আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রাজতন্ত্রের সমালোচক হিসেবে পরিচিত সাংবাদিক জামাল খোশেগিকে তুরস্কের ইস্তান্বুলস্থ সৌদি কনসল্যুটে হত্যা করার আগে তাকে ফোন করেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এসময় তিনি খাশোগিকে রিয়াদে ফিরে যাওয়ার কথা বললে খাশোগি ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানান। এর কিছুক্ষণ পরে কনসল্যুটের ভেতরেই তাকে হত্যা করা হয়। রাশিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম আরটি টেলিভিশন নেটওয়ার্কের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

তুরস্কের রাষ্ট্রীয় দৈনিক ইয়েনি সাফাকের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২ অক্টোবর কনসল্যুটের ভেতরে ঢোকার খাশোগিকে আটক করেন সৌদি কর্মকর্তারা। এর কিছুক্ষণ পরেই তাকে ফোন করেন সৌদি যুবরাজ। প্রতিবেদন অনুযায়ী, পশ্চিমা বিশ্বে এমবিএস নামে পরিচিত মোহাম্মদ বিন সালমান ওই ফোনালাপে খাশোগিকে দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য চাপ দেন।

কিন্তু খাশোগি যুবরাজ সালমানের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে সৌদি ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানান। কেননা তিনি ধারণা করছিলেন, সেখানে ফিরে গেলে তাকে গ্রেফতার করে হত্যা করা হবে। সালমানের ওই ফোনালাপ শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই খাশোগিকে হত্যা করা হয়।

সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদিল আল-জুবায়ের বলেন, খাশোগির মৃত্যু আমাদের জন্য একটা বড় ভুল এবং যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এই হত্যার ব্যাপারে সচেতন ছিলেন না।

এদিকে এ ঘটনার বিভিন্ন তদন্ত শুরু করেছে তুরস্ক। আঙ্কারা বলছে, সৌদি আরব পরিকল্পিতভাবে জামাল খাশোগিকে হত্যা করে একটি হত্যাকারী দলের মাধ্যমে তার লাশ সরিয়ে ফেলে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেছেন, ‘আমরা এই হত্যার বিচারের ব্যবস্থা করবো। তদন্তের মাধ্যমে আমরা এ হত্যার সাধারণ কিছু তথ্যই প্রকাশ করে ছেড়ে দেবো না, আমরা এ হত্যার নগ্ন ‘সত্য’ সবার সামনে প্রকাশ করেই ছাড়বো।’

উল্লেখ্য, বিয়ের কাগজপত্র নিতে গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তান্বুলস্থ সৌদি কনসল্যুটে ঢোকার পর নিখোঁজ হন সৌদি রাজতন্ত্রের সমালোচক হিসেবে পরিচিত সাংবাদিক জামাল খাশোগি। নিখোঁজ হওয়ার ১৭ দিন পর বৈশ্বিক চাপের মুখে অবশেষে গত শুক্রবার খাশোগি হত্যার কথা স্বীকার করে সৌদি।

তাদের কর্মকর্তারাই খাশোগিকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে তারা। তবে সৌদি কর্তৃপক্ষ বলছে, খাশোগির মরদেহ কোথায় আছে এ বিষয়ে তারা কিছু জানে না।