মুহাম্মাদ নছরুল্লাহ ওমরী


পৃথিবীর চলমান রাজনৈতিক কৌতুক ডিগবাজী বাজদের ধোকা থেকে এই যুগে কয়জন বা বেঁচে আছে.? কেউ রেহাই পাননি। যুগে যুগে একেক শ্রেণীর লোকদের নাজেহাল করে ছাড়ছে। ইতিহাস স্বাক্ষী, সবার মুখবন্ধে ও শীর উঁচু করে দাঁড়িয়ে কথা বলার সুযোগ ছিনিয়ে নিয়েছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ কাওমী মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিসের মাস্টার্সের সনদের স্বীকৃতি নিয়ে কিছুদিন ধরে খুব তীব্রভাবে চলছে ইজ্জত, মানসম্মান ও নিতি নৈতিকতা নিয়ে একে অপর পিছনে ছুটছি। দোষারোপ করছি একে অপরের। বড়জন, শিক্ষক ও পিতৃতুল্যদের কটুবাক্য অশালীন ভাষায় মারাত্মক ভাবে একে অন্যের আঘাত করেই যাচ্ছি। এসব কথা কাটাকাটি, বাগবিতণ্ডাই কারো কোন লাভ ও কল্যাণ বয়ে আনবে না বরং এমন ক্ষয় ক্ষতি হবে জীবনেও তা পূরণ করতে সক্ষম হবেনা। শীর উঁচু করে কোন দিন কথা বলার সুযোগ থাকবে না। সময় আজো আছে ভুল বুঝা বুঝি অবসান ঘটিয়ে নিজ নিজ সম্মান ও নৈতিকতায় ফিরিয়ে আসুন। যদি আমরা একের অপরের ভাল চাই। ফেসবুক ও বিভিন্ন অহরহ গণমাধ্যমে আজ কয়েক দিন ধরে যেভাবে দেখছি তাতে মনে কেউ কারো ভাল চাইনা। বরং একে অপরের প্রতি সত্যমিথ্যা কথা বলে ক্ষতিসাধনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। আরো বড় গলায় জোরেসোরে বলতে দেখি পৃথিবীতে শুধু তারাই নিস্পাপ, নির্ভেজাল, তারাই ভেজালমুক্ত ঈমানে বলীয়ান। আসলে কি যারা জোর গলায় বলতে চায় তারা ভেজালমুক্ত নির্ভেজাল? অথচ নিজেকে কত বড় ফকীহ মুফাসসির, মুবাললিগ বলে দাবী করছি।
তাহলে আসুন! আমরা নিজেকে প্রমাণ করি। হাদিসের আলোকে আমাদেরকে কি শিক্ষা, নৈতিকতার পথ দেখিয়েছে। অথচ আমরা তার মতো আলম করছি কি না? যদি সামান্য একটি হাদিসের ওপর আমল থাকতো কেউ কারো কখনো খারাপ চাইত না।
হাদিসে এসেছে..
عن أنس بن مالك رضي الله عنه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: (لا يؤمن أحدكم حتى يحب لأخيه ما يحب لنفسه) متفق عليه.
অর্থাৎ…
হযরত আনাস ইবনে মালেক রাদিআল্লাহু তাআ’লা আনহু হইতে বর্ণিত রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কেউ প্রকৃত ঈমানদার হইতে পারিবে না, যে নিজের ভাইয়ের জন্য ঐ জিনিস পছন্দ করিবে যাহা সে নিজে পছন্দ করে। (( বুখারী মুসলিম))

((أفضل الناس من كان بعيبه بصيرا وعن عيب غيره ضريرا))
মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তি সবচেয়ে উত্তম যে নিজের দোষত্রুটি দেখে এবং অপরজনের দোষত্রুটি হইতে অন্ধ।

মনে রাখুন! নিজের যেমন ভালো চান অপর ভাইয়ের জন্যও ভাল চান। এবং নিজের দিকে একবার হলেও থাকান দোষত্রুটি থেকে নির্ভেজাল কি না। তাহলে সঠিকটা ধরা পড়ে যাবে। আর সময় পাবেন না অপরজনের দিকে থাকিয়ে দোষত্রুটি খোঁজার সময় ব্যয় করতে।
আল্লাহ সকলকে বুঝে আমল করার তাওফিক দান করুন, আমিন ইয়া রাব্বাল আলামিন।


মুহাম্মাদ নছরুল্লাহ ওমরী , সৌদিআরব মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে