আলমগীর মাহমুদ


৩০ শে অক্টোবর আমার জন্মদিন।
জন্মদিন,থার্টি ফাষ্ট নাইট,মেহেদী অনুষ্ঠান, ম্যারেইজ ডে, ভালবাসা দিবস, এসব বাঙ্গালী সংস্কৃতির গায়ে শুণ্য লতা।পরগাছা হয়েই বেড়ে উঠা।ধারের দ্রব্যে বাহাদুরী।নব্য পয়সাওয়ালার আধুনিক র্চ্চা।

১৭ সালের ৩০ অক্টোবর। মোস্তফা শাকিল আমাকে জন্মদিনের wish করে লেখা মন্তব্য বেশ নার্ভাস নার্ভাস ভাবে ফেলে।প্রশ্ন জাগে, জানল কেমনে? কয় তারিখ আমার জন্মদিন!

বুঝে আসে, এফ,বি আইডি থেকে।সাথে সাথে বুকে গরম হাওয়া। এমন হাওয়ার কালবৈশাখী। আছি ভয়ে। ভাবনায় নাড়া দিল” upgrade হ..। নইলে আমছালা দূটোই বিদায় নিবে।
, Upgrade হওন চাই।নইলে Out হবার ভয়।

৩০ তারিখ কলেজের নিমতলায় দাঁড়িয়ে সাইদুল আমিন টিপু,ইসমাইল রানা হাতে ফুল আর ফুল। একঝাঁক। সবাই Happy Birth day to you sir” ‘Happy birth day to you’ বলছে আর বলছে।আমার মুখ থেকে কিছুই বেরুয় না।

আমিতো আগে থেকেই জানতাম এই জন্ম দিন আমার নয়।প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির দিন কোন স্যারের দেয়া।নিজেরে upgrade না দেখালে যে out হবার ভয়।চুপ মেরে চালিয়ে গেলাম।

রোলিং খাতায় মা”র হাতে লেখা কাঠপেন্সিলের লেখা… আলমগীরের জন্ম ১৯৬৭ সাল রোজ সোমবার।শাহজাহানের জন্য ১৯৬৮ সাল।রোজ বুধবার। আমাদেরকে দিয়ে মা পড়িয়েছিলেন। বলেছিলেন জন্মসময়ের অজানা কাহিনী। কোনখানেই ছিল না তারিখের উচ্চারণ।

আমাদের সময়ে জাতীয় দিবসগুলোই ১৬ ডিসেম্বর, ২৬ মার্চ, ২১ ফেব্রুয়ারীই ছিল দিবস।বেশ পূত পবিত্রতায় আমরা পালন করতাম।দিবসকে দিন না ভেবে অতুলনীয় শব্দ ছিল পবিত্রতায়। জন্মদিবস,ভালবাসা দিবস হইবে জানিলে আমার মা” নিশ্চয়ই আমার জন্ম তারিখটা লিখিয়া যাইতেন।

বুঝলাম মিথ্যাকে সত্য বানানোর যন্ত্রনা।ভয় কাঁনায় কাঁনায়। যদি জাইন্যা যায়! রামধরা।

ভক্তরা ছবি নিল। ভয় তারপরও কাটছে না।দুরু দুরু কাঁপছে বুক। ,মুখে অনর্গলতা হারালাম।বার বার রাগ ক্ষোভ ফেইসবুক আইডির প্রতি। কেন আমি আই,ডি খূললাম? নইলে এতবছরের মত নীরবেই চলে যেত ত্রিশ তারিখ।

হৈ,হুল্লোড়, খানা, সব শেষে রাতে বাসায় যখন একাকী হলাম অবচেতন মন চেতন হয়ে কইল “ধোঁকার রাজ্যে ধোয়াশা ছিটিয়ে গেলি! ৩০ অক্টোবর জন্মতারিখ বানাইলি। বাহঃ বাহঃ….!

লেখকঃ- বিভাগীয় প্রধান। সসমাজবিজ্ঞানী বিভাগ।উখিয়া কলেজ,কক্সবাজার।
alamgir83@gmail.com