আব্দুর রশিদ, বাইশারী:
আনাইয়্যা ডাকাতের মৃত্যুতে এলাকায় স্বস্তি ফিরে এলেও এখন বাইশারীর সাধারন মানুষের মনে নতুন করে প্রশ্ন জেগেছে, নতুন কোনো বাহিনী আনাইয়্যার রাজ্য দখল করে নেবে কি? সংশয় নিয়েই স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আনাইয়্যা রাজত্বের অবসান করতে বদ্ধপরিকর ছিল আলইম্যা বাহিনী ও কামাল বাহিনী। এই দুই বাহিনী কেন আনাইয়্যার পিছু নিল। এমন হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সাধারন মানুষের মনে? তবে কি নতুন করে পাহাড়ে রাজত্ব করবে আলইম্যা বাহিনী ও নুর কামাল বাহিনী? এ সব প্রশ্নের সমাধান কে দিবে।

এদিকে পুলিশের খাতায় আলইম্যা ও নুর কামাল বাহিনীর সদস্যদের কয়েকডজন মামলা রয়েছে। এসব মামলার মধ্যে খুন, অপহরণ, ডাকাতি ও অস্ত্র মামলাও রয়েছে। কক্সবাজার, রামু, চকরিয়া, নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় একাধিক মামলা রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। গত এক বছর পূর্বে শাহিন বাহিনীর প্রধান শাহিনকে র‌্যাব অস্ত্র সহ আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে এবং বর্তমানে কক্সবাজার কারাগারে থাকলেও কারাগার থেকেই তার সদস্যদের সক্রিয় রেখেছে এই শাহিন। বর্তমানে শাহিন বাহিনী পরিচালনার দায়িত্বভার পড়েছে ছৈয়দ আলম প্রকাশ আলইম্যার উপর।

গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে জানা যায়, নিজেদের আধিপত্য বিস্তারকে পাহাড়ে ছড়িয়ে দিতেই আনাইয়্যা বাহিনীকে সমুলে ধ্বংশ করে এ দুই বাহিনী। এদের মধ্যে ভয়ংকর সব ডাকাত দলের সদস্যরা রয়েছে। ইতিমধ্যে এসব ডাকাতদের ধরতেও পুলিশ তৎপর রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, এসআই আবু মুসা বাইশারী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ থাকাকালীন সময়ে একের পর এক পুলিশি অভিযানে আনোয়ার বাহিনীর ৯ জন সক্রিয় সদস্য ধরা পড়া এবং গত ২১ সেপ্টেম্বর পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে তার অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহচর আনোয়ার বলি নিহত হওয়ায় অনেকটা ভেঙে পড়ে আনাইয়্যা।

বাইশারী ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম জানান, আনাইয়্যা বাহিনীর ভয়ে তার এলাকার শ্রমজীবী মানুষ রাবারবাগানের কাজে যেতে পারছিল না। তিনি বলেন, আনাইয়্যার মৃত্যুর পর রাবার শ্রমিকরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছে। তবুও সংশয় থেকে যাচ্ছে। এখনো দুই বাহিনী সক্রিয় রয়েছে পাহাড়ে।

বান্দরবানের পুলিশ সুপার জাকির হোসেন মজুমদার বলেন, এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কুখ্যাত এই ডাকাত বাহিনী প্রধান আনোয়ারকে ধরার জন্যে পুলিশ প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। বারবার যৌথ অভিযান চালিয়ে কয়েকজনকে আটক এবং এনকাউন্টারে একজন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটলেও আনাইয়্যাকে আটক করা যাচ্ছিল না। অবশেষে নিজের লোকদের হাতেই তাকে প্রাণ দিতে হল।

জাকির হোসেন মজুমদার জানান, গোলাগুলির ঘটনার পর তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ থ্রি স্টার রাবারবাগান এলাকা থেকে লাশগুলো উদ্ধার করেছে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ৪টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৮ রাউন্ড তাজা বুলেট, ৩টি গুলির খোসা এবং ৪টি মোবাইল সেট জব্দ করা হয়। পুলিশ সুপার বলেন, ‘অনেক তল্লাশি চালিয়েও অত্যাধুনিক কোনো অস্ত্র সেখানে পাওয়া যায়নি। হামলাকারীরা এসব অস্ত্র নিয়ে পালিয়ে যেতে পারে বলে আমরা মনে করছি।