রফিক মাহমুদ, উখিয়া:

উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের রুমখাঁ চরপাড়া গ্রামের কলেজ ছাত্রী শারমিন আক্তারকে (১৮)  গলা কেটে করে হত্যা করা হয়েছে।  শনিবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে পরিকল্পিতভাবে নিজ বাড়ীতে ডুকে ধারালো চুরি দিয়ে এ-লোহমর্ষহ হত্যার ঘটনাটি সংঘটিত করেছে কিলার। নিহত কলেজ ছাত্রী মৃত আবু তাহেরের কন্যা। তিনি চলতি বছর পালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি পাস করে উখিয়া বঙ্গমাতা মুজিব মহিলা কলেজের ব্যবসা বাণিজ্য বিভাগের ছাত্রী ছিলেন।

নিহতের মা জাহানারা বেগম জানান, কক্সবাজার টেকনাফাইপ্পা পাহাড়ের বাসিন্দা আব্দুল করিমের ছেলে নুরুল কবির (২৮) নামক এক দুধর্ষ সন্ত্রাসী দীর্ঘদিন ধরে আমার মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। তিনি একজন ডাকাত প্রকৃতির লোক। তার প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় ক্ষুদ্ধ হয়ে আমার মেয়েকে ধারালো ছুরি দিয়ে জবাই করে নিশংস ভাবে খুন করেছে।

কলেজ ছাত্রীকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে খবর শুনে এলাকার শত শত লোক ঘটনাস্থলে ভীড় জমায়। ক্ষুদ্ধ গ্রামবাসীরা হত্যাকারীকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন।

উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আবুল খায়েরের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সুরতাহল রিপোর্ট তৈরি করে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে, অফিসার ইনচার্জ বলেন, পরিকল্পিতভাবে কলেজ ছাত্রী শারমিনকে পৈশাষিক ভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকান্ডে জড়িত আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কলেজ ছাত্রী শারমিন প্রতিদিনের ন্যায় কলেজ শেষে ও প্রাইভেট পড়ে বাড়ীতে ফিরে। ওই সময় বাড়ীতে কেউ ছিল না। খুনি পরিকল্পিতভাবে একা পেয়ে তাকে ঠান্ডা মাথায় গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

নিহতের মামা হাছান আহমদ সওদাগর জানান, ৩ বোন, ১ ভাইয়ের মধ্যে ২ বোনের বিবাহ হয়েছে। ছোট ছেলে ও ছোট মেয়ে নিয়ে মা জাহানারা বেগম বাড়ীতে একাই থাকত। অনেক কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করে মেয়ে শারমিনকে উচ্চ শিক্ষা দেওয়ার জন্য কলেজে ভর্তি করে।

পাশ্ববর্তী কয়েকজন মহিলা জানান, হত্যাকান্ডের সময় মা বাড়ীতে ছিল না। অসুস্থ পিতা হাবিবুর রহমানকে দেখতে তিনি বাপের বাড়ীতে যান। এ সুযোগে সন্ত্রাসী খুনি কলেজ ছাত্রী শারমিনকে খুন করে পালিয়ে যায়। পরে মা খবর শুনে এসে রক্তাক্ত মেয়ের লাশ বাড়ীতে পড়ে থাকতে দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে।

জালিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী কলেজ ছাত্রী শারমিন হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, হত্যাকারী নরপশুকে দ্রুত গ্রেফতারে পুলিশ প্রশাসনকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান। এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, হত্যাকান্ডে জড়িত নুরুল কবিরের বোন ওই এলাকায় চনা-পিয়াজু বিক্রেতা নুরু বিবাহ করে। এ সুবাদে তিনি চর পাড়া গ্রামে আসা-যাওয়া করত। এমনকি হত্যা করে পালিয়ে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসী নুরুল কবিরকে অনেকেই দেখেছেন বলেও এ প্রতিবেদককে জানান। খোঁজ-খবর নিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে, সন্ত্রাসী নুরুল কবিরের একাধিক স্ত্রী রয়েছে। লম্পট হিসাবে সবাই তাকে ছিনে।