আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার পর আলামত মুছে ফেলতে ইস্তাম্বুলে একজন কেমিস্ট ও একজন টক্সিকোলজি বিশেষজ্ঞ-সহ ১১ সদস্যের এক প্রতিনিধিদল তুরস্কে পাঠায় সৌদি আরব। সোমবার তুরস্কের সরকারপন্থী দৈনিক ডেইলি সাবাহ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

রাজপরিবারের উপদেষ্টা থেকে সমালোচক বনে যাওয়া এ সাংবাদিককে ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে হত্যার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। জামাল খাশোগিকে হত্যার ভয়ঙ্কর তথ্য প্রকাশ করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেছেন, খাশোগিকে পরিকল্পিত উপায়ে হত্যা করেছে সৌদি।

এরদোয়ানের এই দাবির সত্যতাও মিলেছে। রিয়াদের কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, সাংবাদিক খাশোগি হত্যা ছিল পরিকল্পিত। তবে ৫৯ বছর বয়সী এই সাংবাদিককে হত্যার পর তার মরদেহ কোথায় রাখা হয়েছে সেব্যাপারে কোনো তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে সৌদি।

ডেইলি সাবাহর তথ্য বলছে, মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টের কনট্রিবিউটর জামাল খাশোগি বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন। তার নিখোঁজের ৯ দিন পর গত ১১ অক্টোবর ১১ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল তুরস্কে পাঠায় সৌদি আরব। কনস্যুলেটের ভেতরে খাশোগিকে হত্যার আলামত মুছে ফেলতে এই প্রতিনিধি দলকে ইস্তাম্বুলে পাঠানো হয়। এর আগে রিয়াদ থেকে ১৫ সদস্যের কিলিং স্কোয়াড পাঠিয়ে খাশোগিকে হত্যা করা হয় বলে দাবি করে তুরস্ক।

তুরস্কের এই দৈনিক বলছে, কেমিস্ট আহমাদ আব্দুল আজিজ আলজানোবি ও টক্সিকোলজি বিশেষজ্ঞ খালেদ ইয়াহিয়া আল জাহরানি তথাকথিত ওই ১১ সদস্যের দলে ছিলেন। ১১ অক্টোবর থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত প্রত্যেকদিন কনস্যুলেটে যান এই সদস্যরা। পরে ২০ অক্টোবর তুরস্ক থেকে সৌদিতে পাড়ি জমান তারা।

এমনকি ১৫ অক্টোবরের আগে পর্যন্ত কনস্যুলেট ভবনে তল্লাশি অভিযান চালাতে তুরস্কের পুলিশকে অনুমতি দেয়নি সৌদি আরব। গত সপ্তাহে তুরস্তের প্রধান প্রসিকিউটর বলেছেন, কনস্যুলেটে প্রবেশের পরপরই খাশোগিকে হত্যা এবং সেখানেই তার মরদেহ টুকরো টুকরো করা হয়।

এরদোয়ানের উপদেষ্টা ইয়াসিন আক্তে শুক্রবার এক নিবন্ধে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, খাশোগির মরদেহ সম্ভবত অ্যাসিডে ধ্বংস করা হয়েছে। এদিকে, খাশোগিকে খুন ও গ্রেফতারকৃত ১৮ সৌদির ব্যাপারে মূল প্রশ্নগুলোর জবাব না দেয়ায় রিয়াদ কর্তৃপক্ষকে অভিযুক্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টে লেখা এক উপসম্পাদকীয় তিনি এই অভিযোগ আনেন।

এরদোয়ান বলেছেন, সাংবাদিক খাশোগিকে হত্যার নির্দেশ এসেছে সৌদি সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে। তবে তিনি এক মুহূর্তের জন্যও বিশ্বাস করেন না যে, বাদশাহ সালমান এজন্য দায়ী।