শাহীন মাহমুদ রাসেলঃ
কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় বহুজাতিক কোম্পানি সিনজেনটা নীতিমালা লঙ্ঘন করে যত্রতত্র বালাইনাশক (ডিলার) বিক্রেতা নিয়োগ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা জানান, অধিকাংশ ক্ষেত্রে নীতিমালা লঙ্ঘন করে এসব দোকান গড়ে উঠেছে। কোথাও ওষুধের দোকান, খাবারের দোকান ও মুদি দোকানের সাথে কীটনাশকের দোকান গড়ে উঠায় সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন।

আবার অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেয়াদোত্তীর্ণ, ভেজাল ও ভারতীয় নিম্নমানের কীটনাশক বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে এসব কীটনাশক কিনে ফসলের জমিতে প্রয়োগ করে আর্থিক, মানসিক ও শারীরিকভাবে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলেও প্রচার রয়েছে। স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি, নিয়মিত কীটনাশকের দোকানগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হলে এসব অনিয়ম কিছুটা হলেও দূর হবে।

আবার এসব ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার আশায় কৃষকদের অপ্রয়োজনীয় কীটনাশক ধরিয়ে দিয়ে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এ ছাড়াও গ্রামাঞ্চলে আত্মহত্যার অন্যতম কারণ এসব কীটনাশকের দোকান বলে অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঔষুধ ব্যবসায়ী জানান, তার দোকানের সাথে কীটনাশকের দোকান গড়ে উঠায় তিনি চরম বিপাকে পড়েছেন।

কীটনাশকের তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধে তার দোকানের ওষুধের ওপর পড়ছে। তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এসব কীটনাশকের দোকানে অভিযান পরিচালনার দাবি জানান। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হাট-বাজার বহুজাতিক কোম্পানির নিষিদ্ধ ও নিম্নমানের কীটনাশকে ছেয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর এসব কীটনাশক ফসলে মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার কৃষিতে ডেকে আনছে বিপর্যয়। কীটনাশক আসল নকল না নিম্নমানের সেটা বোঝার ক্ষমতা নেই অধিকাংশ কৃষকের।

কৃষকের সরলতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী নিম্নমানের কীটনাশক কৃষকদের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন বলেও কৃষকদের অভিযোগ। সচেতন মহলের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে এক শ্রেণীর মুনাফাখোর কীটনাশক ব্যবসায়ী এসব নিম্নমানের কীটনাশক বিক্রি করে সাধারণ কৃষকের পকেট কাটছেন। আর ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে এক শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারী সাধারণ কৃষকদের এসব কীটনাশক কিনতে পরামর্শ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করছেন।

তাদের পরামর্শে ও বিভিন্ন কোম্পানির চটকদার বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে কৃষকরা ফসলে মাত্রাতারিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করছেন। এতে একদিকে যেমন মাটির উর্বরা শক্তি হ্রাস পাচ্ছে, তেমনি অন্যদিকে পরিবেশের ক্ষতি ও কৃষকদের কষ্টার্জিত অর্থ পানিতে পড়ছে।