বিশেষ প্রতিবেদক:

নারীদের জিম্মি করে দেহব্যবসায় বাধ্য করানোর অভিযোগে হোটেল পাঁচতারা,হোটেল নজরুল ও হোটেল আহসান নোটিশ দিয়েছে কক্সবাজার পৌরসভা।  সম্প্রতি মানবপাচার মামলার আসামী হয়েছেন কক্সবাজার শহরের পাঁচতারা হোটেলের মালিক রমজান আলী সিকদার। পুলিশ বাদী হয়ে দায়ের করা মামলার পর থেকে তিনি পলাতক। এরপরও তার হোটেলে অব্যাহত রয়েছে অনৈতিকতা। এসব অভিযোগে তাকে নোটিশ পাঠিয়েছে এই তিন হোটেলকে কক্সবাজার পৌর কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে নোটিশের জবাবে হোটেলের কাগজপত্র নিয়ে মালিকপক্ষ পৌরসভায় যোগাযোগ করেছেন।

কক্সবাজার পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলম জানান, হোটেলে অনৈতিকতার অভিযোগে লালদিঘী এলাকার ধর্মীয় কয়েক প্রতিষ্ঠান নেতৃবৃন্দ পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানকে মৌখিক অভিযোগ করেছেন। তা আমলে নিয়ে মেয়র হোটেল পাঁচতারা,হোটেল নজরুল ও হোটেল আহসান কর্তৃপক্ষকে নোটিশ দিতে বলেন। সে সূত্র ধরেই তিনটি হোটেলকেই নোটিশ দেয়া হয়েছে। নোটিশের জবাব দিতে পাঁচতারা হোটেল কর্তৃপক্ষ কিছু কাগজপত্র জমাও দিয়েছেন।

তবে, সেখানে গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাগজ না থাকায় তা নিয়ে বসা হয়নি। লালদিঘীর পাড় ও পাঁচতারা হোটেলের নিচ এলাকার বেশ কয়েকজন দোকানদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে চালানো অভিযানে পতিতাসহ বেশ কয়েকজন আটক হয়। এঘটনায় মামলার পর থেকে রমজান আলী সিকদার এলাকায় আসেন না। কিন্তু মামলার পরও বন্ধ হয়নি অনৈতিক কর্মকান্ড। প্রতিনিয়ত দেহপ্রসারীনিরা হোটেলে আসা যাওয়া করছে। তাদের বিচরণে সুষ্টমতো দোকানদারি করাও দুরূহ হয়ে পড়েছে। তাই এলাকার স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখতে ব্যবস্থা নিতে মেয়র মহোদয়কে মৌখিক অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এরপরও অনৈতিকতা বন্ধ না হওয়ায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

উল্লেখ্য, গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে কক্সবাজার শহরের লালদীঘির পারের পাঁচতারা হোটেলে অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে ৬ নারী ও ২ পুরুষসহ যৌনকর্মে ব্যবহৃত বেশকিছু পণ্য জব্দ করে অভিযানকারিরা। এ ঘটনায় হোটেল মালিক ও জাসদের সহযোগী সংগঠন যুবজোট কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পূনর্বাসন সম্পাদক এবং কক্সবাজার জেলা সভাপতি রমজান আলী সিকদারের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজীব চন্দ্র পোদ্দার বাদী হয়ে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা করেছে (নম্বর-১০৩/২০১৮)।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, পলাতক আসামী রজমান আলী সিকদার তার মালিকানাধীন পাঁচ তারা হোটেলটি মিনি পতিতালয় বানিয়ে নারী মজুদ রেখে অবাধে পতিতাবৃত্তি চালিয়ে আসছে। তার বিরুদ্ধে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের ২০১২ এর ১২/১৩ ধারার অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। এরপর থেকে পলাতক রয়েছেন তিনি, এমনটি জানায় পুলিশ।