। কিন্তু সময় বদলেছে। এখন সবকিছুকে স্রেফ মজা হিসেবে নেওয়ার দিন শেষ হয়েছে। নিজেকে সচেতন, শিক্ষিত নাগরিক ভাবতে হলে অধিকারের বিষয়ে সচেতন হওয়া আবশ্যক। সেক্ষেত্রে আপনাকে একমুখী পা ছাটার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে নৈতিকতার দায়ে। সংবাদপত্র গুলোকে ভূমিকা রাখতে হবে নিরপেক্ষভাবে। সাংবাদিকদের কাজ করতে হবে সাধারণের অধিকারের ব্যাপারে। এর জন্য আমরা নির্বাচনের প্রার্থীদের সাধারণ মানুষের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে পারি। কোন একটি স্থানে প্রশ্ন-উত্তর পর্বের আয়োজন করে প্রার্থীকে সাধারণ মানুষের দ্বারা যাচাই করা যায়। এই পদ্ধতিটি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে প্রয়োগ করে সুফল পাওয়া গেছে।

এক্ষেত্রে কয়েকটি লাভের মধ্যে একটি লাভ হলো, উক্ত প্রার্থীর মনে দৃঢ়ভাবে এই মনোভাবটি প্রোথিত হয় যে, ‘জনগণকে আর ফাঁকি দিয়ে চলা যাবে না। তারা এখন অনেক সচেতন।’ এবং এই প্রশ্নোত্তর পর্বটি নির্বাচন পরবর্তী সময়েও প্রতি মাসে জারি করে রাখলে দেশ ও সমাজের কল্যাণ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে পারে।

মহেশখালী-কুতুবদিয়া সংসদীয় আসনের আলোকে প্রার্থীকে করা যায় এমন কয়েকটি প্রশ্নের নমুনা এইখানে তুলে ধরা যেতে পারে,

১। মহেশখালীতে বাস্তবায়িত বিভিন্ন প্রকল্পের গৌরবগাঁথা শোনা যায়, কিন্তু প্রকৃত পক্ষে স্থানীয় জনসাধারণ এর থেকে সুফল ভোগ করতে পারছেন না। নির্বাচিত হলে আপনি এব্যাপারে কি পদক্ষেপ নিবেন?

২। প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমির ক্ষতিপূরণ এখনো ঠিকভাবে দেওয়া হয়নি। এই বিষয়টি আপনি সমাধান করার ওয়াদা দিতে পারেন কিনা?

৩। মহেশখালী এবং কুতুবদিয়ার প্রধান সড়কের প্রস্থ সম্প্রসারণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে নানান সময়ে। কিন্তু বাস্তবায়িত হয়নি এখনো। এই বিষয়টি আপনি কিভাবে দেখছেন?

৪। সোনাদিয়া এবং কুতুবদিয়াকে পর্যটনকেন্দ্র করবার জন্য আপনার মনোভাব কি? এই এলাকা গুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে আপনি ওয়াদা দিবেন কিনা?

৫। আপনি যেসব প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, এগুলো যে বাস্তবায়ন হবে এর নিশ্চয়তা কি? এরকম আরো হাজারো প্রশ্ন সচেতন মহলের পক্ষ থেকে পেশ করে সচেতন নাগরিক হিসেবে নিজেদের কর্তব্যের দায় এড়ানো যায়। নির্বাচনই হোক অধিকার আদায়ের হাতিয়ার।

লেখকঃ শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সদস্য, মহেশখালী রিপোর্টার্স ইউনিটি