শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, কক্সবাজার সদর:

জেএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র কক্স-২ ঈদগাহ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের হাজার হাজার খাতা ব্যবহার করে মডেল টেস্ট নেয়ার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, চট্টগ্রাম এর একটি টিম তদন্তে আসার সংবাদে তড়িঘড়ি করে গোপনে (১৭ অক্টোবর বুধবার) রাতের আঁধারে বিপুল পরিমান খাতা পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ও চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কেন্দ্র সচিব ও প্রধান শিক্ষক খুরশীদুল জন্নাত সহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী করেছে এলাকাবাসী।

জানা যায়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, চট্টগ্রাম এর জেএসসি/এসএসসি পরীক্ষার মূল উত্তরপত্রের কাভার পৃষ্ঠা ছিঁড়ে চলমান অষ্টম শ্রেণির মডেল টেস্ট নেয়া হচ্ছে। এ পরীক্ষা শুরু হয় ১২ অক্টোবর, শেষ হবে ২১ অক্টোবর। এদিকে এ ধরনের বিধি বহির্ভূত কার্যকলাপের বিস্তারিত জানিয়ে ১৬ অক্টোবর চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবরে ইমেইলে অভিযোগ করেন ঈদগাহ আদর্শ শিক্ষা নিকেতনের কম্পিউটার শিক্ষক নূরুল ইসলাম। এ প্রেক্ষিতে শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্তের প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন। জানা যায়, শিক্ষা বোর্ডের উক্ত খাতা ব্যবহার করে এ পর্যন্ত ২টি মডেল টেস্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরবর্তী পরীক্ষাগুলো সম্পন্ন করতে টপশীট ছিঁড়ে বাকী খাতাগুলিও প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। এদিকে শিক্ষা বোর্ড তদন্তে আসবেন জানতে পেরে অপকর্মে জড়িত কেন্দ্র সচিব খুরশীদুল জন্নাতসহ সংশ্লিষ্টরা অপরাধ ঢাকতে অনুষ্ঠেয় পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতকৃত খাতা পুড়িয়ে ফেলেন। পরিকল্পনা করে অনুষ্ঠিত ২টি পরীক্ষার খাতাও সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের মোবাইলের মাধ্যমে জানিয়ে খাতাগুলি বিদ্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত পরীক্ষার খাতাগুলোও পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। খাতা পুড়িয়ে ফেলার বিষয়টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক অফিসারকে ফোনে অবগত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক জসীম উদ্দিন রাতে অভিভাবকদের ফোন করে ১৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠেয় পরীক্ষা স্থগিতের কথা জানিয়ে দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২ জন অভিভাবক পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ব্যাপারে কেন্দ্র সচিব খুরশীদুল জন্নাতের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, প্রতি বছর জেএসসি/এসএসসি পরীক্ষা সমাপ্ত হওয়ার পর ওই কেন্দ্র সচিব শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা অমান্য করে হাজার হাজার অব্যবহৃত মূল ও অতিরিক্ত উত্তরপত্র বিদ্যালয়ে রেখে দেন এবং শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ফি আদায় করলেও এসব খাতা ব্যবহার করে বিভিন্ন টেস্ট চালিয়ে আসছেন। সূত্রে প্রকাশ, ওই কেন্দ্র সচিবের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগ তদন্তাধীন বলে জানা যায়।