বিদেশ ডেস্ক :

এবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও মনে করছেন, অনুসন্ধানী সাংবাদিক খাশোগি হত্যাকাণ্ডে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে। শুরু থেকেই এ ঘটনায় যুবরাজের সম্ভাব্য সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠলেও হত্যাকাণ্ডে ঊর্ধ্বতন সৌদি নেতৃত্বের সংশ্লিষ্টতার প্রশ্ন নাকচ করে আসছিলেন ট্রাম্প। তবে মঙ্গলবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে প্রথমবারের মতো যুবরাজের সংশ্লিষ্টতার সম্ভাব্যতা নিয়ে একমত হয়েছেন তিনি।

এরআগে ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, বিভিন্ন দিক থেকে সৌদি যুবরাজকে তিনি খাশোগি হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার ব্যাপারে প্রশ্ন করেছেন। জানতে চেয়েছেন, ‘শুরুর পরিকল্পনা নিয়ে মোহাম্মদ বিন সালমান কিছু জানতেন কিনা। জবাবে যুবরাজ বলেছেন, তিনি কিছুই জানতেন না। কারা এটি ঘটিয়েছে, ট্রাম্পের এমন প্রশ্নে সৌদি যুবরাজ বলেছেন, নিম্ন পর্যায়ের কর্মীরা। এরপর ট্রাম্পের কাছে সাংবাদিকরা জানতে চান, যুবরাজের কথা তিনি বিশ্বাস করেন কিনা। জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি বিশ্বাস করতে চান। তবে সেই পূর্ববর্তী অবস্থান থেকে সরে এসেছেন ট্রাম্প। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের কাছে সৌদি যুবরাজের সম্ভাব্য সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে ওই পরিস্থিতি নিয়ে যুবরাজই সবথেকে তৎপর। তিনিই সবকিছু সামলাচ্ছেন। তো কাউকে সন্দেহ করতে গেলে তার নামটি এসেই যায়।’ ওয়াশিংটন থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক মাইক হানা জানিয়েছেন, খাশোগি হত্যাকাণ্ডে সুনির্দিষ্ট করে যুবরাজের দায়বদ্ধতার প্রশ্নে এটাই ট্রাম্পের সবথেকে শক্ত মন্তব্য।

সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পর মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠতম কৌশলগত মিত্র সৌদি আরবকে নিয়ে বিপাকেই আছেন ট্রাম্প। সৌদি আরবের ওপর নির্ভর করেই মধ্যপ্রাচ্যে ফিলিস্তিনবিরোধী ‘শতাব্দীর চুক্তি’ বাস্তবায়নের আশাও করছেন তিনি। তবে খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পর সেই ঘনিষ্ঠ মিত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ট্রাম্পের ওপর চাপ বাড়ছে। প্রধান মিত্রদেশগুলোর পাশাপাশি দেশের আইনপ্রণেতারাও সৌদি আরবের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। তাই খাশোগি ইস্যুতে প্রথম থেকেই সৌদি আরবকে নীরবে সমর্থন করে গেলেও চাপের মুখে এখন প্রকাশ্যে আর সমর্থন জানাতে পারছেন না ট্রাম্প। আল জাজিরার সাংবাদিক মাইক হানা জানিয়েছেন, এমনকী আজ সন্ধ্যা অব্দি খাশোগি হত্যাকাণ্ডে ঊর্ধ্বতন সৌদি নেতৃত্বের সংশ্লিষ্টতার প্রশ্ন আমলে নেননি ট্রাম্প। এবার প্রথমবারের মতো যুবরাজের সম্ভাব্য সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে মুখ খুলেছেন তিনি।

পূর্ববর্তী এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি টেলিফোনে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে কথা বলেছেন। সেখানে আসলে কী হয়েছিল আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে তারা বিস্তারিত জানা যাবে। সৌদি যুবরাজ খাশোগি হত্যায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘‘তিনি বলেছেন, ‘তিনি বা বাদশাহ এর সঙ্গে জড়িত নন’।’’ তবে যুবরাজের এই উত্তর বিশ্বাস করেন কিনা তার জবাব দেননি ট্রাম্প। খাশোগি হত্যাকাণ্ডে সৌদি নেতৃত্বের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে কী হবে জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি খুবই দুঃখ পাবো। তখন আমরা বিষয়টি দেখবো।’