অনুপম বড়ুয়া টিপু, প্যারিস থেকে:

বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের অদূরে কুশলায়ন বুড্ডিস্ট মেডিটেশন সেন্টারে গত রোববার (২৮ অক্টোবর)
চতুর্থ দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দানোৎসব বিহারের নিকট বর্তী ডেলাফউন্টেন হাসপাতালের পাশে ভল্টেয়ার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

স্থানীয় সময় রোববার সকালে ধর্মীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে শুরু হয় এ উৎসব। এটা ছিল ফ্রান্সের প্রথম দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দান।

সমবেত প্রার্থনা, ধর্ম দেশনা, আলোচনা সভা, কঠিন চীবর উৎসর্গ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনটিকে উদযাপন করে প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

ফ্রান্সস্থ কুশলায়ন বুড্ডিস্ট মেডিটেশন সেন্টারের উদ্যোগে আয়োজিত এই দানসভায় সভাপতিত্ব করেন কম্ভোডিয়ান ভদন্ত থিতা ধম্মা ভিক্ষু। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতের কোলকাতা থেকে আগত ড. বুদ্ধপ্রিয় মহাথেরো। মা্ঙ্গলিক অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করবেন বিশেষ অথিতি প্যারিসে মায়ানমার দূতাবাস, রাষ্ট্রদূত মি. ক্যউ জেয়া । ফ্রান্সস্থ প্রজ্ঞাবিহারের উপাধ্যক্ষ ভদন্ত কল্যাণ রত্ন ভিক্ষু,বিহারাধ্যক্ষ জ্যোতিসার ভিক্ষু দেশনা করেন।
বিভিন্ন দেশের বৌদ্ধ ভিক্ষুরা উপস্থিত ছিলেন। মঙ্গলাচরণ করেন করুণানন্দ শ্রমন।পরিতোষ বড়ুয়ার পঞ্চশীল প্রার্থনা করেন। উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন রীমা মুৎসুদ্দি । তবলায় সংগত করেন শাপলু বড়ুয়া। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জগৎ বড়ুয়া। অনুষ্টানে অসামান্য অবদানের জন্য ড. বুদ্ধপ্রিয় মহাথের কুশলায়ন বুড্ডিস্ট মেডিটেশন সেন্টারের প্রতিষ্টাতা জ্যোতিসার ভিক্ষুকে স্বর্ণপদকে ভুষিত করেন।

বক্তারা বলেন, চীবর দান ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বৌদ্ধদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ দান জন্ম জন্মান্তরে সুফল প্রদায়ী। প্রতিটি বৌদ্ধবিহারে বছরে একবার চীবর দান করা হয়। এ দিন বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বৌদ্ধ গৃহীরা ভিক্ষুসংঘকে চীবর দান করেন। ভিক্ষুসংঘও তাদের বিনয়-বিধানের সকল নিয়ম অক্ষুণ্ন রেখে পরিধেয় বস্ত্র হিসেবে এ চীবর গ্রহণ ও ব্যবহার করে। কঠিন চীবর দানের বহুধা গুণের কথা স্মরণে রেখে প্রত্যেক বৌদ্ধ জীবনে অন্তত একবার হলেও চীবর দান করার মানসিকতা পোষণ করেন।

অনুষ্ঠানে ফ্রান্সে বসবাসরত বাংলাদেশ, লাউস, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, শ্রীলংকা, ফ্রান্সসহ কয়েকটি দেশের নাগরিক এ উৎসবে অংশ নেন।