জুবাইর উদ্দিন, চবি

বুধবার (০৩ অক্টোবর)। তখন রাত সাড়ে ৯টা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) দক্ষিণ ক্যাম্পাসে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আজাদীর বাসা। হঠাৎ বাসার বাইরে তার নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ের চিৎকার। গিয়ে দেখলেন বাসার দরজার সঙ্গে জড়িয়ে আছে একটি সাপ। পরে অবশ্য সাপটি মেরে ফেলা হয়।

আলী আজাদী বলেন, মেয়ের চিৎকার শুনেই বাইরে যাই। দেখি বাসার দরজার ভেতরে অর্ধেক ও বাইরে অর্ধেক পড়ে আছে সাপটি। মেয়ে সাপ দেখে দ্রুত দরজা বন্ধ করার পর সাপটি মধ্যখানে চাপা পড়ে। নইলে বাসায় ঢুকে যেতো। সাপটির পুরো শরীরে লাল ও কালো দাগ।

তিনি জানান, এটির ছবি তুলে সাপ নিয়ে কাজ করা প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ফরিদ আহসানকে দেওয়া হয়েছে।

শুধু গত মাসেই (সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল, শিক্ষকদের বাসাসহ বিভিন্ন জায়গায় সাপ পাওয়ার এরকম ৬টি ঘটনা ঘটেছে। যার ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সাপ আতঙ্কে দিন পার করছেন। এছাড়া আবাসিক হলগুলোর বিভিন্ন রুম থেকেও মারা হচ্ছে বিষধর সাপ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম খালেদা জিয়া হলের ছাত্রী তাসনোভা বলেন, গত মাসেই কয়েকটি কক্ষে সাপ পাওয়া গেছে। এ সময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে নিরাপত্তা কর্মীরা সাপগুলো মেরে ফেলে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহজালাল আবাসিক হলের ছাত্র তাইজুল ইসলাম জানান, গত ১ অক্টোবর (সোমবার) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হলের বর্ধিত অংশের চার নাম্বার ব্লকের বাথরুমেও একটি সাপ পাওয়া গিয়েছিল। এমনকি ওই সাপ কামড়ও দেয়।

একাধিক শিক্ষার্থীর অভিযোগ, ক্যাম্পাস ঝোপঝাড়ে ভরে গেছে। ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে আলোক স্বল্পতা, ড্রেন ও ঝোপঝাড় নিয়মিত পরিষ্কার না করার ফলে সাপের উপদ্রব বেড়ে গেছে।

শিক্ষার্থীরা জানান, বিশেষ করে হলের নিচতলায় অবস্থান করা রীতিমতো আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সাপের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় আবাসিক হলে বিশেষ করে নিচতলায় অবস্থান করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সাপ বেড়ে যাওয়ায় পথে-ঘাটে চলাচলও এখন খুবই বিপজ্জনক। সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসের আড্ডাস্থলে, শহিদ মিনারে ও মাঠে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় সাপ আতঙ্ক বিরাজ করে।