শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, ঈদগাঁও:
মাদক ব্যবসায়ী ও সোর্সদের সাথে সখ্যতা থাকায় ঝিমিয়ে পড়েছে ঈদগাঁও পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযানের কর্যক্রম।ঈদগাঁও তদন্ত কেন্দ্রে নতুন ইনচার্জ যোগদানের পর দৃশ্যমান কোন সফল অভিযান হয়নি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের গুটি কয়েক সদস্য এবং সোর্সদের সাথে মাদক ব্যবসায়ীদের দহরম মহরম সম্পর্কের কারনেই চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে না।
ইসলামপুর লবনমিল এলাকা, ইসলামাবাদ হরিপুর, বাঁশঘাটা ঈদগাঁও দরগাহ পাড়া,ভাদিতলা, শিয়াপাড়া, গরু বাজার, চৌফলদন্ডীর ৫ নং ওয়ার্ড ঘোনাপাড়া, পোকখালী ঘাটঘর ও পুর্ব পোকখালী, জালালাবাদ সওদাগর পাড়া এলাকা মাদকের অন্যতম বড় স্পট।দক্ষিণ দরগাহ পাড়া এলাকার সিরাজুল হক প্রকাশ ডাকাত সিরাজ ও তার স্ত্রী, হরিপুরের রেহেনা, পোকখালীর ফরিদুল আলম প্রকাশ গাঁজা ফরিদ,শোনা মিয়া,চৌফলদন্ডীর ঘোনাপাড়ার আমির হামজা, সেলিম,পেঠান,শাহ মোহাম্মদ রিদুয়ান,শাহেদসহ একাধিক ব্যবসায়ী প্রকাশ্যদিবালোকে বিক্রি করে আসছে মাদক। এসব মাদক দেদারছে বিক্রি করে আসলেও বিগত ২৮ দিন যাবৎ কোন ধরনের অভিযান চালায়নি পুলিশ।
ইসলামপুর ও ইসলামাবাদ ইউনিয়নের কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী ও মোটর সাইকেল চোরের সাথে রয়েছে দহরম সম্পর্ক। এসব মাদক ব্যবসায়ীরা এলাকায় বলে বেড়ায় তারা সবকিছু ম্যানেজ করে ব্যবসা করে আসছে। তাই ঈদগাঁও পুলিশ এসব মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে এবং তাদের আস্তানায় অভিযান চালাচ্ছে না।স্থানীয় কমিউনিটি পুলিশ, জন সাধারন এবং জনপ্রতিনিধিরা পাকড়াও করে মাদক ব্যবসায়ীদের ধরে পুলিশকে খবর দিলও পৌঁছতে গড়িমসি করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে ইয়াবা,গাঁজা, মদ,হেরোইনসহ হরেকরকমের মাদকের ছড়াছড়ি ঈদগাঁওতে। বৃহত্তর ঈদগাঁওয়ের ৬ ইউনিয়নে ৫৪ টি ওয়ার্ডে অর্ধ শতাধিক মাদকের স্পটে অবাধে চলছে ব্যবসা।সহজলভ্য হওয়ায় এলাকার যুব সমাজ মাদকের দিকে ঝুকে পড়ছে।এতে উঠতি বয়সের ছেলেদের নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে অভিভাবকরা।
ইতিপূর্বে তৎকালীন ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মোঃ খাইরুজ্জামান, মিনহাজ মাহমুদ ভুঁইয়া মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে শতাধিক মামলাও ২ শতাধিক মাদক ব্যবসায়ী এবং মাদকে জড়িতদের আটক পুর্বক আইনের আওতায় এনেছিল।তাদের বদলীর সুবাধে দায়িত্ব পান মোঃ আবুল কায়েস আখন্দ নামের একজন।
তিনি যোগদানের পর থেকে ঝিমিয়ে পড়েছে মাদক বিরোধী অভিযান। এমনকি দফায় দফায় গরু চুরি,ডাকাতি,চুরিসহ বেড়েছে নানা অপরাধ মুলক কর্মকান্ড।এদিকে সদর উপজেলা কমিউনিটি পুলিশ আয়োজিত এক সমাবেশে পুলিশ সুপার মাদক বিরোধী কঠোর বক্তব্য দিলেও মাদক ব্যবসায়ী আটক এবং বন্ধ না হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম হতাশা লক্ষ করা গেছে। ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জের মোবাইলে সংযোগ না পেলও অপরাপর কর্মকর্তা দাবী করছে প্রতিনিয়তই মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। কিন্তু উল্লখ্যযোগ্য কোন মাদক উদ্ধার ও ব্যবসায়ীকে আটকের তথ্য দিতে পারেননি।অপরদিকে মাদক নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত অন্যন্যা বাহিনীরও কোন অভিযান তেমন চোখে পড়েনি বলে দাবী করেন প্রবাসী ফরিদুল আলম, ফার্নিচার ব্যবসায়ী ফারুক, যুবলীগ নেতা হাসান তারেকসহ অনেকেই। সূত্রে জানা গেছে, দেশের দক্ষিন সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ থেকে সড়ক, উপসড়ক ও নদী পথে মাদকের চালান চৌফলদন্ডী, ইসলামপুরে প্রবেশ করে।এসবের একটি অংশ ঈদগাঁওয়ের বিভিন্ন স্থানে পাইকারি ও খুচরা মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে মাদক নিয়ন্ত্রকরা তাদের নিজস্ব লোক দিয়ে পৌঁছে দিচ্ছে। দক্ষিণ দরগাহ পাড়া এলাকার ডাকাত সিরাজুল হক ও তার স্ত্রীর ইয়াবা ব্যবসা জমজমাট বলে জানা গেছে। গরু বাজার, জাগির পাড়া,নতুন রাস্তার মাথা, বাজার এলাকার কয়েকটি কলোনি থেকে মাদক ব্যবসা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।আবার ইসলামাবা হরিপুর এলাকার রেহেনা বেগম নামের এক মাদক সম্রাজ্ঞী প্রকাশ্যে বিক্রি করছে গাঁজা, হেরোইন ও ইয়াবা।এদিকে শ্রমিক অধ্যুষিত ইসলামপুর ইউনিয়নের লবন মিল এলাকায় প্রকাশ্যে ইয়াবা বিক্রি করে আসছে ক্ষমতাসীন দলের এক নেতার পুত্র ও স্বজনরা।
একইভাবে ঈদগাঁও দরগাহ পাড়ার নুরুল হক প্রকাশ নুমমিয়া এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে চোলাই মদ বিক্রি করে আসছে বলে এলাকাবাসী সিবিএনকে জানিয়েছে।এছাড়া বৃহত্তর ঈদগাঁও এখন মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। প্রশাসনের রহস্যজনক ভুমিকার কারনে মাদক ব্যবসায়ীরা আবারও মাথা ছাড়া দিয়ে উঠছে বলে মনে করেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা।
স্থানীয় সচেতন লোকজন জানায়,মাদক সহজলভ্য হওয়ায় এলাকার উঠতি বয়সের যুবকরা মাদকের প্রতি ঝুঁকে পড়ছে। এতে চরম উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে অভিভাবকরা।তারা বলেন টাস্কফোর্স গঠন করে অভিযান চালিয়ে এসব মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করতে হবে। না হয় মাদকে সয়লাব হয়ে পড়বে বৃহত্তর ঈদগাঁও।