বিশেষ প্রতিবেদক:
কক্সবাজারে আগামী ৮ নভেম্বর থেকে অনুষ্ঠিতব্য ইজতেমাকে কেন্দ্র করে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপ। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একটি গ্রুপ ইজতেমা বন্ধ করতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে।

অপরদিকে ইজতেমা করার পক্ষে অনড় অবস্থানে রয়েছে মাওলানা সা’দপন্থীরা। এ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্মারকলিপি প্রদানকারী গ্রুপটি দেওবন্দপন্থী।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ঈমান-আক্বিদা পরিপন্থী , কুরআন-সুন্নাহবিরোধী বিভ্রান্তিকর বক্তব্য প্রদানকারী ভারতের বিতর্কিত আলেম ও তাবগিগ জামাতের স্বঘোষিত আমির মাওলানা সা’দ অনুসারীদের ইজতেমার জন্য দেয়া অনুমতি প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় ইজতেমাকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটতে পারে।

স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, মাওলানা সা’দ ইতিমধ্যে কুরআন-সুন্নাহ নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। যা দেশের শতকরা ৮০ ভাগ ধর্ম প্রাণ মানুষ মেনে নেবে না। তাই যে কোনো পরিস্থিতি এড়াতে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।

স্মারকলিপি প্রদানকালে মহেশখালী, চকরিয়া ও কক্সবাজার সদর উপজেলার কয়েক হাজার তাবলিগের কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

অপরদিকে মাওলানা সা’দপন্থী গ্রুপটি সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন কবিতা চত্বরের ঝাউবন জুড়ে ইজতেমার প্রস্তুতির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তারা ৮, ৯, ১০ নভেম্বর ইজতেমা করার পক্ষে অনড় রয়েছে ।

এ গ্রুপের নেতা ফরিদ ওয়াসিফ বলেন, ইজতেমা করতে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। মূলত কক্সবাজারে তবলিগ জামাত করতে না দেয়ার জন্য তারা ষড়যন্ত্র করছে । কিন্তু ধর্মপ্রাণ মানুষ তাদের অপকর্ম মেনে নেবে না। জেলার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সব কিছু অবগত করেছি।

অন্যদিকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন কওমি ওলামারা। তারা করণীয় ঠিক করবেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, কোনো পক্ষকে এখনো অনুমতি দেয়া হয়নি। আপাতত কার্যক্রম স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এর আগে গত ২৯ অক্টোবর সকালে ২টি গ্রুপের প্রতিনিধিদের ডেকে সমঝোতা বৈঠকে বসেন জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন।

জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- কক্সবাজার পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন, কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি মো. ফরিদ উদ্দিন খন্দকার। ওই বৈঠকে জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন তাবলিগের গ্রুপিংয়ের কারণে চলমান পরিস্থিতিতে ইজতেমা না করে জাতীয় নির্বাচনের পরে করার পরামর্শ দেন।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের বৈঠকে মাওলানা সা’দপন্থীদের পক্ষে ছিলেন ঢাকার মুফতি আতাউর রহমান, চট্টগ্রামের আবদুল হালিম সওদাগর, কক্সবাজারের অ্যাডভোকেট হামিদুল্লাহ, হাজী মুসা মিয়া সওদাগর, অনাস, সাদ বিন মোজাম্মেল, ডা. শামসুদ্দিন প্রমুখ।

দেওবন্দপন্থী তাবলীগ জামাতের পক্ষে ছিলেন- মুফতি মুরশেদুল আলম চৌধুরী, মাওলানা আতাউল করিম, মাওলানা জাফর আলম, মুফতি সাঈদুল ইসলাম, মাওলানা জসিম উদ্দিন প্রমুখ।

আলেমদের পক্ষে ছিলেন- মুফতি মাওলানা কেফায়েত উল্লাহ শফিক, মাওলানা মোসলেম উদ্দিন, মাওলানা মোহসেন শরীফ, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ ইউনুছ ফরাজী প্রমুখ।