তাজুল ইসলাম পলাশ, চট্টগ্রাম :

সিটি গভর্নেন্স প্রজেক্টের (সিজিপি) আওতায় নগর উন্নয়নে আরো ১০৬টি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। জাইকার অর্থায়নে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩৫০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। চসিকের প্রকৌশল বিভাগ এলাকা পরিদর্শন করে জাইকার চলমান প্যাকেজে বাকি থাকা এসব প্রকল্পের একটি তালিকা প্রস্তুত করেছে। প্রস্তুতকৃত এ তালিকায় উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়নের সম্ভাব্য ব্যয় নির্ধারণ করে তার একটি চাহিদা পত্র তৈরি করা হয়েছে। সিটি গভর্নেন্স প্রজেক্টের আওতায় জাইকার অর্থায়নে বাস্তবায়নের জন্য চাহিদাপত্রটি সিজিপি প্রকল্প পরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে। চাহিদা পত্রে নগরীর ৪১ ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক মোড়ে ফুটওভার ব্রিজ, সড়ক সংস্কার, ড্রেন নির্মাণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন উবর্ধমুখীকরণ এবং এলইডি আলোকায়ন প্রকল্পও অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। জাইকার চলমান প্রকল্পের সাথে সম্প্রসারিত এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে আগামী ২০১৯ সালের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরের উন্নয়ন দৃশ্যমান হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

এ ব্যাপারে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, এই তিন বছরে নগর উন্নয়নে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার কাজ বাস্তবায়িত হয়েছে। বর্তমানে ৪১ ওয়ার্ডে জাইকার অর্থায়নে বিভিন্ন প্যাকেজে হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। জাইকার অর্থায়নে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড এলাকার সড়ক সংস্কার, ড্রেন নির্মাণসহ নানামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। নতুন প্রকল্পের অধীনে গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ফুটওভার ব্রিজ, চারটি সড়কে এলইডি আলোকায়নসহ সড়ক উন্নয়ন, ড্রেন নির্মাণের প্রকল্প তালিকা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগে পাঠানো হয়েছে।

চসিক প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নগরীর ৪১ ওয়ার্ড এলাকার যাবতীয় উন্নয়ন কর্মকান্ড প্রকৌশল বিভাগের নয়টি ডিভিশন থেকে পরিচালিত হয়। জাইকার সিজিপি প্রজেক্টের নতুন তালিকায় ইপিজেড, বাদামতলী, জিইসি,বহদ্দারহাট, দেওয়ান হাট, ষোলশহর, মুরাদপুর, ইস্পাহানি, নিমতলা, বন্দরটিলা, নিউমার্কেট, হাজেরা তজু কলেজ, অক্সিজেন, শেরশাহ এবং কাপ্তাই রাস্তার মাথা মোড় এলাকায় ১৭টি ফুটওভার ব্রিজ সংযুক্ত করা হয়েছে। এতে সম্ভাব্য ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৬ কোটি টাকা। ডিভিশন ১- আওতাধীন এলাকার ৫টি সড়কের উন্নয়ন, চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভবন উবর্ধমূখীকরণ, দামপাড়া রেস্টহাউজ ও লালখান বাজার সাইক্লোন শেল্টার সংস্কার প্রকল্প সংযুক্ত করা হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ কোটি ৩৩ লাখ। ডিভিশন-২ আওতাধীন এলাকার এয়ারপোর্ট রোডসহ পাঁচটি সড়কের উন্নয়ন, ফুটপাত ও ড্রেন নির্মাণ প্রকল্প সংযুক্ত রয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। ডিভিশন-৩ আওতাধীন এলাকার ছয়টি সড়ক সংস্কার, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন উর্ধ্বমূখীকরণ এবং জাতিসংঘ পার্কের সুযোগ সুবিধা উন্নতকরণ প্রকল্প যুক্ত রয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৮ কোটি টাকা। ডিভিশন-৪ আওতাধীন এলাকায় আরসিসি ড্রেন নির্মাণসহ ছয়টি সড়ক সংস্কার, চামড়াগুদাম শুটকি পট্টি ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্প সংযুক্ত রয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। প্রকল্পে সংযুক্ত ডিভিশন- ৫ এলাকার আওতাধীন ১০টি সড়কের উন্নয়ন কাজের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪ কোটি টাকা। ডিভিশন-৬ এলাকা থেকে তালিকায় সংযুক্ত ১৪টি সড়কের উন্নয়নের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩ কোটি টাকা। ডিভিশন-৭ এলাকার আওতাধীন ছয়টি সড়কের সংস্কার ও পতেঙ্গা মেটারনিটি হাসপাতাল উন্নয়নের জন্য প্রকল্পটিতে ২৮ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। প্রকল্পে সংযুক্ত ডিভিশন-৮ এলাকার আওতাধীন ১১টি সড়ক সংস্কার ও উন্নয়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭ কোটি ১০ লাখ টাকা। প্রকল্পে ডিভিশন-৯’র ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বারুণীঘাট উপকূলীয় সড়ক উন্নয়ন কর্মকান্ড সংযুক্ত রয়েছে। তাছাড়া তালিকাটিতে পোর্ট কানেকটিং রোড, জাকির হোসেন রোড, কালুরঘাট, ডিটি রোড এবং চানমিয়া সড়কে এলইডি আলোকায়ন প্রকল্পও যুক্ত করা হয়েছে। আলোকায়ন বাস্তবায়নে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। নতুন প্রকল্প তালিকার ব্যাপারে চসিক সহকারি প্রকৌশলী মঞ্জুরুল হক তালুকদার সাথে কথা বলা হলে তিনি জানান, জাইকার অর্থায়নে প্যাকেজ দুই-এর অধীনে বর্তমানে প্রায় পাঁচশত কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। নতুন সংযুক্ত প্রকল্পগুলো আগামী ২০১৯ সালের জুন নাগাদ বাস্তবায়ন শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।