আবুল কালাম, চট্টগ্রাম:

চট্টগ্রাম পাহাড়তলী থানা এলাকায় ডিটি রোড়ের  লাকী হোটেলের মোড় থেকে মোহাম্মদ রফিক (৪৩) নামে এক সিএনজি, অটোরিকশা চোরকে আটক করেছেন পুলিশ।

শুক্রবার (৯ নভেম্বর) ভোরে আটকের সময় তার কাছ থেকে একটি দেশিয় তৈরি অস্ত্র ও গুলিও উদ্ধার করা হয়।তিনি সংঘবদ্ধ সিএনজি অটোরিকশা চোর চক্রের প্রধান। তার বাড়ি
সন্দ্বীপ উপজেলার গাছুয়া এলাকার সাইদুল হকের ছেলে।

নগরীর পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সদীপ কুমার দাশ  বলেন, সিএনজি অটোরিকশা চোর চক্রের অন্যতম হোতা মোহাম্মদ  রফিককে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক করা হয়েছে। তাকে দীর্ঘদিন ধরে খুঁজছিল পুলিশ।

তিনি বলেন, রফিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, সিলেট, নারায়নগঞ্জসহ পুরো দেশে বিস্তৃত রফিকের নেটওয়ার্ক। এ চক্রের হাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অন্তত ২ হাজার সিএনজি অটোরিকশার মালিক।

সিএনজি অটোরিকশা চুরি করে ফেরত দেওয়ার নামে দফায় দফায় তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল অংকের টাকা। তাকে আটক করতে এক বছর ধরে চেষ্টা করেও সফল হতে পারেনি নগর পুলিশের একাধিক ইউনিট।

সদরঘাট থানার ওসি মো. নেজাম উদ্দিন বলেন, মোহাম্মদ  রফিককে আটক করতে সন্দ্বীপ, নারায়নগঞ্জসহ একাধিক জায়গায় অভিযান চালিয়েছি আমরা। তিনি কৌশলে পালিয়ে থাকতেন। তার নেটওয়ার্ক পুরো দেশে রয়েছে। বিভিন্ন জেলায় তিনি একাধিক বিয়েও করেছেন। সেখানে তার বাসাও রয়েছে। কিছুদিন পর পর বাসা পরিবর্তন করেন তিনি।

মোহাম্মদ  রফিকের বিরুদ্ধে সদরঘাট, খুলশী, হালিশহরসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানান ওসি মো. নেজাম উদ্দিন।

এ চক্রের আর এক সদস্য মনির, তার স্ত্রী, শ্যালকসহ কয়েকজনকে আগে আটক করেছিলেন বলেও জানা ওসি।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (পশ্চিম) মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম  বলেন, মোহাম্মদ রফিক সিএনজি অটোরিকশা চুরিকে এক মহা শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে। পুরো দেশে তিনি নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছেন। তাকে গ্রেফতারে অনেকদিন ধরে চেষ্টা করছিলাম আমরা।

মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম বলেন, দুরন্তর কৌশলী মোহাম্মদ রফিক এক জায়গায় বেশিদিন থাকেন না। সবসময় স্থান পরিবর্তন করেন। এখন পর্যন্ত তার ব্যবহার করা ৪০টি সিমের নাম্বার পেয়েছি আমরা। কয়েকটা চুরির পরই নতুন নাম্বার ব্যবহার করেন তিনি। তাই তাকে গ্রেফতার করতে গিয়েও সফল হইনি আমরা।

তিনি বলেন, রফিক যাত্রী বা চালক বেশে সিএনজি অটোরিকশা চুরি করে মালিকের কাছ থেকে অটোরিকশা ফেরত দেওয়ার নামে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। বিকাশে টাকা নেওয়ার পর এক জায়গায় সিএনজি অটোরিকশা রেখে ফেরত দেন মালিককে।

গাড়ির ডকুমেন্টস রেখে দিয়ে ফের টাকা দাবি করেন এবং ডকুমেন্টস বাবদ দ্বিতীয় দফায় টাকা আদায় করেন। প্রত্যেকটা চুরির কাজ এভাবেই করতেন তিনি ও তার চক্রের সদস্যরা।

পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম বলেন, এ চক্রের সদস্যরা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেও দ্রুত জামিনে বের হয়ে যান। আর তাদের এ কাজে সহায়তা করেন আদালতের কিছু অসাধু কর্মচারী। তাকে আটকের পর নগরীর সিএনজি অটোরিকশা মলিক ড্রাইভাররা সহস্তি পাবে বলে আশা করেন।