কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া:
উখিয়ার উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের চৌখালীতে নতুন করে রোহিঙ্গা ক্যাম্প স্থাপনের প্রক্রিয়া হাতে নেওয়ায় স্থানীয় দেড় শতাধিক পরিবারের মাঝে দেখা দিয়েছে উচ্ছেদ আতংক। এ নিয়ে গ্রামবাসির মধ্যে উত্তেজনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে স্থানীয় হতদরিদ্র শতাধিক গ্রামবাসি বনবিভাগ সহ সংশ্লিষ্ঠ সকল দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছে। তাদের দাবী, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ চৌখালীতে বসবাসের পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত খামার করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল। এখন তাদেরকে উক্ত এলাকা থেকে উচ্ছেদ করে দিলে ভিক্ষা করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই বলে সাংবাদিকদের অভিযোগ করেন।
জানা গেছে, কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের উখিয়া রেঞ্জের আওতাধীন থাইংখালী বনবিটের মোছারখোলা টহল ফাঁড়ির চৌখালী মাঠ নামক স্থানে বনবিটের শতাধিক একর বনভূমিতে নতুন করে রোহিঙ্গা ক্যাম্প স্থাপনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী। তারা কক্সবাজারের শীর্ষ স্থানীয় কর্মকর্তাদের ম্যানেজের মাধ্যমে এ অপতৎপতা চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, ইতিমধ্যে শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার সহ সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা স্থানটি পরিদর্শন করেছেন। এর পর থেকে স্থানীয় বসবাসকারীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতংক উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।
সরজমিন চৌখালী এলাকা ঘুরে স্থানীয় মোঃ আবু মুছা, সেলিম মিয়া, রিয়াদ, আব্দুল হান্নান, মোঃ হারুন, হেলাল উদ্দিন ও একেরামের সাথে কথা বলে জানাযায়, তাদের পূর্ব পুরুষ থেকে এ এলাকায় বসবাস করে আসছিল। উক্ত জমিতে তাদের নামে বনববিভাগের ২০১০-১১সালে সৃজিত আগর বাগানের দলিল রয়েছে। কিন্তু স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল তাদেরকে উচ্ছেদ করার জন্য সরকারের উচ্চ মহলকে সেখানে ক্যাম্প স্থাপনের উৎসাহিত করছে। তারা শতাধিক গ্রামবাসি বনবিভাগসহ সংশ্লিষ্ঠ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছে বলে জানান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল হক বলেন, উক্ত এলাকায় নতুন করে ক্যাম্প স্থাপন করা হলে শতাধিক গ্রামবাসিকে উচ্ছেদ করতে হবে। স্থানীয়দের উচ্ছেদ করে রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প স্থাপন কতটুকু যৌক্তিক ? এ নিয়ে বর্তমানে স্থানীয়দের মাঝে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা নাগরিকদের প্রত্যাবাসন (নভেম্বর) মাঝামাঝি সময়ে ফেরত নেওয়ার কথা দিয়েছে। এ লক্ষ্যে উভয় দেশ প্রস্তুতি গ্রহন করছে। কিন্তু এই ফাঁকে শুরু নতুন ক্যাম্প স্থাপন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাঁধাগ্রস্থ করা ছাড়া আর কিছুই নয়। এছাড়া ও মিয়ানমারে অবশিষ্ঠ রোহিঙ্গারা এদেশে চলে আসতে উৎসাহিত হবে। সুতারাং তিনি রোহিঙ্গাদের সংশ্লিষ্ঠদের চৌখালীতে ক্যাম্প স্থাপন না করে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পক্ষে জোর দেওয়ার দাবী জানান।
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগীয় কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, আমি সবে মাত্র যোগদান করেছি। সুতারাং এ বিষয়ে আমি বিস্তারিত জানিনা। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (অতিঃ সচিব) মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, পার্শবর্তী ক্যাম্পে রোহিঙ্গা যদি সংকূলন না হয়, সেক্ষেত্রে উক্ত চৌখালীতে স্থানান্তর করা হবে। কিন্তু এখনো সেখানে কোন স্থাপনা নির্মাণ করা হয়নি। তবে পরিবর্তীতে পরিকল্পনা রয়েছে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।