শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, কক্সবাজার সদর :

কক্সবাজার সদর ও রামু উপজেলাধীন ৬ টি বিদ্যালয়ের জেএসসি মডেল টেস্টে একই প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। উক্ত প্রশ্নে রামু রত্নগর্ভা বেগম রিজিয়া নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গত এক সপ্তাহ পূর্বেই পরীক্ষা সম্পন্ন হয়ে গেছে । উক্ত বিদ্যালয় সমূহের শিক্ষার্থীরা বিষয়টি জেনে পড়াশোনার পরিবর্তে প্রশ্নপত্র সংগ্রহে নেমে পড়েছে।

জানা যায়, কক্সবাজার সদরের ভারুয়াখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, চৌফলদন্ডী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, পোকখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, জাহানারা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গোমাতলী উচ্চ বিদ্যালয় ও রামু উপজেলার নাদেরুজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয়ে একই প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বিগত কয়েক বছর যাবত। যার ধারাবাহিকতা রক্ষা হচ্ছে চলমান জেএসসি মডেল টেস্টেও। কিন্তু একই প্রশ্নপত্রে ১সপ্তাহ পূর্বেই একটি বিদ্যালয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায় তা অন্য বিদ্যালয় গুলোর শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে। তারা পরীক্ষা প্রস্তুতির পরিবর্তে ফাঁসকৃত প্রশ্নপত্রে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
জানা যায়, ২ অক্টোবর একই প্রশ্নপত্রে উক্ত বিদ্যালয় সমূহে ইংরেজী বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যা ইতোপূর্বে রত্নগর্ভা বেগম রিজিয়া নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সঙ্গে হুবহু মিলে গেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভারুয়াখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আমিন জানান, প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি তিনি অবগত নন এবং পরবর্তী পরীক্ষার প্রশ্ন যাচাই করলে ফাসঁ হয়েছে কিনা বুঝা যাবে। চৌফলদন্ডী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান জানান, প্রশ্ন একই হয়েছে কিনা তা ভারুয়াখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানাতে পারবেন। ঈদগাহ জাহানারা ইসলাম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নিচ্ছেন বলে জানান। গোমাতলী উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিল বলেন, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ব্যয় কমাতে এবার ৬টি বিদ্যালয় মিলে একই প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। তবে প্রশ্ন ফাঁসের ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রশ্ন প্রণেতা প্রশ্ন ফাঁস করে থাকতে পারেন বলে মন্তব্য করেন। পোকখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিউল আলম প্রশ্নফাঁসের ব্যাপারে সম্পূর্ণ অবগত নন জানিয়ে নিজেদের করা প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়ার কথা বলেন। এ ব্যাপারে নাদেরুজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রমিজ উদ্দিন ও সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে মুঠোফোনে না পাওয়ায় মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এদিকে স্থানীয় মাধ্যমিক শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ সচিব নূরুল ইসলামের মতে বিধি অনুযায়ী বছরে ২বার পরীক্ষা নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। তাছাড়া প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে স্বতন্ত্র প্রশ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অথচ বর্তমানে বিভিন্ন বিদ্যালয় বিধি বহির্ভূতভাবে মডেল টেস্টের নামে শিক্ষা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। নিজেরা প্রশ্নপত্র প্রণয়নের পরিবর্তে কিছু প্রতিষ্ঠান শিক্ষক সমিতি থেকে প্রশ্নপত্র কিনে পরীক্ষা নিচ্ছে। তিনি এ বিষয়ে প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।