আবু নাঈম মাসুম: 
আমি আশাবাদী মানুষ। আমি উষর মরুকে তরু দিয়ে ভরে দিতে পারি; আমি অস্থিতিশীল অবস্থাকে স্থিতিশীল করতে পারি, আর পারি নিজের ক্লান্তি দিয়ে ক্রান্তি দুর করতে (ইনশাআল্লাহ) । শুধু দরকার কিছু উদ্যমী মানুষ।

কিন্তু আমি এতটা আশাবাদী নই যে কেউ আমায় একটা ট্যাংকের সামনে একটা থ্রি নট থ্রি রাইফেল দিয়ে বলবে, “লড়ো”। আমার আকাশ সীমানায় মিগ – ২৯ বিমান দিয়ে বোমা ও গুলি করার সুব্যবস্থা প্রতিপক্ষকে দিবে। হ্যাঁ পারতাম যদি জীবনটা সিনেমা হতো আর আমি “র‍্যাম্বো” সিনেমায় নায়ক সিলভ্যাস্টাইন হতাম!

কাজের কথায় আসি এবার। কক্সবাজার কম বেশী দশ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর বাস। অনেকে আবার কৌশলে বা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের টাকা দিয়ে বশীভুত করে জাতীয় পরিচয়পত্র হাতিয়ে নিয়েছে। অনেকে আবার জনপ্রতিনিধি ও হয়ে গেছেন। এখন তারা অনেকটাই অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়েছে। প্রায়ই কোন্দলের কারণে দেশী স্থানীয়রা মারা পড়ছে। আর তার মূলে রোহিঙ্গারা। ইদানীং আগের তুলনায় ইয়াবার চোরাচালান বহুগুণ বেড়েছে। তার ধারক ও বাহক কিন্তু তারাই।

আমার মনে হয় মিয়ানমার জান্তা তাদের বিতারণের পিছে একটা অন্যতম উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশে ইয়াবা ব্যবসা বিস্তার। কেননা, এদেশে ইয়াবার এত ভোক্তা আর চাহিদা তা মিয়ানমারে ও নাই। দেখা গেছে ৩/৪ বছর আগে ৩০/৫০ ইয়াবা ধরা পড়তো কিন্তু আজ ধরা পড়ে ইয়াবার বস্তা ! সংখ্যা হিসাবে লাখের অংক ও ছাড়িয়ে যায়। ইয়াবার বিস্তার প্রক্রিয়ায় ও অভিনবত্ব। কন্ডোমে ঢুকিয়ে পায়ুপথে, বা পাকস্থলীতে, পেয়াজের ভিতর, বাশেঁর গাট কেটে তার ভিতর বাশেঁর ট্রাকে, টায়ারের ভিতর, জুতার সোলের ভিতর, দিনমুজুর সেজে কোদালের ভিতর, ইত্যাদি, ইত্যাদি…….।

আবার রোহিঙ্গা নারীকুল পাসপোর্ট পেতে স্থানীয় দেশী লোকজনকে স্বামী বানিয়ে, শ্বশুর, মা বাবা বানিয়ে পাসপোর্ট করানোর অপতৎপরতায় লিপ্ত। বাংলাদেশী পাসপোর্ট নিয়ে তারা বিদেশে অন্যায় বা অপকর্ম করলে তার দায় বাংলাদেশকে নিতে হয়। এখন যদি ঘরের শত্রু বিভীষণ হয় তবে আর কি করা?

মনে আছে ফিলিস্তিনের কথা? দয়া করে ইসরায়েলীদের জায়গা দিয়েছিলো। আজ বাস্তুহারা ইসরায়েল বলে ফিলিস্তিন তাদের। দয়া বেশী হলে যে দাতার গায়ে কাপড় থাকে না তা ফিলিস্তিনবাসী বুঝতে পারে নাই। তাই বলে কি আমরা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেব না ? যদি কোন দেশের কু মতলব থাকে বাংলাদেশ কে নিয়া তবে রোহিঙ্গাদের যদি ট্রাম্প কার্ড হিসাবে ব্যবহার করে তখন কি হবে? ভেবে দেখুন রোহিঙ্গারা কিন্তু ইয়াবাতে আসক্ত না, হলেও হাতে গোনা। এখনো কি মাথায় কিছু ঢুকে নাই? বিপদের গন্ধ কি এখনও আপনার গন্ধগ্রন্থিতে ঝাড়ুপেটা করে নাই?

বাংলার ইতিহাস পড়লে তো ভয়ে আৎকে উঠি
টিপু সুলতান
নবাব সিরাজ উদ দৌলা
বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
এরা সবাই স্বদেশীদের হাতে নয়তো সহায়তায় শহীদ হয়েছেন।

হতেও তো পারে কোন বিপদের বীজ হিসাবে রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করছে কিন্ত তার প্রভাব আমরা এখন অনুমান করতে পারছি না, যেমন টা তৎকালীন ফিলিস্তিন বুঝে নি। মাদকের করাল গ্রাসে বাংলাদেশে যুবকরা যদি আচ্ছন্ন হয় তবে দেশের ক্রান্তি কালে কি বুড়ারা লড়বে? কে নেতৃত্ব দেবে? কে শেখ মুজিবের মত হুংকার দিবে? এখন ও সময় আছে কক্সবাজারের জনগণ ও জনপ্রতিনিধিরা সাবধান হোন নইলে রিলিফ হিসেবে মোয়া ও পাবেন না। সিরিয়ার অভুক্তদের মত সিদ্ধ লতাপাতা খাবেন।

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেন ভালো কথা কিন্ত প্রশ্রয় দিলে এক সময় তাদের আশ্রয়ের শরণাপন্ন হতে হবে। আল্লাহ করুন এমন দিন যেন না আসে। সরকারের কাছে নিবেদন, যে সব জনপ্রতিনিধি রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট প্রাপ্তিতে বা নাগরিকত্ব প্রদানে সহযোগিতা করেন তাদের পদচ্যুত করেন। দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে আমি কোন ঝুঁকি নিতে চাই না তাই আমার চেয়ারে থেকে আমি নিজের জীবনের ঝুঁকি নেই তবু আমার দেশকে ঝাকি লাগতে দেই না, দিব না। আসুন আমরা সবাই দেশের জন্য সবাই নিজ জীবনকে ঝুঁকিতে রেখে দেশকে ঝাঁকিমুক্ত রাখি।

লেখক:
আবু নাঈম মাসুম
সহকারী পরিচালক
আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, কক্সবাজার।